ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ঢাকামুখী জনস্রোত

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২ জুলাই ২০১৭

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ঢাকামুখী জনস্রোত

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১ জুলাই ॥ ঈদ শেষে কর্মস্থল ঢাকায় ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। এতে ব্যস্ততা বেড়েছে শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। শুক্রবার বিকেল থেকেই লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল চোখে পড়ার মতো। এ সুযোগে কাঁঠালবাড়ির স্পিডবোট ঘাটে যাত্রী হয়রানি ও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীরা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোটে উঠতে হিমশিম খাচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে মানুষের চাপ ঘণ্টায় ঘণ্টায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ চাপ আরও কয়েকগুণ বাড়বে বলে ধারণা করছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। স্পিডবোটে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করায় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছে না সাধারণ যাত্রী। উল্টো তারা বলছে, ঈদের সময় ঘাটের লোকজন ভাড়া একটু বেশিই নিয়ে থাকে। এছাড়া প্রশাসনের সামনে লঞ্চ ও স্পিডবোটে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল নিষেধ থাকলেও সন্ধ্যার পর অবাধে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল করছে। এদিকে প্রাইভেট ও পাবলিক পরিবহনগুলোর ফেরিতে ওঠার প্রতিযোগিতার কারণে ঘাট এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বরিশাল থেকে আসা স্পিডবোটযাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নির্ধারিত ভাড়ার সাইনবোর্ড ঢেকে রেখে দ্বিগুণ ভাড়া নিচ্ছে। টেকেরহাট থেকে আসা স্পিডবোটের আরেক যাত্রী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সারাপথ বাড়তি ভাড়া দিয়ে ঘাটে এসেও স্পিডবোটে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে বাধ্য হলাম। প্রশাসনের লোকজন থাকলেও তাদের সামনেই দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করা হচ্ছে কাঁঠালবাড়ি ঘাটের স্পিডবোট কাউন্টারে বসে। দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুট দিয়ে। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের সময় এ সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাই পারাপারের সময় নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় যাত্রীদের। একসঙ্গে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামলাতে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ১৯ ফেরি, ৮৭ লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পিডবোটের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এবার যাত্রীদের সুবিধার্থে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের পাশাপাশি পুরনো কাওড়াকান্দি লঞ্চঘাট চালু রাখা হয়েছে। কাওড়াকান্দি লঞ্চঘাট দিয়ে দূরপাল্লার বাসের যাত্রী পারাপার হচ্ছে। কাঁঠালবাড়ি ঘাট পরিবহন পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ বলেন, স্পিডবোট বিআইডব্লিউটিএর রেজিস্ট্রেশনভুক্ত না হওয়ায় তাদের বিষয় আমাদের তেমন কিছু করার নেই। স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন ও ভাড়া আদায় করা হলে তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান আহম্মেদ জানান, ঈদে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সিসি টিভি ক্যামেরার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তিন শতাধিক সদস্য কাজ করছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস, নৌপুলিশ ও র‌্যাবের একাধিক টিম ঘাট এলাকায় নিয়োজিত আছে। পাশাপাশি লঞ্চ ও স্পিডবোটগুলোর প্রতি আলাদা নজর রাখা হচ্ছে, যাতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে। স্পিডবোটে কিছু বাড়তি ভাড়া আদায় করছে ঘাটের অসাধু ব্যক্তিরা- এমন অভিযোগের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×