ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এ্যাশেজও খেলবেন না অসি ক্রিকেটাররা!

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ২ জুলাই ২০১৭

এ্যাশেজও খেলবেন না অসি ক্রিকেটাররা!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও অসি ক্রিকেটারদের মধ্যে আর্থিক বিষয় নিয়ে এমনই ঝামেলা হয়েছে, ক্রিকেটাররা এ্যাশেজও খেলবেন না বলে হুমকি দিয়ে ফেলেছেন! অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মধ্যকার ঐতিহ্যবাহী এ সিরিজও খেলতে চাচ্ছেন না অসি ক্রিকেটাররা। ক্রিকেটারদের মুখপাত্র হয়ে জশ হ্যাজলউড বলে দিয়েছেন, ‘বেতন না পেলে ক্ষতি নেই। সিএর অন্যায্য প্রস্তাব মানার চেয়ে বেকার থাকা ভাল।’ আর আগেই সিনিয়র ক্রিকেটাররা হুমকি দিয়ে রেখেছেন, দাবি মানা না হলে তারা এ্যাশেজও খেলবেন না। ক্রিকেটারদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়নি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। তাতেই সামনের সিরিজগুলো নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয়েছে। সামনে অস্ট্রেলিয়া ‘এ’ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর রয়েছে। সেই সফরেও ক্রিকেটাররা যেতে রাজি নন। যদিও বাংলাদেশে আসার বিষয়টি এখনও কারও কণ্ঠ থেকে বের হয়নি। তবে ‘এ’ দলের সফর, এমনকি এ্যাশেজ যেখানে ক্রিকেটাররা খেলতে রাজি নন; সেখানে কী আর বাংলাদেশে আসবেন ক্রিকেটাররা? এই প্রশ্নও উঠছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বেতন-ভাতা নিয়ে ক্রিকেটারদের দ্বন্দ্ব চলছেই। শেষ পর্যন্ত তা মিটবে বলেও মনে হচ্ছে না। তবে মিটে না গেলে বিপদই আছে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) যে শর্ত দিয়েছে, তা মানেননি ক্রিকেটাররা। তাই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেননি। তাতে ক্রিকেটাররা বেকার হয়ে গেছেন। শনিবার থেকেই অসি ক্রিকেটাররা আর সিএর চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটার নন। সমস্যাটা শুরু হয়, সিএ ক্রিকেটারদের দাবি দাওয়া না মানাতেই। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দর্শক হয় না। তাই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে খেলা ক্রিকেটারদের লভ্যাংশ দিতে চায় না না সিএ। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ঠিকই সব সুবিধা দিতে চায়। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা তাতে রাজি নয়। তাদের দাবি সবাইকে সমান লভ্যাংশ দেয়া হোক। সিএ’র আর্থিক বণ্টনের প্রস্তাবিত নতুন কাঠামোই এই ঝামেলা তৈরি করে। আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আয়ের শতকরা ২৫ ভাগ পেতেন অস্ট্রেলিয়ার সব ক্রিকেটার। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী সব ক্রিকেটার নয়, বাড়তি আয়ের অংশ শুধু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারদের দেয়ার প্রস্তাব করেছে সিএ। ক্রিকেটারদের সংগঠন দ্য অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিএ) এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। ক্রিকেটাররাও তাতে সায় দেয়। ক্রিকেটারদের পক্ষ হয়ে এসিএ সবসময় সিএ’র সঙ্গে কথা বলে যায়। সব পর্যায়ের ক্রিকেটারদের মাঝে বণ্টন করতে হবে বাড়তি আয়ের অংশ। ক্রিকেটাররা নতুন চুক্তি সই না করায় দুঃখ প্রকাশ করে সিএ বলেছে, এতে চুক্তিহীন ক্রিকেটারদের পরিবারের ওপর আর্থিক ও মানসিক চাপ তৈরি হবে। তবে আপাতত ক্রিকেটারদের বেতন দিতে হবে না ভেবেও খুশি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। প্রতি ১৫ দিনে খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা বাবদ ১২ লাখ ডলার খরচ হতো। দুই পক্ষ সমঝোতায় না আসা পর্যন্ত এই টাকাটা তৃণমূল ক্রিকেটে খরচ করার ঘোষণা দিয়েছে সিএ। চুক্তি সই না করায় অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ প্রথম সারির পুরুষ ও নারী ক্রিকেটার বেকার হয়ে পড়েছেন। শঙ্কার মুখে পড়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার আগামী মাসের বাংলাদেশ সফর ও সেপ্টেম্বরে ভারত সফর। শঙ্কার কালো মেঘ নবেম্বর-জানুয়ারির এ্যাশেজ ঘিরেও। এত সব অনিশ্চয়তায় সম্প্রচার সংস্থা, স্পনসর, খেলোয়াড় ও প্রশাসক, সবাই শঙ্কিত ভবিষ্যত নিয়ে। সিএর কর্মকা-ের কড়া সমালোচনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সহ-অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নার বলে দিয়েছেন, আয়বণ্টনের পুরনো কাঠামোয় ফেরত না গেলে বেকার বসে থাকতেও তাদের আপত্তি নেই। ওয়ার্নার এটাও বলেছেন, শুধু কয়েকজন নামীদামী ক্রিকেটার আয়ের অংশ পাবেন সেটা হবে না, ক্রিকেটের লাভের অংশ সব ক্রিকেটারকে ভাগ করে দিতে হবে। মূল ঝামেলা বাধে আসলে এসিএকে পাস কাটিয়ে সরাসরি ক্রিকেটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করাতেই। সিএ চায় বোর্ড ও ক্রিকেটারদের মাঝে তৃতীয় কোন পক্ষ থাকবে না। তাতেই বিপত্তি বাধে। সেই বিপত্তিতে ক্রিকেটাররা চুক্তিও করেননি। এ্যাশেজও খেলবেন না বলে হুমকিও দিয়েছেন।
×