ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৩ জুলাই ২০১৭

গরমে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন

জন্মগত কারণে অনেকের ত্বক ফর্সা আবার অনেকের শ্যামলা, তবে নিজের স্বভাবের কারণেই অনেক সময় ফর্সা বা শ্যামলা যে কোন প্রকারের ত্বক হোক না কেন তা অনুজ্জ্বল হয়ে যায়। নানা কারণেই আমাদের ত্বক তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে। গরমের এই মৌসুমে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ঘাম বেশি হয়। এ জন্য ত্বকের তেলগ্রন্থি থেকে নিঃসরণও বেশি হয়। ত্বকের তৈলাক্ততা দূর করতে তাই আমাদের দরকার বিশেষ যতœ। ঘরে থাকা এটা-সেটা দিয়েই ত্বক তেলমুক্ত, স্বাভাবিক ও উজ্জ্বল রাখতে পারেন। -চন্দনের গুঁড়ার সঙ্গে একটি লেবুর রস ও গোলাপজল মিশিয়ে পেস্টের মতো বানিয়ে নিন। আলত করে হাত বুলিয়ে সারা গায়ে ভাল করে মাখুন। কিছুক্ষণ রেখে ভালমতো গোসল করে ফেলুন। এতে আপনার ত্বক যেমন পরিষ্কার হবে, তেমনি শরীরজুড়ে ত্বকের নিচে রক্তপ্রবাহও বাড়বে। ত্বকে আসবে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এবং কোমল ভাব। -মধু ও মুলতানি মাটি মিশিয়ে একটা ‘ফেসপ্যাক’ বানিয়ে নিন। পুরো মুখে তা ভাল করে মেখে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এটা মুখের ত্বকে জমা হওয়া অতিরিক্ত তেল শুষে নেবে এবং ত্বক সজীব ও কোমল দেখাবে। -ঠা-া করে রাখা কাঁচা দুধের সঙ্গে অল্প পরিমাণে লেবুর রস মিশিয়ে মুখ-হাত-পায়ে ভাল করে মাখুন। ১০ মিনিট রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের অতিরিক্ত তেল দূর হবে এবং ত্বক কম তৈলাক্ত থাকবে। -এই গরমে ত্বক পরিষ্কার রাখার সবচেয়ে ভাল উপাদান হলো ঘৃতকুমারী। এটা ত্বকের তেল শুষে নেয়ার পাশাপাশি মুখে-হাতে-পায়ে ফুসকুড়ি থাকলে তাও পরিষ্কার করে। ঘৃতকুমারীর আঠাল রসের সঙ্গে স্ট্রবেরির মণ্ড এবং জইদানার গুঁড়া মিশিয়ে একটা ‘ফেসপ্যাক’ তৈরি করে ব্যবহার করুন। এই ফেসপ্যাক কয়েকদিন রেফ্রিজারেটরে রেখে দিয়েও ব্যবহার করতে পারবেন। টমেটোও ত্বক পরিষ্কারে দারুণ উপকারী। মাঝারি আকারের একটি বা দুটি টমেটোর মণ্ড বানিয়ে সারা মুখে ভাল করে মেখে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এবার ভাল করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। -ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নেয়া এবং ত্বককে টানটান রাখার জন্য খুবই উপকারী ডিমের সাদা অংশ। একটি বা দুটি ডিম ভেঙে কুসুমটা সরিয়ে নিয়ে সারা মুখে ডিমের সাদা অংশ ভাল করে মাখুন। সাত থেকে ১০ মিনিট রাখার পর ভাল করে ঠা-া পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। সুন্দর হতে কিংবা নিজের একটু সুন্দর ও পরিপাটি ত্বক থাকবেÑ এটা সবাই চায়। সুন্দর ত্বক অনেকেই বংশগতভাবে পেয়ে থাকেন, তবে যাদের সুন্দর ত্বক আছে এবং যাদের নেইÑ সবারই প্রয়োজন ত্বকের সঠিক পরিচর্যা। ত্বক পরিষ্কারে সাবানবিহীন পণ্য ব্যবহার আপনি ত্বক পরিষ্কারক হিসেবে অবশ্যই সাবানবিহীন অর্থাৎ সোপ ফ্রি ফেসওয়াশ ব্যবহার করবেন। সাবান আপনার ত্বকের স্বাভাবিক দীপ্তি অনেকটাই কমিয়ে দেয়। নখ দিয়ে ত্বকের শুষ্কতা পরিমাপ করুন সব সময় হাতে কিংবা পায়ের ত্বকে নখ দিয়ে হালকা আঁচড় কেটে দেখুন সেখানে কি সাদা ভাব ফুটে উঠছে কিনা? যদি সাদা দাগ দেখা যায় তবে বুঝতে হবে আপনার ত্বক শুষ্ক। শুষ্ক ত্বকের সঙ্গে যায় এমন সব জিনিস ত্বকে প্রয়োগ করতে হবে। আর যদি ত্বক হয় তৈলাক্ত তবে তৈলাক্ত জিনিস পরিহার করতে হবে। মুখের ত্বকের মতোই গলা এবং পিঠের যতœ নিন অনেকেই মনে করেন কেবল মুখের ত্বকের যতœ মানেই ত্বকের যতœ। বাস্তবিক আপনার সম্পূর্ণ শরীরজুড়েই ত্বকের অবস্থান আপনাকে শরীরের সব জায়গায় সমান যতœ নিতে হবে। বিশেষ করে আপনি যখন বাইরে যান, তখন আপনার ঘাড় কিংবা গলায় সূর্যের আলোর প্রভাব অনেক বেশি পড়ে, সেই সঙ্গে এই জায়গায় ময়লাও অনেক বেশি হয়। সুতরাং এসব জায়গায় ঠিকভাবে যতœ নিতে হবে। গরমের দিনে বাইরে থেকে এসেই ঘাড়ে একটি টাওয়েল ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে লাগান, এতে আপনার ঘাড় এবং মাথা উভয়ই শীতল থাকবে। ত্বকে প্রাকৃতিক জিনিস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন আমাদের প্রকৃতিতেই অনেক পণ্য পাওয়া যায় যা দিয়ে আমরা খুব সহজেই প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের ত্বকের যতœ নিতে পারি। মূলত এসব প্রাকৃতিক উপাদানে কোনরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না। আমাদের ত্বক তৈলাক্ত, শুষ্ক এবং সাধারণ এই তিন ধরনের। আর এই তিন ধরনের ত্বকের যতœ নিতে হয় আলাদা তিন পদ্ধতিতে। তৈলাক্ত ত্বক তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তৈরি হয় বিশেষ করে গরমকালে। এ সময় তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে বাইরে বের হলেই বিরক্তিকর এক অবস্থার সম্মুখীন হতে হয়। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা বেশি বেশি মুখ ধুবেন। আপনি পানি দিয়ে ত্বক ধুলে আপনার ত্বক অনেকটাই শীতল থাকবে। এছাড়া আপনি মেথির গুঁড়া, শসার রস এবং চালের গুঁড়া দিয়ে খুব সহজেই একটি প্যাক তৈরি করে আপনার তৈলাক্ত ত্বকে প্রয়োগ করতে পারবেন। এতে আপনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব অনেকটাই হ্রাস পাবে। দিনে দুইবার এই প্যাক লাগালে আপনার ত্বকের ব্রণ হবার প্রবণতাও অনেকটাই কমে যাবে কারণ ব্রণ তৈলাক্ত ত্বকের একটি প্রধান সমস্যা।
×