ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সচিবদের সঙ্গে চার ঘণ্টা বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর;###;বর্তমান সচিবদের টিমটি যোগ্য;###;বর্ষা মৌসুমে পেপার ওয়ার্ক শেষ করুন, কাজের মানের সঙ্গে কোন আপোস নয়

’১৮’র ডিসেম্বরে নির্বাচন

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৩ জুলাই ২০১৭

’১৮’র ডিসেম্বরে নির্বাচন

তপন বিশ্বাস ॥ আগামী বছর ২০১৮’র ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে নির্বাচনী ইশতেহারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং দৃশ্যমান সকল কাজ সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি সচিবদের ১৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, শেষদিকে তাড়াহুড়ো না করে অর্থবছরের শুরু থেকেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করবেন। বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। এসডিজিতে সাফল্য দেখাতে হবে। কমাতে হবে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। ২০২১ সালে সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপনের আগে বাংলাদেশকে উল্লেখযোগ্য স্থানে নিয়ে যেতে হবে। রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে সচিব কমিটির সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি। মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে সকাল সোয়া ১০টা থেকে দুপুর সোয়া ২টা পর্যন্ত দীর্ঘ চার ঘণ্টা সচিবদের সঙ্গে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় ৭১ সিনিয়র সচিব, সচিব, ভারপ্রাপ্ত সচিব উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ১৬ জন মতামত দেন। সচিবদের পক্ষে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সচিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চায়। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরাও চাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হোক। এ লক্ষ্যে সচিবদের সকল অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা হলেন সরকারের চালিকাশক্তি। নির্বাচনের আগে আমরা ইশতেহারের সকল এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চাই। যে সকল এজেন্ডা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি তা এই সময়ের মধ্যে করতে হবে। এ লক্ষ্যে আপনাদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় অনেক কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। বর্তমান সচিবদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সচিবদের ভাল একটি টিম (দল) পেয়েছি। আপনারা সকলে ভাল কাজ করেন। যে কাজ যেভাবে চেয়েছি, আপনারা সেটা সেভাবে করেছেন। বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি দুষ্কৃতিরা ছাড়া হলি আর্টিজানে নিহত এবং চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে সকল তথ্য সংগ্রহ করে জাতির জন্য তা সংরক্ষণ করুন। ভাষা আন্দোলনে জাতির জনকের ভূমিকাও তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে। তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু অনেক আইন করে গেছে। এখন যত আইন নিয়ে কাজ করতে যাই তার প্রায় সবগুলোতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধুর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। বিভিন্ন দেশে তিনি গ্রামে ঘুরে জ্ঞান অর্জন করে তা বাংলাদেশে কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আট বছরে জিডিপি বেড়েছে। এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছেন আপনারা। আপনাদের জন্য জিডিপি বৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। সরকারের প্রশংসা হলেও এই প্রকৃত প্রশংসা আপনাদেরই প্রাপ্য। তৃণমূল পর্যায়ে এখনও আর্থিক অসচ্ছলতা রয়েছে। এগুলো দূর করতে হবে। তাদেরও আয় বাড়াতে হবে। স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। যেখানে রাস্তা তৈরি হবে তার দুই পার্শ্বে জলাধার রাখতে হবে। গাছ লাগাতে হবে রাস্তার দুই পার্শ্বে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এখন থেকে যে সকল স্থানে ভবন নির্মাণ করা হবে তার প্রতিটি ভবনে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে জলাধার রাখতে হবে। দ্রারিদ্য বিমোচনে আরও কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। নৌপথ, স্থলপথ, রেলপথ আরও উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। এসডিজিতে সাফল্য দেখাতে হবে। কমাতে হবে ধনী-দরিদ্র বৈষম্য। তিনি বলেন, ২০২১ সালে সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপনের আগে বাংলাদেকে উল্লেখযোগ্য স্থানে নিয়ে যেতে হবে। সচিবদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ১৭ দফা নির্দেশনাগুলো হচ্ছে- পার্বত্য চট্টগ্রামসহ পাহাড় ও টিলা অধ্যুষিত এলাকায় পরিবেশ রক্ষাসহ ভূমি ধস প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালনে আরও আন্তরিক হতে হবে। এবারের মতো মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। ঢাকা মহানগরী ও বুড়িগঙ্গা নদীর পরিবেশ দূষণ রোধে রাজধানীর হাজারীবাগের টেনারি কারখানাগুলো সাভারে স্থানান্তর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয় সে ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৩৮ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে ‘মেরিন প্রটেকটেড এরিয়া’ ঘোষণা করা হয়েছে। বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধে ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজন, অংশীদারিত্বমূলক ব্লক বাগান ও স্ট্রিপ বাগান সৃজন করতে হবে। গ্রাম উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে, কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। যাতে গ্রামের মানুষ কাজের খোঁজে শহরে না আসে। শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমাতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণে সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। উন্নয়ন কর্মসূচী এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের হার আরও বাড়াতে হবে। অর্থবছরের শেষ দিকে তাড়াহুড়ো না করে বছরের শুরু থেকেই বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণে ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্ষা মৌসুমে প্রকল্পের পেপার ওয়ার্ক সম্পন্ন করতে হবে। