ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুদিনের সফরে শি জিনপিং আজ মস্কো যাচ্ছেন

চীন-রুশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ৩ জুলাই ২০১৭

চীন-রুশ সম্পর্কে নতুন মাত্রা

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বার্তা নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আজ থেকে দুদিনের সফরের শুরু করছেন। এ সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ছাড়াও বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুদেশের সম্পর্ক উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে রুশ অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়কমন্ত্রী ম্যাক্সিম ওরেশকিন সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেনন। এএফপি ও গ্লোবাল টাইমস। দুদিনের এ সফরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে শি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার, পারস্পরিক আস্থা বাড়ানো এবং সহযোগিতাসহ দুদেশের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পুতিনের আমন্ত্রণেই শি রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন বলে দেশটিকে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি হুই জানিয়েছেন। এটি হবে দুই শীর্ষ নেতার মধ্যে চলতি বছর তৃতীয় সাক্ষাত। দুই নেতাই সাম্প্রতিক বিভিন্ন সাক্ষাতকারে বলেছেন, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে দিকে তারা এবার দৃষ্টি দিয়েছেন। লি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন আমরা দুই দেশ একে অন্যের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বজায় রাখব।’ চীনা বার্তাসংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ওরেশকিন বলেছেন যে, ‘চীন শুধু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশীই নয় বরং আমাদের প্রধান বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার। রুশ-চীন সহযোগিতার মধ্যে শিল্প, জ্বালানি, অবকাঠামো, কৃষি, এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মতো প্রায় সব বিষয়ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।’ দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আগে খুব ঘনিষ্ঠ ছিল না। গত বছর থেকে এটি বাড়তে শুরু করেছে। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ৯৫০ কোটি ডলার। দুই দেশ ২০২০ সালের মধ্যে এটি ২০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যেতে ইচ্ছুক। দুদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য অর্থনৈতিক ইস্যুতে কি কি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে রুশ অর্থনৈতিক উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রণালয় যাচাই-বাছাই করে দেখতে শুরু করেছে বলে মন্ত্রী জানান। তার মতে, দুদেশের মধ্যে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন ঘটে। তিনি বলেন, ‘রেল, হাইওয়ে ও বন্দরের মতো যোগাযোগ করিডোরের তৈরির ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রচুর সুযোগ রয়েছে। রুশ ভূখ-কে ব্যবহার করে চীন ইউরোপের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। তিনি জানান চীন ও রাশিয়া ইতোমধ্যেই মেরু এলাকা যৌথ উদ্যোগে অনুসন্ধানমূলক কাজ করছে। এছাড়া দুই দেশ একটি বৃহৎ বিমানপোত তৈরির জন্য যৌথ প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে। শির সফরকালে দুদেশের মধ্যে একটি যৌথ বিবৃতি সই হওয়ার কথা রয়েছে। চীন ও রাশিয়া সুপ্রতিবেশী এবং বন্ধুসুলভ সহযোগিতা চুক্তির রূপরেখা নিয়েও তারা আলোচনা করবেন। ২০১৭-২০২০ সালের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়িত হতে পারে। চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে রাশিয়া ইতোমধ্যেই প্রাচ্য এলাকায় প্রচুর অবকাঠামো প্রকল্প হাতে নিয়েছে। চীন বেল্ট এ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নামে নতুন যে বহুজাতিক বাণিজ্যিক রুট তৈরি করতে যাচ্ছে তার সঙ্গে রাশিয়ার ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়ন (ইএইইউ) সংযুক্ত করার বিষয়ে দুই দেশ ইতোমধ্যেই একমত হয়েছে। বেল্ট এ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত। একটি হলোÑ সিল্ক রোড ইকোনমিক বেল্ট এবং অপরটি টোয়েন্টিফার্স্ট সেঞ্চুরি মেরিটাইম সিল্ক রোড। এর লক্ষ্য প্রাচীন সিল্ক রুটের অনুরূপ রুট তৈরি করে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকাকে বাণিজ্যিকভাবে সংযুক্ত করা। অন্যদিকে রাশিয়ার ইএইইউ রাশিয়া, আর্মেনিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান ও কিরগিজস্তানকে সংযুক্ত করেছে। এর লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা বলয় গড়ে তোলা। দুটি বাণিজ্যপথকে সমম্বিত করার মাধ্যমে বিশাল অঞ্চলজুড়ে অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারিত হবে।
×