ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পটুয়াখালীতে সরকারী চাল বিতরণে অনিয়ম

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ৪ জুলাই ২০১৭

পটুয়াখালীতে সরকারী চাল বিতরণে অনিয়ম

নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী, ৩ জুলাই ॥ দশমিনা উপজেলায় হতদরিদ্রের মধ্যে বরাদ্দকৃত সরকারী চাল আত্মসাতের হিড়িক চলছে। এমন চিত্র পটুয়াখালীর আট উপজেলার। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ ঘনিষ্ঠ ইউপি সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্য এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। নবগঠিত চরবোহানসহ সাত ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত দশমিনা উপজেলা। এ ইউপি চেয়ারম্যান নজির আহমেদ সরদার হতদরিদ্র জেলেদের মধ্যে বিতরণের চাল স্বজন ও ইউপি সদস্য আত্মসাত করেছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছে। বুড়াগৌরাঙ্গ নদের মধ্যে অবস্থিত চরবোরহান ইউনিয়নের শতকরা ৭০ ভাগ পরিবার জেলে ও শতভাগ বসতি মৎস্যজীবী কর্মকা-ে জড়িত। ঈদুল ফিতরের বন্ধের পূর্বে বরাদ্দ করিয়ে বন্ধের মধ্যে চাল বিতরণ করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান। বালতি মেপে ৪০-৪৫ কিলোগ্রাম চাল দেয়ায় জেলেরা হতাশা প্রকাশ করেছে। ভুক্তভোগী অহিদুল, মনির ও লিয়ার বলেন, প্রতি জেলেকে সরকার নির্ধারিত ৮০ কিলোগ্রাম চাল দেয়ার কথা থাকলেও অর্ধেক চাল দেয়া হয়েছে। অপরদিকে, স্থানী জনতা সেন্টার বাজার ও পাগলা বাজার থেকে কয়েকটি নৌকা আটকে বিক্রির উদ্দেশ্যে বোঝাই চাল ছিনতাই করে। ২নং ওয়ার্ড জামে মসজিদের ঈমাম মোশারেফ হোসেনের জিম্মায় রয়েছে আটককৃত চার বস্তা চাল। চেয়ারম্যান নজির সরদার বলেন, যত্রতত্র চালের বস্তা মজুদ থাকার বিষয়টি তদন্ত করছি। এদিকে জেলেদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফ চাল ঈদুল ফিতর ছুটির আগে ছাড় করেন বাঁশবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন আকন। ওই বরাদ্দের চাল দিয়ে ভারনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি), ভারনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) ও প্রণোদনা (ঈদুল ফিতর) কর্মসূচীর আওতায় উপকারভোগীদের বিতরণ সম্পন্ন করেও ৮২ বস্তা চাল ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে মজুদ রয়েছে বলে স্থানীয় রাজা খান ও কাশেম রাঢ়ী জানান। চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন আকন বলেন, কয়েক গরিব মানুষ বিতরণের সময় উপস্থিত হয়, তাদের মধ্যেও কিছু চাল বিতরণ করা হয়। রণগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান হাফেজ জাকির হোসেন নির্বাচনী মেয়াদ শেষেও ওপর মহল ম্যানেজ করে ২ বছর অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে বরাদ্দ বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ জন্য ভুক্তভোগীরা ইউপি কমপ্লেক্স থেকে তার বাড়ি পর্যন্ত প্রায়ই হামলা অপমান-অপদস্থ করার ঘটনা ঘটায়। ওই ইউনিয়নে বরাদ্দ বিতরণে জোর যার মূলক তার নীতি প্রচলিত। চেয়ারম্যান হাফেজ জাকর হোসেন বলেন, স্বচ্ছভাবে বিতরণ করা হয়, কেউ অনিয়মের কথা বলতে পারবে না। আলীপুর ইউপিতেও বরাদ্দের চাল গোডাউল এলাকায় চোরাই বাজারে বিক্রির পর অবশিষ্ট চাল ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে নিয়ে বিতরণ করা হয়। অভিযুক্তরা অবশ্য এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এছাড়াও সদর দশমিনা ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ লিটন, বহরমপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ নিয়মিত রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ইউপি সদস্য এ অভিযোগ করেন। বরাদ্দ বিতরণের সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতির দাবি জানান ইউপি সদস্যরা। এ সব অভিযোগের ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহামুদ জামান জানান, অভিযোগ সত্য নয়। চাল, গম বিতরণে কোন অনিয়ম হয়নি। এসব চেয়ারম্যানদের প্রতিপক্ষের লোকজনের প্রচার।
×