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের প্রয়োজন হলে তা দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোন আপোস করা যাবে না। ফাস্ট ট্রাকভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে আরও আন্তরিক হতে হবে। দক্ষ এবং যোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব দিতে হবে। ভাল কাজের পুরস্কার আর মন্দ কাজের জন্য তিরস্কার ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে সেবা পেতে জনগণকে যাতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয় তার উদ্যোগ নিতে হবে। বেতনভাতা বাড়ানো হয়েছে। কর্মচারীদের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করে সকলের ন্যায়-সঙ্গত পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে হবে। অপেক্ষাকৃত তরুণ কর্মকর্তা যারা দীর্ঘদিন চাকরি করবেন, প্রশিক্ষণে তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। জঙ্গীবাদ দমন এবং মাদক ব্যবসায় নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজির সফল বাস্তবায়নে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। কেবল সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে নয়, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে জনকল্যাণে আত্মনিয়োগে সহকর্মীদেরও উদ্বুদ্ধ করতে হবে। শেষদিকে তাড়াহুড়ো না করে অর্থবছরের শুরু থেকেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থবছরের শেষদিকে তাড়াহুড়ো না করে বছরের শুরু থেকেই বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করুন। বর্ষা মৌসুমে প্রকল্পের পেপার ওয়ার্ক সম্পন্ন করুন। আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের প্রয়োজন হলে তা দ্রুত করে ফেলুন। পাশাপাশি কাজের গুণগতমানের সঙ্গে কোন আপোস করা যাবে না। গত ১ জুন চলতি অর্থবছরের জন্য ঘোষিত চার লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ১৩ কোটি টাকা; যার এক লাখ ৫৩ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা যাবে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে। কিন্তু কোন বছরই শতভাগ এডিপি বাস্তবায়ন হয় না এবং অর্থবছরের শেষ দিকে তড়িঘড়ি অর্থ খরচ করা হয়। বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর ৬৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করা গেছে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নের হার আরও বাড়াতে সরকারী কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে গ্রাম উন্নয়ন, ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য কমানো, দুর্নীতি রোধ, সুশাসন নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে তা বাস্তবায়নে শীর্ষ আমলাদের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, গ্রাম উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে, কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। যাতে গ্রামের মানুষ কাজের খোঁজে শহরে না আসে। শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ যাতে না বাড়ে সে ব্যবস্থা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈষম্যহীন সমাজ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর বলেন, ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্য কমাতে হবে। সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। উন্নয়ন কর্মসূচী এমনভাবে গ্রহণ করতে হবে যাতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ উপকৃত হয়। একইসঙ্গে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি। দক্ষ এবং যোগ্যদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়ে ভাল কাজের জন্য পুরস্কার আর মন্দ কাজের জন্য তিরস্কারের ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দেন তিনি। তিনি বলেন, সুশাসন নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিন। সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলো থেকে সেবা পেতে জনগণকে যাতে ভোগান্তির শিকার না হতে হয় তার উদ্যোগ নিন। সরকারী কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা যে হারে বেতন ভাতা বাড়িয়েছি পৃথিবীর কোন দেশ তা করতে পারেনি। দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। এটা কোনভাবেই যেন না হয়। প্রধানমন্ত্রী জঙ্গীবাদ দমন ও মাদক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ এবং এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। এছাড়া আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করে ন্যায়সঙ্গত পদোন্নতি এবং পদায়ন নিশ্চিত করা এবং তরুণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে অগ্রাধিকার দিতেও পরামর্শ দেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সচিব কমিটির সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী সচিবদের উদ্দেশে বলেন, একটি রাজনৈতিক সরকার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ক্ষমতায় আসে। কিন্তু সচিবদের অনেক সময় ধরে সেবা দেয়ার সুযোগ থাকে। সচিবদের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, তার দলের রাজনৈতিক দর্শন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি একটি ভাল দল পেয়েছেন। শেখ হাসিনা তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন এবং সচিবদের শুধু সরকারী কর্মকর্তা নয়, দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে জনকল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এন এম জিয়াউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে চট্টগ্রামের কাস্টমস হাউস ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন ধরনের অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে সভায় সচিবরা তাদের মতামত তুলে ধরেন বলে জানান জিয়াউল আলম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, চট্টগ্রাম স্থল ও নৌবন্দরে মালামাল আমদানি-রফতানির বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা কাস্টমস স্টেশন খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমান অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সব কাজের পেপার ওয়ার্ক ঠিক করতে হবে যেন বর্ষা মৌসুমের শেষেই উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রেখে নতুন ভবন তৈরি করতে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। জিয়াউল আলম বলেন, ত্রাণ তৎপরতার জন্য জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত তহবিল রাখতে প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন। স্থানীয় চাহিদার ভিত্তিতে এবং জনগণের পশ্চাৎপদতার নিরিখে যেন স্থানীয়ভাবে প্রকল্প গ্রহণ করা হয় সে বিষয়ে একটি অনুশাসন প্রধানমন্ত্রী সচিবদের দিয়েছেন। বৃক্ষরোপণ অভিযান জোরদারের অনুশাসন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ বন করার বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যত্রতত্র নয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের আওতায় শিল্প কারখানাগুলো গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে সবাইকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে টার্গেট রয়েছে তার আলোকে সঠিকভাবে কাজ করতে হবে। কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের উপর প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রয়োজন, প্রধানমন্ত্রী কোয়ালিটি প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সচিবদের কোন প্রস্তাব ছিল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, ফৌজদারি মামলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সচিবদের মতামত পজিটিভই হয়েছে, সবাই প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনগুলো মেনে চলবেন সে কথাই বলেছেন। মামলার দীর্ঘসূত্রতা দূর করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
×