ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ফুটবল বিশ্বের ‘ফার্স্টলেডি’ রোকুজ্জো

প্রকাশিত: ০৬:২০, ১ জুলাই ২০১৭

ফুটবল বিশ্বের ‘ফার্স্টলেডি’ রোকুজ্জো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সব শঙ্কা আর প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন সুপারস্টার লিওনেল মেসি। বাংলাদেশ সময় আজ শনিবার ভোর চারটায় শুরু হয় মেসির সঙ্গে বান্ধবী এ্যান্টোনেল্লা রোকুজ্জোর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এই লেখা পাঠকদের হাতে পৌঁছানোর সময় হয়ত বিয়ের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়ে যাবে। জানাই ছিল বিয়েতে তারাদের মিলন মেলা বসবে রোজারিওতে। সাবেক-বর্তমান অনেক বার্সিলোনা তারকাকে নিয়ে তারার হাটই বসে আর্জেন্টিনার শহরটিতে। এই বিয়ের মধ্য দিয়ে ‘ফাস্ট লেডি অফ ফুটবল’ হলেন মেসির ছেলেবেলার প্রেমিকা রোকুজ্জো। মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে রোকুজ্জো রোজারিওতেই বেড়ে উঠেছেন। মেসির সঙ্গে তার পরিচয় হয় মাত্র ৯ বছর বয়সে। প্রথম দেখাতেই প্রেম হয়ে যায় তাদের। মেসি ১৩ বছর বয়সে বার্সিলোনায় চলে গেলেও কিশোরী প্রেমিকাকে ভুলে যাননি। দু’জনের মধ্যে ফোনে ও চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ ছিল। এরপর রোকুজ্জো মেসির কাছে বার্সিলোনায় চলে আসেন। তাদের দুটি সন্তানও আছে। তাদের নাম থিয়াগো ও মাতেও। বাবা-মায়ের বিয়েতে ছিলেন দুই ছেলে থিয়াগো ও মাতেও। আসলে বাবা-মার বিয়েতে প্রধান আকর্ষণ তো ওরাই। বিশ্বখ্যাত বাবা-মার বিয়ে দেখার সৌভাগ্য ক’জনের হয়। বিয়েতে ২৬০ জনের বেশি অতিথিকে নিমন্ত্রণ করেন পাঁচবারের বর্ষসেরা ফুটবলার। যাদের মধ্যে ছিলেন মেসির ২১ জন বার্সা সতীর্থ। এর মধ্যে আছেন লুইস সুয়ারেজ, জাভি হার্নান্দেজ, স্যামুয়েল ইতো, কার্লোস পুওল, চেস ফেবিগ্রাস, সার্জিও বুসকেটসদের মতো সাবেক এবং বর্তমান তারকারা। তাদের নিরাপত্তার জন্য রোজারিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৩০০ পুলিশ কর্মকর্তাকে হোটেলের আশেপাশে নিয়োজিত থাকে। অতিথিদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় নাম পিকে ও শাকিরা দম্পতি। মেসির বিয়ে উপলক্ষে শাকিরা গাইতে পারেন বলেও শোনা যায়। মেসির আর্জেন্টাইন সতীর্থ সার্জিও এ্যাগুয়েরোর স্ত্রী ক্যারিনার এই অনুষ্ঠানে গাওয়ার কথা। রোজারিও এমনই এক স্থান যেখানে জন্ম হয়েছে দুনিয়া কাঁপানো দু’জন মানুষের। দু’জন একই পথের পথিক নন। একজন বর্তমান আর অপরজন অতীত হয়েও কালোত্তীর্ণ। কিন্তু নিজ যোগ্যতার দ্বারাই বিশ্বের দৃষ্টি কেড়ে নিয়েছেন। ১৯২৮ সালের ১৪ জুন আর্জেন্টিনার রোজারিওতে জন্ম হয় দুনিয়া কাঁপানো কমিউনিস্ট বিপ্লবী চে গুয়েভারার। ৬০ বছর পর এই রোজারিওতেই জন্ম হয় এক ফুটবল জাদুকরের। তার নাম মেসি। তার পায়ের জাদুতে হতবাক হয়ে যায় সারাবিশ্ব। সেই মেসির বিয়েতে চে গুয়েভারা থাকবেন না সেটা কি হয়? বিয়ে উপলক্ষে রোজারিও’র বিভিন্ন দেয়ালে দেয়ালে আঁকা হয়েছে মেসির গ্র্যাফিতি। কেবল মেসি নয়, গ্র্যাফিতিতে আছেন চে গুয়েভারাও। রোজারিও’র দুই বিখ্যাত সন্তানকে এভাবেই সম্মান জানাচ্ছে শহরবাসী। বিয়েতে আমন্ত্রিত হয়েছেন চে গুয়েভারার ভাই জুয়ান মার্টিন গুয়েভারা। কিউবায় সফল বিপ্লবের পর শোষণমুক্তির বিপ্লবকে ছড়িয়ে দিতে চে চলে আসেন বলিভিয়ার। সেখানে বিপ্লবীদের সংগঠিত করতে থাকেন তিনি। এসব কারণে বিপ্লবী চে আর গণমানুষের ক্ষমতায়নের জন্য তার গেরিলা যুদ্ধ আমেরিকাসহ পুঁজিতান্ত্রিক দেশগুলোর জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
×