ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রয়লার মুরগির কমেছে

রাজধানীর বাজারে চাল ডাল তেল চিনি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ১ জুলাই ২০১৭

রাজধানীর বাজারে চাল ডাল তেল চিনি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকার বাজারগুলোতে ঈদের রেশ যেন কাটছেই না। সরবরাহ কমে যাওয়ায় চড়েছে সবজির দাম। ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও চাল, ডাল, ভোজ্যতেল ও চিনি বিক্রি হচ্ছে আগের মতো বেশি দামে। আরেক দফা বেড়েছে মাছের দাম। ক্রেতা কম থাকায় এখনও কাঁচা বাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ বাজারগুলো পুরোদমে চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ক্রেতাশূন্য বাজারে পণ্যের সরবরাহ নেই বললেই চলে। ঢাকার বড় পাইকারি বাজার কাপ্তানবাজারেও ঈদের ছুটির আমেজ বিরাজ করছে। বেশিরভাগ পাইকার মোকাম বন্ধ রেখে ছুটি কাটাচ্ছেন। এদিকে, বাজারগুলো চালু না হওয়ায় ঢাকায় যারা আছেন তাদের বেশি দাম দিয়ে সবজিসহ নিত্যপণ্য কিনতে হচ্ছে। ক্রেতার কষ্ট বাড়ছে। বেশি দাম দিয়েও ভাল পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ফকিরাপুল বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে এসেছেন পল্টনের বাসিন্দা রোবায়েত হোসেন। তিনি জানালেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেও বাজারগুলো থেকে উৎসবের রেশ কাটছে না। বেশিরভাগ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এখনও দোকান চালু করেনি। এতে সবজিসহ সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ কমে গেছে। তিনি বলেন, যদিও বাজারে ক্রেতা কম কিন্তু ঢাকায় যারা আছেন তাদের পণ্য পেতে সমস্যা হচ্ছে। আর যাওবা পাওয়া যাচ্ছে তা উচ্চমূল্য দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, সরবরাহ কম এবং দোকানগুলো বন্ধ থাকায় প্রতিকেজি ৪০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন ১৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। শুধু মরিচ কেন বাজারে অন্যান্য সবজির দামও চড়া। কোন সবজিই ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, রাজধানীর বাজারগুলোতে আগের মতো বেশি দামে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি এবং আটা বিক্রি হচ্ছে। আপাতত দাম কমার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। গরু এবং খাসির মাংস আগের মতো চড়া দামে বিক্রি হলেও কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৫-২০ টাকা কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকায়। ঈদের আগের দিন চাঁনরাতে এবার সবচেয়ে বেশি মুরগি বিক্রি হয়েছে বলে জানালেন বিক্রেতারা। কাওরানবাজারের মুরগি বিক্রেতা আলম জনকণ্ঠকে বলেন, মুরগির দাম আরও কমতে পারে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি সরবরাহ ভাল তবে ক্রেতা নেই। ক্রেতাশূন্য বাজারে দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক। তবে মুরগির দাম কমলেও মাছের দাম বেড়েছে। সব ধরনের মাছ বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। ঈদ উৎসবের পোলাও মাংস কয়েকদিন খাওয়ার পর এখন স্বাদ ও রুচির ভিন্নতা আনতে মাছের প্রতি ভোক্তার আগ্রহ বেড়েছে। তাই বাজারে গিয়ে সবাই মাছের খোঁজ করছেন। কিন্তু পছন্দসই মাছ মিলছে না। আরও যা মিলছে তা বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। কাওরানবাজারে ঈদের আগে পাবদা ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এখন সেই মাছ ৬৫০ টাকা কিনতে হচ্ছে। দাম বেড়ে মাঝারি আকারের ইলিশের জোড়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা। এছাড়া জাটকা কেজি ৪০০, রুই ২৫০-৪০০, বড় চিংড়ি ১০০০-১২০০, ছোট চিংড়ি ৬০০-৮০০, টেংরা ৫০০, মৃগেল ২৫০-৩০০ এবং শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা কেজি দরে। ওই বাজারের মাছের ক্রেতা জয়নাল আবেদিন জানান, ঈদের আগে থেকে মাছের বাজার চড়া। ঈদ পরবর্তী বাজারেও ক্রেতাকে বেশি দাম দিয়ে মাছ কিনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজারে মাছই তো নেই। এই বাজারে শতাধিক বিক্রেতা থাকলেও এখন কয়জন বিক্রি করছেন? ক্রেতা-বিক্রেতা কম থাকায় কমেছে সরবরাহ। এই সুযোগে বিক্রেতা দাম বাড়িয়ে ক্রেতার পকেট খালি করছেন। তবে মাছ বিক্রেতা তৈয়ব জানান, পাইকারি বাজারে মাছের দাম বেড়ে গেছে। বেশি দামে কেনা মাছ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাজার পুরোদমে চালু হলে মাছের দাম কমতে পারে।
×