ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেঁধে দেয়া সময়সীমা শেষ

সৌদি জোটের ১৩ দফা প্রত্যাখ্যান কাতারের

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ জুলাই ২০১৭

সৌদি জোটের ১৩ দফা প্রত্যাখ্যান কাতারের

সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন কিছু আরব দেশের পক্ষ থেকে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য কাতারকে যে শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছিল তা চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে দোহা। ইতালি সফররত কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান আল থানি শনিবার রাতে রোমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া ও পার্সটুডে অনলাইনের। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থানি বলেন, রিয়াদ ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে দেয়া একটি শর্তও তার দেশ মানবে না। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শর্তগুলো প্রত্যাখ্যান করা হলো। গতমাসের শুরুতে সৌদি আরব, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরসহ ছয়টি আরব দেশ কাতারের সঙ্গে সবধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি জল, স্থল ও আকাশপথে কঠোর অবরোধ আরোপ করে। অবরোধ আরোপের দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় পর কাতারবিরোধী পদক্ষেপ তুলে নেয়ার জন্য মধ্যস্থতাকারী দেশ কুয়েতের কাছে ১৩ দফা দাবি পেশ করে সৌদি জোট। দাবিগুলোর মধ্যে কাতারে থাকা তুরস্কের একটি সামরিক ঘাঁটি ও আলজাজিরা টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ করে দেয়া অন্যতম। আলোচনার মাধ্যমে এসব দাবির কোন মীমাংসা করা যাবে না বলে জানিয়ে দেয় ওই আরব দেশগুলো। রবিবারের মধ্যে এসব দাবি না মানলে কাতারের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ায় নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত। শর্ত মেনে নেয়ার জন্য ১০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে দাবিগুলো না মানলে কাতারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে হুমকি দিয়ে রেখেছে ওই ছয়টি দেশ। দশদিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা আগে তা চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ধারণা করা হচ্ছে, যে ছয়টি আরব দেশ সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছে তারা দেশটির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে। সমস্যা সমাধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলোর দেয়া দাবি মানার সময়সীমা রবিবার শেষ হয়েছে। এদিকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দেল আল-জুবায়ের টুইটারে জানিয়েছেন, দোহার প্রতি যেসব শর্ত বেঁধে দেয়া হয়েছে তা নিয়ে কোন আলোচনা হবে না। সানি আরও বলেন, সবার এটা স্পষ্ট যে, দাবিগুলোর লক্ষ্যই হচ্ছে কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করা, বাক স্বাধীনতা স্তব্ধ করে দেয়া এবং কাতারের কর্মকা-ের ওপর নজরদারি স্থাপন করা। আমরা মনে করি বিশ্ব কোন আল্টিমেটামের মাধ্যমে নয় বরং আন্তর্জাতিক আইনে পরিচালিত হয়। এই আইন বড় দেশগুলোকে ছোট দেশগুলোর ওপর আধিপত্য বিস্তার করতে বাধা দেয়। আরব দেশগুলো সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়নি বরং কাতারের সার্বভৌমত্ব খর্ব করার লক্ষ্যে তা করা হয়েছে। আর প্রত্যাখ্যাত হওয়ার জন্যই দাবির তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে। মেনে নেয়ার মতো করে এটি তৈরি করা হয়নি এবং আলোচনার কোন সুযোগও রাখা হয়নি। নীতিগত অবস্থান থেকে কাতার একে প্রত্যাখ্যান করছে। আমরা সংলাপে বসতে রাজি আছি। সংলাপের জন্য উপযুক্ত শর্ত প্রস্তুত করতে হবে। একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়ার অধিকার কারও নেই।
×