ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আজও ভারি বর্ষণ

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ জুলাই ২০১৭

আজও ভারি বর্ষণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সারাদেশে মৌসুমি বায়ু অধিক সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এর ফলেই রবিবার থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আজ মঙ্গলবারও রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বলেন, ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ী এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে মৌসুমি বায়ুর অক্ষ রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয়। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমি বায়র প্রবল আধিক্যের কারণে গত জুন মাসের পার্বত্য এলাকায় ব্যাপক পাহাড় ধসের প্রলয়ঙ্করী ঘটনার জন্ম দেয়। এতে প্রায় দেড়শ’ অধিক লোকের প্রাণহানি ঘটে। এদিকে মৌসুমি বায়ু আধিক্যের কারণে কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে ইতোমধ্যে মৌলভীবাজার ও সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিরি অবনতি হয়েছে। একই কারণে রংপুর নীলফামারী, দিনাজপুর ও সিলেট অঞ্চলে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন তিস্তার পানি বেড়ে লালমনিরহাট রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। এছাড়াও দেশের প্রধান নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে জুলাই মাসজুড়ে ভারি বর্ষণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে জুলাই মাসের প্রমার্ধে সুরমা, কুশিয়ারা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকাসহ দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাই মাসে বঙ্গোপসাগরে ১-২টি মৌসুমি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার মধ্যে অন্তত একটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এ মাসে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু কিছু স্থানে বন্যার সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, গঙ্গা, পদ্মা ও কুশিয়ারা নদীসমূহের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে সুরমা নদীর পানি সমতলে স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, যমুনা নদীর পানি আগামী ৭২ ঘণ্টা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতলে আগমী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে দেশের নদনদীর ৯০টি সমতল স্টেশনের মধ্যে ৫৮টি স্থানের পানি সমতলে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে ২৩টি স্থানের পানি সমতলে হ্রাস পেয়েছে। বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ৪টি স্থানের পানি। বিশেষ করে সুরমা-কুশিয়ার নদীর পানি কানাইঘাট, অমলশীদ, শেওলা, শেরপুর, সিলেটে বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট এলাকায় বিপদ সীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপবিভাগী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান। এদিকে মৌসুমি বায়ু কারণে সোমবার সারাদিন আকাশ মেঘলা ছিল। রাজধানী ঢাকায় রবিবার রাত থেকেই মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর সোমবার সকাল ৫টা পর্যন্ত ঢাকায় ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে। এছাড়া দেশের সীতাকু-ে ১০৫ মিলিমিটার সন্দ্বীপে এদিন ১০৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতে রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দম্কা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।
×