ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

হংকংকে অন্তর্ঘাতমূলক কাজে ব্যবহার সহ্য করা হবে না

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ২ জুলাই ২০১৭

হংকংকে অন্তর্ঘাতমূলক কাজে ব্যবহার সহ্য করা হবে না

ব্রিটেন কর্তৃক ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তরের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, হংকং আগের চেয়ে অনেক স্বাধীনতা ভোগ করছে কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, তারা এই দ্বীপে চীনের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করবে। এবং তা করলে এটি অনুমোদিত হবে না। গার্ডিয়ান। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে তিনি হংকংয়ের নতুন নেত্রী ক্যারি ল্যামের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনি চীন ও হংকংয়ের পতাকা উত্তোলনেও শামিল হন। শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী দল ‘ডেমোসিস্টো ও বেইজিংপন্থী’ দল পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এ বিক্ষোভ থামাতে ডেমোসিস্টো দলের পাঁচ ও প্রতিপক্ষের ৪ জনকে আটক করে। চীনা প্রেসিডেন্টের আগমণ উপলক্ষে নিরাপত্তাজনিত কারণে শহরের অধিকাংশ এলাকা বন্ধ করে দেয়া হয়। তা সত্ত্বেও শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। গণতন্ত্রপন্থীরা হংকংয়ের জন্য অধিকতর গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার এবং ভিন্ন মতাবলম্বী নেতা লিউ শিয়াবোর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন। এ সময় তারা মৃত গণতন্ত্রের একটি প্রতীকী ‘কফিন’ বহন করছিল। এ সময় চীনাপন্থী একজন দৌড়ে গিয়ে কফিন বাক্সে লাথি মারলে উভয়পক্ষে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে পুলিশ এসে ধরপাকড়ের মাধ্যমে পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। প্রায় ৮০ লাখ জনবসতি অধ্যুষিত হংকংয়ের মন-মানসিকতা দীর্ঘকাল ব্রিটিশ শাসনাধীন থেকে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ধারায় বেড়ে ওঠে। তাই চীন ও ব্রিটেনের মধ্যে হংকং হস্তান্তরের সময় এক সমঝোতা চুক্তি হয়, যার ফলে হংকং একটি অর্ধ স্বায়ত্তশাসিত এলাকা হিসেবে মূল ভূ-খ- চীন থেকে অনেক বেশি নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার লাভ করে। সংক্ষেপে এ চুক্তির বিষয়বস্তু ছিল ‘এক দেশ-দুই পদ্ধতি’। কিন্তু বর্তমান চীনা নেতৃত্ব এটি না মেনে হংকংয়ে আরও কর্তৃত্ববাদী শাসন চাপিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা করছে। হংকংয়ের বর্তমান নেত্রী ক্যারি ল্যাম তার পূর্বসূরির মতো চীনাপন্থী কমিটি দ্বারা মনোনীত হয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি হংকংয়ে চীনের স্বার্থ বাস্তবায়নে কাজ করবেন। ক্যারি ল্যামকে শপথ বাক্য পাঠ করানোর পর শি জিনপিং সতর্কবাণী উচ্চারণ করে বলেন, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি সরকারের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে, এমন ধরনের তৎপরতা মেনে নেয়া হবে না এবং এ রেড লাইন (সতর্ক সীমা) কোনভাবেই অতিক্রম করা যাবে না। আর কেউ যদি মূল ভূ-খ-ে অন্তর্ঘাতমূলক কাজ চালানোর জন্য হংকংকে ব্যবহার করে বা সুযোগ করে দেয় তবে তাও সহ্য করা হবে না। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বক্তব্যে হংকংয়ের রাজনীতি, গণমাধ্যম ও শিক্ষা খাতসহ সর্বত্র একদলীয় কঠোর হস্তক্ষেপের সূচনা হলো এই আশঙ্কাই সবার মধ্যে পাকাপোক্ত হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট শি, হংকংয়ে পৌঁছার আগেই সেখানের গণতন্ত্রপন্থী নেতা জসুয়া উং বিক্ষোভকারীদের এক সমাবেশে বলেন, ‘এ ভূ-খ-ে গণবিশৃঙ্খলার জন্য একটি লোকই দায়ী এবং তিনি হচ্ছেনÑ শি জিনপিং’। এর পরপরই গত বুধবার তাকেসহ ২৫ জন কর্মীকে আটক করা হয়।
×