ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

জাতীয় জাদুঘরে শিল্পী পালের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতসন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ২ জুলাই ২০১৭

জাতীয় জাদুঘরে শিল্পী পালের শাস্ত্রীয় সঙ্গীতসন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এখনও ঈদের ছুটি কাটিয়ে পুরোদমে সচল হয়নি রাজধানীর সংস্কৃতি অঙ্গন। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার তিনটি মঞ্চে এখনও শুরু হয়নি নাট্য প্রদর্শনী। ঢাকার গ্যালারিগুলোতেও চলছে না কোন শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। সেই আলসেমিভাবের মাঝেই শনিবার জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শোনা গেল শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুর। ধ্রুপদী আঙ্গিকের সুরেলা শব্দধ্বনিতে শ্রোতাদের অন্তরে প্রশান্তির পরশ ছড়িয়ে দিলেন কলকাতার প্রতিশ্রুতিশীল উচ্চাঙ্গসঙ্গীত শিল্পী শিল্পী পাল। পরিবেশন করলেন দাদরা ও ঠুমরি ঘরানার ধ্রুপদী সঙ্গীত। বৃষ্টিস্নাত দিন শেষে সান্ধ্যাকালীন এই সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (আইজিসিসি)। সঙ্গীতায়োজনের সূচনা হয় রাগ ইমন কল্যাণের আশ্রয়ে। ‘পাইয়া তোরি লাগু’ গীতবাণীর সুর ধরে কখনও শিল্পী পালের কণ্ঠটি নেমে যায় ধীর লয়ে। আবার কখনও উচ্চতালে পৌঁছে যায় কারুকার্যময় কণ্ঠটি। সেই মোহনীয় কণ্ঠের মায়াজালে সিক্ত হয় শ্রোতার অন্তর। এরপর তিনি মিশ্র দেশ রাগের আশ্রয়ে পরিবেশন করেন ঠুমরি। সব শেষে ছিল সংক্ষিপ্ত একটি দাদরার উপস্থাপনা। শ্রোতায় পরিপূর্ণ ছিল না মিলনায়তন। তবে স্বল্প হলেও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের কিছু অনুরাগীর উপস্থিতিতে সঙ্গীতায়োজনটি পায় স্নিগ্ধ রূপ। আর এই ধ্রুপদী গানের আয়োজন উপভোগ করতে হাজির হয়েছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ ও লোকসঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। শিল্পী পালের সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন শুভ্রাংশু চক্রবর্তী। তানপুরা বাজিয়েছেন চিত্রালী এবং হারমোনিয়ামে সঙ্গত দিয়েছেন মোঃ শাকুর। সঙ্গীতসন্ধ্যার শুরুতে শিল্পী পালের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরেন আইজিসিসির পরিচালক জয়শ্রী কু-ু। সঙ্গীত পরিবেশনের আগে শ্রোতাদের সঙ্গে নিজের সংযোগ ঘটিয়ে শিল্পী পাল বলেন, এদেশে প্রথমবার গান গাইতে এলাম। এর আগে শুধু বন্ধুদের কাছে শুনেছি বাংলাদেশের কথা। অনেক দিন ধরেই মনের মধ্যে সুপ্ত বাসনা ছিল, ঢাকায় গিয়ে গান শোনাব। আজ সেই আশাটি পূর্ণ হলো। সঙ্গীতপ্রাণ এক পরিবারে জন্ম নেয়া এক কণ্ঠশিল্পী শিল্পী পাল। সঙ্গীত জীবনের শুরুতে দীক্ষা নিয়েছেন প-িত মানাস চক্রবর্তীর শিষ্য রঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের কাছে। এরপর তালিম নেন বিষ্ণুপুর ঘরানার কণ্ঠশিল্পী প-িত নিহার রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। কিরানা ঘরানার গান শিখেছেন প-িত অরুযণ ভাদুড়ির কাছে। বর্তমানে শিল্পী পাল হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের দীক্ষা নিচ্ছেন পদ্মভূষণপ্রাপ্ত বেনারস ঘরানার খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী গিরিজা দেবীর কাছে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভুবনে ক্রমশ নিজেকে সমৃদ্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছেন শিল্পী পাল। সেই সুবাদে পেয়েছেন বিভিন্ন ধরনের স্বীকৃতি ও পুরস্কার। স্বীকৃতিপ্রাপ্তি কিংবা পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীন ইস্টার্ন কালচারাল জোনাল, প-িত রবি কিসলু ফাউন্ডেশন, ডোভার লেন সঙ্গীত সম্মেলন, ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউজিক একাডেমি, আনন্দবাজার পত্রিকা প্রভৃতি।
×