ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরও অবনমন

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২ জুলাই ২০১৭

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে বাংলাদেশের ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেল। শুক্রবার ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হারেই তা নিশ্চিত হয়েছে। এখন রেটিং পয়েন্টে যে অবস্থা আছে, তাতে চাইলেও আর বাংলাদেশকে র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বরের নিচে নামানো সম্ভব নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ চাইলেও আর বাংলাদেশকে পেছনে ফেলতে পারবে না। আর তাই বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে। র‌্যাঙ্কিংয়ে এ মুহূর্তে বাংলাদেশ আছে সাত নম্বরে। রেটিং পয়েন্ট ৯৪। বাংলাদেশের পরে আছে শ্রীলঙ্কা। তাদের র‌্যাঙ্কিং আট নম্বর। রেটিং পয়েন্ট ৯১। এরপর নয় নম্বরে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাদের রেটিং পয়েন্ট ৭৭। বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা টপকাতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর টপকাতে পারবে না। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যে আটটি দল র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর পর্যন্ত থাকবে। তারাই ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার রেটিং পয়েন্ট পার্থক্য ১৭। কোনভাবেই এই ১৭ পয়েন্ট আর জোগাড় করা সম্ভব নয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও ৮টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। কিন্তু আর কোনভাবেই তাদের ১৭ পয়েন্ট পাওয়া সম্ভব নয়। ভারতের বিপক্ষে এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ চলছে। সিরিজের আছে বাকি দুই ম্যাচ। এই দুই ম্যাচ জেতার সঙ্গে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ওয়ানডে ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন ৫টি ওয়ানডে জিতলেও ১৭ পয়েন্ট পাবে না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারতের বিপক্ষে হাতে থাকা দুটি ম্যাচ জিতলে ৮২ পয়েন্ট হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ জিতলে মিলবে ১ পয়েন্ট। হবে ৮৩ পয়েন্ট। যদি ইংল্যান্ডকে টানা ৫ ম্যাচেও হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, মিলবে আরও ১০ পয়েন্ট। হবে ৯৩ পয়েন্ট। তার মানে তখনও বাংলাদেশের চেয়ে ১ পয়েন্ট কম থাকবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। তার মানে সামনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শুধু শ্রীলঙ্কাকেই পেছনে ফেলার সুযোগ পাচ্ছে, বাংলাদেশকে নয়। আর তাই বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে গেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে ভরাডুবি দেখা যাচ্ছে, তাতে ধরেই নেয়া হচ্ছে, শেষপর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপেও সরাসরি খেলতে পারবে না। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে। সেই বিশ্বকাপে সরাসরি আটটি দল খেলবে। মোট ১০ দলের টুর্নামেন্ট হবে। বাকি দুটি দল বাছাইপর্ব উতরে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর দল সরাসরি খেলবে। ইংল্যান্ড স্বাগতিক বলে তারা এমনিতেই খেলবে। এরপর ইংল্যান্ডকে বাদ দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের আট নম্বর পর্যন্ত যে সাতটি দল থাকবে, তারাই সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। বাংলাদেশ যে আট নম্বরে অন্তত থাকছে, তা নিশ্চিত হয়ে গেল। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড আগেই বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করেছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতে পাকিস্তানও সেই দলে যোগ দিয়েছে। সাত নম্বর দল হিসেবে বাংলাদেশও একই পথের পথিক হয়ে গেল। এখন আর একটি দল বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। সেটি শ্রীলঙ্কা না ওয়েস্ট ইন্ডিজ হবে, তা সময়ই বলে দেবে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হার-জিতের হিসাব শতভাগ ধরা দেবে। র‌্যাঙ্কিংয়ে রেটিং পয়েন্ট হিসাব হয় হার-জিতের হিসাবেই। যদি দুই দলের মধ্যকার ৩৮ বা তার বেশি রেটিং পয়েন্ট পার্থক্য থাকে, তাহলে রেটিং পয়েন্টে নিচে থাকা দলটি ৩ পয়েন্ট করে পায়। সেই হিসেবে ভারতের বিপক্ষে (১১৬ রেটিং পয়েন্ট) চতুর্থ ওয়ানডেটি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতে তাহলে ৩ পয়েন্ট পাবে। হবে ৮০ পয়েন্ট। এরপর ভারতের সঙ্গে পঞ্চম ওয়ানডে জিতলে পাবে ২ পয়েন্ট। হবে ৮২ পয়েন্ট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলে আরও ১ পয়েন্ট। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে (১১৩ রেটিং পয়েন্ট) পাঁচ ম্যাচই জিতলে আরও ১০ পয়েন্ট মিলবে। সবমিলিয়ে ৯৩ পয়েন্ট হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। বাংলাদেশকে ছুঁতেই পারবে না। আর যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারতে থাকে, তাহলে কথাই নেই। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের যদি কোন ওয়ানডে ম্যাচ থাকত, তাহলে সমস্যা হতো। তখন হারলেই রেটিং পয়েন্ট কমার সম্ভাবনা থাকত। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোন ওয়ানডে খেলাই নেই। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ ছিল। কিন্তু পাকিস্তান খেলবে না। তাই বাংলাদেশের আর রেটিং পয়েন্ট কমারও কোন সম্ভাবনা নেই। তাতেই বাংলাদেশের বাজিমাত হয়েছে। ভারতের বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথমটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। সেখানেই রেটিং নিয়ে কোন হিসাবই নাই। পরের দুটি ম্যাচেই হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুক্রবার যে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সেখানেই বাংলাদেশের বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত হয়ে যায়।
×