ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আবার সচল হচ্ছে জাপানী অর্থায়নের প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৩ জুলাই ২০১৭

আবার সচল হচ্ছে জাপানী অর্থায়নের প্রকল্প

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্ত্রাসী হামলায় নিজেদের সাত নাগরিক নিহত হওয়ার জেরে বাংলাদেশে জাপানী অর্থায়নের প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছিল। এক বছর পর সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে প্রকল্পগুলো ফের সচল হতে যাচ্ছে। ঝুলে থাকা মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রসহ ছয় অবকাঠামো প্রকল্পে বাংলাদেশকে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা টাকা ঋণ দিচ্ছে দেশটি। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গত ২৯ জুন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাদের ১৭৮ দশমিক ২২৩ বিলিয়ন ইয়েন ঋণের (১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার) এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়। প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসেবে এর পরিমাণ ১২ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। স্বল্প সুদের এই ঋণ শোধ করতে বাংলাদেশ সময় পাবে ৩০ বছর। রেয়াতকাল ধরা হয়েছে ১০ বছর; অর্থাৎ চুক্তির প্রথম ১০ বছর পর থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে। জাইকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক বছর বাংলাদেশ তাদের প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিকভাবে ৬ শতাংশের ওপরে নিয়ে গেছে। সস্তা শ্রম ও প্রচুর জনশক্তির কারণে বিদেশী বিভিন্ন কোম্পানির মতো জাপানী প্রতিষ্ঠানগুলোও বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে বড় বাজার বাংলাদেশকে আগামী দিনের একটি সম্ভাবনাময় শিল্প কেন্দ্র ও বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত করেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর করার ক্ষেত্রে জাইকা বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ছয় প্রকল্পে মোট ১৫৯ কোটি ডলার ঋণ এর মধ্যে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পে ছয় কোটি ৮৩ লাখ ডলার, কাঁচপুর, মেঘনা, গোমতী দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ ও বর্তমান সেতু সংস্কার প্রকল্পে চার কোটি ৬৯ লাখ ডলার এবং ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্পে (লাইন ওয়ান) চার কোটি ৯৭ লাখ ডলার ঋণ দেবে জাইকা। এছাড়া মহেশখালীর মাতারবাড়িতে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে নয় কোটি ৫৫ লাখ ডলার, ঢাকায় ভূগর্ভস্থ বিদ্যুত উপকেন্দ্র নির্মাণ ১ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ছোট আকারে পানিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পে ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলার ঋণ দেবে সংস্থাটি। উল্লেখ্য, গতবছর জুন মাসে জাইকা মাতারবাড়ি বিদ্যুত প্রকল্পের একটি ধাপের জন্য ৩৩ কোটি ৬৬ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার চুক্তি করলেও জুলাই মাসে গুলশানে জঙ্গী হামলার পর দরপত্র প্রক্রিয়া ঝুলে যায়। হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে সাতজনই ছিলেন জাপানী নাগরিক, যারা জাইকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের জরিপ কাজে ঢাকায় এসেছিলেন। জাইকার এবারের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি প্রকল্পের প্রাথমিক ক্রয়ের জন্য চলতি জুলাই মাসেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। মাতারবাড়ি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। ওই সময় সরকারের তরফে জানানো হয়, এই প্রকল্পে মোট ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে জাইকা। ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের কাজ ২০২৩ সালের অক্টোবরে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
×