ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়াশিংটনে মুন জায়ে ইনের সঙ্গে ট্রাম্পের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার প্রতি হুশিয়ারি

দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২ জুলাই ২০১৭

দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ধৈর্য শেষ হয়ে আসছে। উত্তর কোরিয়াকে এখন ভেবেচিন্তে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সফররত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইনকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনকালে তিনি এ কথা বলেন। বিবিসি ও সিএনএন। ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়াকে এখন যেকোন একটি পথ দ্রুত বেছে নিতে হবে। দেশটির শাসকদের বিষয়ে ধৈর্য ধারণের মার্কিন নীতি কোন কাজে আসেনি। সহজ কথায়, ‘পিয়ংইয়ংয়ের শাসকদের বিষয়ে আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে এসেছে।’ অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট তার উত্তরের প্রতিবেশীর সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি আরও বলেন, তার দেশ প্রতিরক্ষা সংস্কার এবং নিজেদের প্রতিরক্ষা জোরদার করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। মুন বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তার আলোচনায় উত্তর কোরিয়া প্রধান আলোচ্য বিষয় ছিল। একমাত্র শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থাই যে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় শান্তি আনতে পারে বলে তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। ট্রাম্প বলেন, উত্তর কোরিয়াকে রোখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়া ও আঞ্চলিক অন্যান্য দেশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। পিয়ংইয়ংয়ের একগুঁয়ে শাসকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সবরকম পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নিচ্ছে বলে তিনি জানান। উত্তর কোরিয়াকে অর্থ পাচারে সহায়তা করছে, এমন অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি একটি চীনা ব্যাংকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ ঘটনায় চীন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র ওয়াশিংটনকে এ ধরনের ‘ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ না করার’ আহ্বান জানিয়ে বলেছে এর ফলে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতার সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জবাবে মার্কিন অর্থ দফতর জানিয়েছে চীনের একটি শিপিং কোম্পানি ও দুই ব্যক্তি উত্তর কোরিয়ার অস্ত্র ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত আছেন এটি জানার পর ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মার্কিন অর্থ দফতর আরও জানায় যে, চীনের প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে ওই পদক্ষেপ নেয়া হলেও চীনকে উদ্দেশ্য করে যুক্তরাষ্ট্র কোন পদক্ষেপ নেয়নি। উত্তর কোরিয়া ইস্যুতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কিছুদিন ধরেই সম্পর্কে কিছুটা দূরত্ব হয়েছে। জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পিয়ংইয়ং একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালেও দেশটির ওপর চীন কোন প্রভাব খাটাচ্ছে না, এ অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা উভয় দেশই বেপরোয়া ও নির্দয় একটি শাসক চক্রের হুমকি মোকাবেলা করছি। উত্তর কোরিয়াকে খুব দ্রুত একটি পথ বেছে নিতে হবে। পরে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার শাসকদের সঙ্গে কৌশলগত ধৈর্যের যুগ ব্যর্থ হয়েছে।’ মুন উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্বের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন যা তার পূর্বসূরী পার্ক জিউন হাইয়ের দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে অভিশংসনের পর নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন মুন। তিনি প্রথম থেকেই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার কথা বলে এসেছেন। মুন জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তার আলোচনাতেও উত্তর কোরিয়া সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে। পিয়ংইয়ংয়ের একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট পরীক্ষা করা ছাড়াও দেশটির ওপর ওয়াশিংটনের ক্ষুব্ধ হওয়ার আরও কারণ আছে।
×