ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ড. মাহবুব মোমতাজ

ফিরে দেখা আওয়ামী লীগের আটষট্টি বছর

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২ জুলাই ২০১৭

ফিরে দেখা আওয়ামী লীগের আটষট্টি বছর

(শেষাংশ) বাংলাদেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ । নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৯২ আসন পেয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করে। ১৯৭৩ সালে ১৯ মে দালাল আইনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে বিচার শুরু করেন। ১৯৭৪ সালের ১৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দশম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এই কাউন্সিলে রাজশাহীর এ, এইচ, এম কামরুজ্জামান সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুন:নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) গঠিত হলে বঙ্গবন্ধু চেয়ারম্যান ও ক্যাপ্টেন মুনসুর আলী সেক্রেটারি জেনারেল হোন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের ১৮ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অবাক বিস্ময়ে পৃথিবীর মানুষ সেদিন শোকে বিহ্বল হয়েগিয়েছিল। বাংলাদেশ নামের একটি দেশ যিনি জন্ম দেন, সাড়ে সাতকোটি মানুষের যিনি জনক হতে পেরেছিলেন, বিশ্ব ইতিহাসে যার পরিচিতি ছিল শোষিত মানুষের নেতা হিসেবে, নির্যাতিত মানুষদের পক্ষে যিনি ছিলেন বজ্রকণ্ঠ, সাধারণ মানুষের যিনি ছিলেন বন্ধু তাকেও হত্যা করা হলো! বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে তার প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের দুঃসময় নেমে আসে ১৯৭৫ সালের পর। অভিভাবকহীন অবস্থায় ১৯৭৭ সালের ৪ এপ্রিল সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন আহ্বায়ক হয়ে একাদশতম কাউন্সিল করেন। (তবে, এর অগে ১৯৭৬ সালে দল পুনরুজ্জীবনের পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে মহিউদ্দিন আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ স¤পাদক হিসেবে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দায়িত্ব পালন করেন।) ১৯৭৮ সালের ১৮-২০ জানুয়ারি দ্বাদশ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে আব্দুল মালেক উকিল সভাপতি ও আব্দুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক হোন। (এ বছরই আওয়ামী লীগ (মিজান) সভাপতি ও মতিউর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে আরেকটি কমিটি গঠন করে। মুখ্যত আওয়ামী লীগ দুই ধারায় বিভক্ত হয়। কিন্তু ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে আব্দুল মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নৌকা মার্কা প্রতীক বরাদ্দ পায়। ফলে আওয়ামী লীগ (মালেক) মূল দল হিসেবে বিবেচিত হয়।) ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ত্রয়োদশ কাউন্সিল। এ কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা (শেখ হাসিনা তখন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে) এবং সাধারণ সম্পাদক হোন আব্দুর রাজ্জাক। আব্দুর রাজ্জাক অন্য দল গঠন করলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হন। নিজের জন্মভূমিতে ফিরতে পারেন না শেখ হাসিনা, তারই বাবার হাতে জন্ম নেয়া বাংলাদেশে ফিরতে না পারার বেদনা অপার! অবশেষে শত্রুকবলিত অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশে নিস্ব, রিক্ত, অসহায়, এতিম শেখ হাসিনা ১৭ মে ১৯৮১ প্রিয় মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে সক্ষম হন। দেশে ফিরে মায়ের শীতল পরশে যে বাড়িতে বড় হয়ে ওঠেছিলেন, বাবার বুকে মাথা রেখে যে বাড়িতে আশ্রয় পেতেন ভাইবোনের নিবিড় সান্নিধ্যে, সেই ৩২ নম্বর ধানম-িতে যাওয়ার অনুমতি ছিল না শেখ হাসিনার কি আশ্চর্য ব্যাপার! এভাবেই বৈরী রাজনৈতিক পরিবেশে ক্লান্ত, শোকে মূহ্যমান শেখ হাসিনা হাল ধরলেন বাবার উত্তরাধিকার হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে ময়দানে, গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নিয়ে যান জনগণের কাছে । জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে গড়ে তুলেন আওয়ামী লীগকে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের নির্বাচনে প্রথম অংশগ্রহণ করেন। জনগণের বিপুল সমর্থন থাকলেও এরশাদের সামরিক কৌশলে নির্বাচনে কারচুপির আশ্রয়ে জিতে যায় জাতীয় পার্টি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৮৬টি আসন নিয়ে জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসে। শেখ হাসিনা হোন বিরোধী দলীয় নেতা। ১৯৮৭ সালে ১-৩ জানুয়ারি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চর্তুদশ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাজেদা চৌধুরী পুনঃসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের একদলীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করেনি। রাজপথে থেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন সংগঠিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার ব্রত নিয়ে শেখ হাসিনা দিনরাত কাজ করেন এবং ১৯৯০ সালে ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পথ সুগম করেন। ১৯৯১ সালে ২৭ ফেব্রয়ারি দেশে প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সূক্ষè কারচুপির মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী জামায়াতকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মুজাহিদীকে মন্ত্রী বানান খালেদা জিয়া। তখন বিএনপি সরকারের দমন পীড়নে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী পঙ্গুত্ব বরণ করে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দেয়। বসত ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদের। সিদ্দিকুর রহমান বাংলাভাই ও শায়খ আব্দুর রহমানের মতো জঙ্গীদের আশ্রয় দিয়ে দেশে পাকিস্তানের শাষণ কায়েম করতে চেষ্টা করেন। ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ অফিসে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সংসদে বিরোধী দলের নেত্রী হিসেবে শেখ হাসিনাকে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয় না। শুরু হয় শেখ হাসিনা নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন। এরকম আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যেই ১৯৯২ সালে পঞ্চদশ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলে শেখ হাসিনাকে সভাপতি ও জিল্লুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। সরকার গঠন করেই শেখ হাসিনার সরকার দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। ব্রিটিশ শাসনামল থেকে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ী বাঙালীদের বিরাজমান সমস্যার সমাধান করেন ১৯৯৭ সালের শান্তি চুক্তির মাধ্যমে। এ বছরই বায়ান্নর ভাষা আন্দোলেনের শহীদদের রক্তের মূল্যায়ন করেন ইউনেস্কোতে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃ ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের মাধ্যমে। সরকার গঠনের এক বছরের মধ্যে ১৯৯৭ সালের ৬-৭ মে ষোড়শতম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনা সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় ২০০০ সালের ২৩ জুন। এ কাউন্সিল সভায় শেখ হাসিনা সভাপতি ও জিল্লুর রহমানকে পুনঃসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০০১ এ অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে। জামায়াতে ইসলামী নির্ভর চার দলীয় জোট সরকারের নিয়ন্ত্রণ হয় ‘হাওয়া ভবন’ নামে তারেক রহমানের ব্যবসায়িক অফিস থেকে। য়েখানে তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াসউদ্দীন আল মামুন চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বিদ্যুতের খুঁটি সরবরাহের নামে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা ও বিদেশে অর্থ পাচারের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামেএর মধ্যেও ২০০২ সালের ২৬ মে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সতেরতম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও আব্দুল জলিলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০০৬ সালে বিএনপি জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবে এ প্রশ্নে নিজেদের পছন্দের লোকের হাতে ক্ষমতা দিতে নানা ধরনের কৌশলের আশ্রয় নেয়। অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রধান ফখরুদ্দীন আহমেদ ও সেনাবাহিনীর প্রধান দেশে একটি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সীমাহীন নিপীড়ন ও ধরপাকড়ের শিকার হয়ে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা গ্রেফতার হন। দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ১১ জুন মুক্তি পান। ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে এবং শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৯ সালে ২৪ জূলাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অস্টাদশ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দ আশরাফ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণা দেন। তৃণমূল থেকে রাজধানী শহর পর্যন্ত সকল মানুষের কাছে তথ্যপ্রবাহ ও প্রযুক্তিকে পৌছে দিতে কাজ করেন যা বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাছে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করে তুলতে সক্ষম হয়।। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উনিশতম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সৈয়দ আশরাফকে পুনঃসাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের তা-ব ও বিএনপি জামায়াতের দেশে জ্বালাও পোড়াওয়ের রাজনীতি শুরু করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষতার সঙ্গে তা মোকাবেলা করেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দেশে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বিএনপি জামায়াত ছাড়া সকল দল অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশতম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এ কাউন্সিলে সভাপতি হন শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ওবায়দুল কাদের। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন শহীদ সোহরাওযার্দীর হাত ধরে যে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের একমাত্র অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের প্রথম সভাপতি মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে জনগণের নেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে সেই আওয়ামী লীগ আজও বাংলাদেশের একমাত্র রাজনৈতিক দল যেখানে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের নিরাপদ আশ্রয় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ভিশন ২০২১ থেকে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পৌঁছে দেবেন এটাই তার ব্রত। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ ও দেশ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য নির্মূল করে ডিজিটাল বাংলাদেশ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। শুভ হোক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আটষট্টিতম জন্মদিন। লেখক : তেজগাঁও কলেজের শিক্ষক
×