ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় সীমান্ত গ্রামে বিজিবির তাণ্ডব

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ২ জুলাই ২০১৭

নওগাঁয় সীমান্ত গ্রামে বিজিবির তাণ্ডব

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১ জুলাই ॥ সাপাহার উপজেলার হাপানিয়া সীমান্তে চোরাকারবারিদের হামলায় দুই বিজিবি সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর রাতে ক্ষুব্ধ বিজিবি পার্শ¦বর্তী কৃষ্ণসদা গ্রামে ব্যাপক তা-ব চালিয়েছে। তাদের তা-বে অসংখ্য ঘরবাড়ির দরজা-জানালা, ছাউনির টিন ভাংচুর, শতাধিক নারী-পুরুষ-শিশু আহত হয়েছে। শুক্রবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। ওই গ্রামের নির্যাতিতরা জানান, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে কৃষ্ণসদা গ্রামের অদূরে ফাঁকা মাঠে একদল চোরাকারবারি ও টহলরত বিজিবির সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় চোরাকারবারিদের লাঠির আঘাতে দুই বিজিবি সদস্য মারাত্মক আহত হয়ে মাঠের মধ্যে পড়ে থাকে। ওই সময় অন্য বিজিবি সদস্যরা কোন চোরাকারবারিকে আটক করতে না পেরে গ্রামে এসে তাদের দুর্ঘটনার কথা জানায়। এরপর গ্রামের আব্দুল ওহাবসহ কয়েকজন কাঁধে করে আহত দুই বিজিবি সদস্যকে ক্যাম্পে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফিরে আসে। এরপর রাত ১টার দিকে অসংখ্য বিজিবি সদস্য ওই গ্রামে এসে ঘুমন্ত মানুষের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রায় প্রত্যেক বাড়ির দরজা ভেঙ্গে বাসায় প্রবেশ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ নারী-শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ সবার ওপর বেধড়ক লঠিচার্জ শুরু করে। এ সময় বিজিবির লাঠি ও লাথির আঘাতে গ্রামের বুলবুল হোসেনের স্ত্রী মাসকুরা খাতুন, সামাদ আলীর স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন, ইসমাইল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা খাতুন, আলতাফ হোসেন, পার্শ¦বর্তী আলাদিপুর গ্রামের আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসা শিশু মমিন আশরাফুল মারাত্মক জখম হয়। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নেয়। আহত দুই বিজিবি সদস্যকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। বিজিবি সদস্যরা গ্রামের অসংখ্য লোকজনকে আহত করেও ক্ষান্ত না হয়ে তারা গ্রামের এখলাস আলীর ছেলে রুবেল, রহবুল আলীর ছেলে তসলিম, তার ভাই এসএসসি পরিক্ষার্থী মুসলিম, মৃত মেহের আলীর ছেলে বৃদ্ধ আঃ সামাদ, তার ছেলে রায়হান আলী, ইউসুফ ম-লের ছেলে সাহেব আলী, ইউসুফ কাপুড়িয়ার ছেলে হাবিবুল্লাসহ সাতজনকে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে চোরাকারবারি সাজিয়ে রাতেই থানায় মামলা দায়ের করে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ। গোয়ালা ইউপি চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মুকুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুল আলম শাহ্ ছয় চোরাকারবারিকে থানায় সোপর্দ করার কথা স্বীকার করে জানান, বিজিবি তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। তবে গ্রামবাসীর ওপর বিজিবির হামলা, ভাংচুর বা মারপিটসংক্রান্ত কোন অভিযোগ কেউ করেনি। শনিবার বিকেলে এ বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য বিজিবি পতœীতলা ১৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খিজির খানের সরকারী মোবাইলে একাধিকবার রিং দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সীমান্তবর্তী ওই গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
×