ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

রায়ে প্রমাণ হয়েছে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ৪ জুলাই ২০১৭

রায়ে প্রমাণ হয়েছে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তারা যে কতটা স্বাধীন তার প্রমাণ উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে প্রদান সংক্রান্ত মামলার এই রায়। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আদালতের রায় সম্পর্কে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করলে তিনি বলেন, এতে প্রতিক্রিয়া দেখানোর কোন দরকার নেই। তারা বিচারক। বিচারক হিসেবে তারা রায় দিয়েছেন। রায় দেয়ার স্বাধীনতা তাদের রয়েছে। তারা যা ন্যায় বলে মনে করেছেন, তাই করেছেন। আর তা করার অধীকার বিচারকদের রয়েছে। কারণ আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তারা যে কতটা স্বাধীন, তা এই রায়েই বোঝা গেল। এছাড়া বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট পরিচালনার জন্য ‘বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড’ গঠনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি মন্ত্রিসভা ‘বীজ আইন, ২০১৭’ এর খসড়াও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। সচিবালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট আগামী ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণ করা হবে বলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘স্যাটেলাইট ক্লাবে বাংলাদেশ শীঘ্রই অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করার প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন খুব শীঘ্রই হবে বলে আশা করছি। ওটাকে পরিচালনা করার জন্য একটা কোম্পানি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি বলেন, যারা মূল ব্যবস্থাপক তারা বলেছেন লোকালি এটাকে ম্যানেজ করতে গেলে একটা কোম্পানি লাগবে। এই কোম্পানি এটার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করবে। পাঁচ হাজার কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধন নিয়ে কোম্পানিটি গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ৫০০ কোটি শেয়ার হবে, প্রতিটি শেয়ারের মূল্য হবে ১০ টাকা। ১১ সদস্যের একটি কমিটির প্রস্তাব করা হয়েছে যাদের সবাই সরকারী কর্মচারী। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও অতিরিক্ত সচিব এবং অর্থ বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বশস্ত্র বাহিনী বিভাগের একজন করে প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকবেন। টেলিকমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক, স্পারসোর চেয়ারম্যান, সরকার মনোনীত দুইজন পরিচালক এবং বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই কমিটিতে থাকবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পদাধিকারবলে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন। আর কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হবেন কমিটির সদস্য সচিব। অন্যরা বোর্ড অব ডাইরেক্টর হিসেবে কমিটিতে থাকবেন। বীজ আইনে শাস্তি বাড়ছে বৈঠকে ‘বীজ আইন, ২০১৭’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর খসড়াটি নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সিডস অর্ডিন্যান্স-১৯৭৭’ নামে একটি আইন আমাদের আছে। এটি যেহেতু সামরিক শাসনামলের আইন সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনটাকে বাংলায় রূপান্তর করে সংশোধন করে নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে। নতুন আইনে থাকা বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, জাতীয় বীজ বোর্ড আগের আইনেও ছিল। শফিউল আলম বলেন, যদি কোন ব্যক্তি বীজ পরিদর্শকের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে বাধা দেন বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন তবে তিনি অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন। সেই অপরাধীর দ- হচ্ছে ৯০ দিনের (৩ মাস) বিনাশ্রম কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দ-। ভেজাল বা নিম্নমানের বীজ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও বীজ পরিদর্শক দেখবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত ফসলের বীজের বিক্রয়ের কোন শর্ত লঙ্ঘন করলেও শাস্তি ৯০ দিনের বিনাশ্রম কারাদ- বা ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দ-। কোন অপরাধ দ্বিতীয় বার করলে শাস্তি দ্বিগুণ হবে। আগে প্রথমবার অপরাধের জন্য শুধু ৫০০ টাকা জরিমানা ছিল। একই অপরাধ দ্বিতীয়বার করলে ৩০ দিনের জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানা ছিল। এই আইনের অপরাধ সরাসরি আদালত গ্রহণ করবে না। বীজ পরিদর্শকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হবে। এ আইনটাকে মোবাইল কোর্ট আইনের তফশিলভুক্ত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। মোবাইল কোর্টের আওতায় এর বিচার করা যাবে।
×