ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিল্পকলায় চারুনীড়মের ‘শেষ নবাব’

প্রকাশিত: ০৩:৪৪, ২ জুলাই ২০১৭

শিল্পকলায় চারুনীড়মের  ‘শেষ নবাব’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চারুনীড়ম থিয়েটারের ৫ম প্রযোজনা ‘শেষ নবাব’ নাটকের ষষ্ঠ মঞ্চায়ন হতে যাচ্ছে আগামী ৮ জুলাই শনিবার। দল সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে ‘শেষ নবাব’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। সাঈদ আহমদ রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন গাজী রাকায়েত। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন সাইদুল হক, কাকা মাকসুদ, ওমর ফারুক, চামেলী সিনহা, আখন্দ জাহিদ, বি এম শাহেদ, আলমগীর সাগর, মাহমুদুল হক সংগ্রাম, আল-মোতাস্সিম, রোহান খান, আশিউল ইসলাম, সেলিম রেজা, লিখন রাহী, আমিনুল হক সুজা, মহসিন রেজা, নূর ইসলাম, শাহারিয়ার মিথুন প্রমুখ। নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় ফয়েজ জহির, আলোক পরিকল্পনায় অম্লান বিশ্বাস, আলোক প্রক্ষেপণ সালাহউদ্দিন, আলোকচিত্র রতন সিদ্দিকী, রূপসজ্জ্বা মোহাম্মদ আলী বাবুল, পোশাক পরিকল্পনা এনামতারা সাকী, আবহ সঙ্গীত পরিকল্পনা এফ কে স্বাধীন। ‘আমার রাজ্যে একতার দুর্ভিক্ষ’, প্রত্যেকেই নিজেকে এক একজন খুদে নবাব মনে করে’। সংলাপটি চারুনীড়ম থিয়েটারের অন্যতম প্রযোজনা ‘শেষ নবাব’ নাটকের। নির্দেশক গাজী রাকায়েত বলেন, ১৯৯০ সালে শিল্পকলা একাডেমির ‘কালবেলা’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে সাঈদ আহমদের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। এরপর থেকে তার রচিত ও আনুবাদকৃত নাটকগুলোর প্রতি আমি আগ্রহী হয়ে উঠি। ‘যদি আর জন্মে আবার পলাশিতে আসার সুযোগ হয় তাহলে আবার আমি মীরজাফরকে বিশ্বাস করব’ সিরাজের এই সংলাপটি আমাকে ভীষণভাবে উদ্বুদ্ধ করেছে এই নাটকটিতে নির্দেশনা দিতে। তিন বছর আগে দলে ‘শেষ নবাব’ নাটকটি নিয়ে কাজ করার কথা ভাবি এবং নাটকটির পাঠও শুরু করি। কিন্তু অভিনেতার সংকট এবং সর্বোপরি দলের আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে পিছিয়ে পড়ি। সাঈদ আহমদ ফাইন্ডেশন ফর কালচার এ্যান্ড আর্টসের (সাফকা) আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়ায় আমি আবারও নাটকটি মঞ্চায়নের জন্য উদ্যোগী হই। নাটকটি মঞ্চায়নের এই সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি সাফকার প্রতি কৃতজ্ঞ। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিকেও কৃতজ্ঞতা জানাই, তারা প্রযোজনাটি সফল করতে আমাদের সহযোগিতা করেছে। এই নাটকে সিরাজ-উদ-দৌলা, ঘসেটি বেগম, মীর জাফর এবং রবার্ট ক্লাইভের চরিত্র চিত্রায়ণ অসাধারণ। চলচ্চিত্র, নাটক ও যাত্রার কারণে সিরাজ-উদ-দৌলা ও পলাশীকে নিয়ে সৃষ্ট আমাদের আবেগী ভাবনাটাকে সাঈদ আহমদ একটা দৃঢ় বাস্তবতায় নিয়ে গেছেন। তাই ঐতিহাসিক বাস্তবতার দৃষ্টিকোণ থেকে পলাশী, সিরাজ ও সাম্রাজ্যবাদ এই তিনটি শব্দের মনতাজ ‘শেষ নবাব’। সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন থেকে একটি স্বাধীন ভূখ-ের একজন মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামের নাম সিরাজ-উদ-দৌলা। শেষ নবাব কিন্তু সবকিছু শেষ নয়, যেখানে শেষ সেখান থেকেই শুরু। নাটকটি আপনাদের ভাল লাগলেই আমাদের শ্রম স্বার্থক হবে। আমরা চাই চারুনীড়ম থিয়েটারের এই মঞ্চায়ন প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে, সাঈদ আহমদের শেষ নবাব নাটকটি নতুনভাবে আবিষ্কৃত হোক। জয় হোক সাঈদ আহমদের, জয় হোক মুক্তিকামী মানুষের। প্রসঙ্গত, চারুনীড়ম থিয়েটার ২০১০ সালের ২১ জুন থেকে যাত্রা শুরু করে। চারুনীড়ম স্কুল অব এ্যাক্টিংয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের নিয়ে চারুনীড়ম থিয়েটার গঠিত হয়। চারুনীড়ম থিয়েটার সত্য ও সুন্দরে বিশ্বাসী। একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে নান্দনিকভাবে দেশী-বিদেশী নাট্যকারদের নাটককে থিয়েটারের মাধ্যমে মানুষের মাঝে পৌঁছানো এবং বিষয়ের বৈচিত্র ও ভিন্নতাকে উপস্থাপন করে সৃষ্টিশীল কর্মপ্রয়াস চালিয়ে যাওয়াই চারুনীড়ম থিয়েটারের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। নিয়মিত থিয়েটার চর্চার মধ্য দিয়ে মননশীল নাট্যকর্মীর সমন্বয়ে শুদ্ধ সংস্কৃতির পথে সুশীল দর্শকদের সঙ্গে নিয়ে চারুনীড়ম থিয়েটার নির্ভিক চিত্তে এগিয়ে যেতে চায়।
×