ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লড়াই করেও বড় ব্যবধানে হার মেক্সিকোর, রবিবার ফাইনালে কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলির ;###;মুখোমুখি হবে ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা, জার্মানি ৪-১ মেক্সিকো

ইতিহাস গড়ে ফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১ জুলাই ২০১৭

ইতিহাস গড়ে ফাইনালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইতিহাস গড়ে ফিফা কনফেডারেশন্স কাপ ফুটবলের ফাইনালে নাম লিখিয়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি। রাশিয়ার সোচির অলিম্পিক স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার রাতে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কনকাকাফ অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন মেক্সিকোকে ৪-১ গোলে হারিয়ে এ কৃতিত্ব দেখিয়েছে জোয়াকিম লোর তরুণ দল। এর ফলে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের আসরের ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব দেখিয়েছে জার্মানি। এর আগে কনফেডারেশন্স কাপে তাদের সেরা সাফল্য ছিল তৃতীয় হওয়া। অথচ ইউরোপের পাওয়ার হাউসরা ফুটবল বিশ্বের অন্যতম সেরা সাফল্যের দেশ। এ পর্যন্ত বিশ্বকাপ জিতেছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চারবার, ইউরো শিরোপা তিনবার। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেতা হয়ে ওঠেনি কনফেডারেশন্স কাপ। এবার সেই সুবর্ণ সুযোগ। যা কাজে লাগাতে আগামী রবিবার কোপা আমেরিকার টানা দুইবারের চ্যাম্পিয়ন চিলির মুখোমুখি হবে জার্মানরা। সেন্ট পিটার্সবার্গের এই ম্যাচের দিকে দৃষ্টি এখন গোটা বিশ্বের। দুই দলের সামনেই আছে প্রথমবারের মতো কনফেডারেশন্স কাপের শিরোপা জয়ের সুযোগ। এবারই প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠেছে এই দুই দেশ। গ্রুপ পর্বেও এ দু’দলের দেখা হয়েছিল। সেখানে লড়াইটা শেষ হয়েছিল ১-১ গোলে। ম্যাচের শুরু থেকেই ভয়ঙ্কর রূপে দেখা যায় তারুণ্যনির্ভর জার্মান দলটিকে। আট মিনিটের মধ্যেই মেক্সিকোর জালে দু’গোল দিয়ে বসে তারা। ৩-৫-২ ফর্মেশনে মধ্য মাঠের দখল পুরোপুরিভাবে নেয় জার্মানরা। ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম গোল পায় জার্মানি। মিডফিল্ডার বেঞ্জামিন হেনরিকসের পাসে বল পেয়ে বক্সের সামান্য বাইরে থেকে মাপা শটে বল জালে জড়ান মিডফিল্ডার লিও গোরেটকা। ১-০ ব্যবধানে লিডের আনন্দের আবহ থাকা অবস্থাতেই দ্বিতীয় গোলের স্বাদ নেয় জার্মানরা। এবারও গোলদাতা গোরেটকার। তবে বলের যোগানদাতা স্ট্রাইকার টিমো ওয়ার্নার। ফলে অষ্টম মিনিটের মধ্যেই ২-০ গোলে লিড নিয়ে ফাইনালের টিকেট কাটার পথ অনেকাংশেই পরিষ্কার করে ফেলে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। দুই গোলে এগিয়ে থেকেও নিজেদের পরিকল্পনা মাফিক খেলা অব্যাহত রাখে জার্মানি। যে কারণে বেশিরভাগ সময়ই বলের দখল ছিল জোয়াকিম লো’র শিষ্যদের কাছে। আর তাই প্রথমার্ধে জার্মানির রক্ষণদুর্গে ভাল কোন আক্রমণ করতে পারেনি মেক্সিকো। উল্টো বেশ কয়েকবারই মেক্সিকোর রক্ষণদুর্গ কাঁপিয়ে দেয় জার্মানি। ম্যাচের প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক থাকে জার্মানি। তবে কিছুক্ষণ বাদেই ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে মেক্সিকানরা। এরই মধ্যে পাল্টা আক্রমণে ৫৯ মিনিটে তৃতীয় গোল হজম করে তারা। এরপরই মূলত ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। জার্মানির তিন নম্বর গোলের মালিক ওয়ার্নার। দ্বিতীয় গোলের পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি ছিল। মেক্সিকোর বক্সের ভেতরে লেফটব্যাক উইঙ্গার জোনাস হেক্টরের দেয়া পাস গোলে পরিণত করতে খুব বেশি অসুবিধা হয়নি ওয়ার্নারের। তিন গোল হজমের পরও ম্যাচে ফেরার আশায় ছিল মেক্সিকো। কিন্তু সেটি আর সম্ভব হয়নি। তবে ম্যাচের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে সান্ত¡নাসূচক গোল পায় মেক্সিকো। জার্মানির জালে ২৫টি শটের পর অবশেষে গোল পায় তারা। মিডফিল্ডার হেক্টর হেরেরার সহায়তা নিয়ে প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে বুলেট শটে জার্মানির জালে বল প্রবেশ করান এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মার্কো ফ্যাবিয়ান। গোলটি হজমের পর আবারও ঘুরে দাঁড়ায় জার্মানি। অতিরিক্ত সময়ে নিজেদের চতুর্থ গোল পায় তারা। আমিন ইউনেসের গোলে ৪-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে জার্মানি। প্রথমবারের মতো ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত হওয়ায় খুশি জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো। এটি একটি দুর্দান্ত ম্যাচ ছিল। মেক্সিকো চেষ্টা করেছিল আমাদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরাই সফল হয়েছি এবং ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছি। আমরা দারুণ খেলেছি, বিশেষভাবে ম্যাচের প্রথম ১৫ থেকে ২০ মিনিট। ম্যাচ হেরে হতাশ মেক্সিকোর কোচ জুয়ান কার্লোস অসোরিও বলেন, ফাইনালে ওঠার জন্য যেভাবে খেলা প্রয়োজন ছিল সেভাবে খেলতে পারিনি আমরা। শুরুতেই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয় জার্মানি। তারপরও আমাদের ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা তা পারিনি।
×