ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার ॥ পরিবারের অভিযোগ হত্যা

প্রকাশিত: ২২:০৮, ৩০ জুন ২০১৭

গাজীপুরে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার ॥ পরিবারের অভিযোগ হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর শিল্পাঞ্চলের সারদাগঞ্জ এলাকায় স্বামীর বাড়ি হতে বৃহস্পতিবার রাতে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত ইয়াসমিন আক্তার (২২) জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের চর আশাপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে । নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী মাসুদ রানা তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তারকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। ওই ঘটনার পর থেকে স্বামী মাসুদ রানা পলাতক রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের ভাই মিজানুর রহামন জানান, সাত বছর অগে পারিবারিকভাবে গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর শিল্পাঞ্চলের ৪নং ওয়ার্ড এলাকার সারদাগঞ্জ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মাসুদ রানার সাথে বিয়ে হয়। এদের সংসারে ইমরান নামের ৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মাসুদ রানা মাদকাক্ত হয়ে পড়ে। মাদক সেবন করার জন্য প্রায়ই টাকার জন্য ইয়াসমিনকে মারধর ও চাপ সৃষ্টি করতো। এ নিয়ে তিন দফায় মাসুদকে কিছু টাকাও দেওয়া হয়। ঈদের দিন মাসুদ যৌতুকের টাকা হিসাবে দেড় লাখ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ দাবী করে। ইয়াসমিন আক্তার ঈদের দিনই স্বামী মাসুদকে জানিয়ে দেয় তার গরীব বাবার কাছ থেকে আর কোন টাকা এনে দিতে পারবে না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনমালিন্য আর ঝগড়া চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার মাসুদ রানা যৌতুকের টাকার জন্য ইয়াসমিন আক্তারকে বাবার বাড়ী কালিয়াকৈরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এ সময় ইয়াসমি আক্তার বাবার কাছে থেকে টাকা চাওয়া এমকি বাবার বাড়ী যাবে না বলে জানিয়ে দিলে মাসুদ রানা ক্ষিপ্ত হয়ে গলা টিপে নিজ ঘরের বিছানার উপর হত্যা করে। পরে স্ত্রীর ওউড়না দিয়ে কোন রকমে ঘরের একটি আড়ার সাথে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেয়। পরে ইয়াসমিন আক্তারের বড় ভাই মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে ফোন দিয়ে জানায় তার বোন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দ্রুত যেন তাকে দেখতে চলে আসে। খবর পেয়ে নিহত ইয়াসমিন আক্তারের আত্মীয় স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ইয়াসমিন আক্তার নিজ ঘরে ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে। এ সময় নিহত ইয়াসমিন আক্তার দুই পা মাটিতে ছুয়ে থাকতে দেখে নিহতের স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় স্বামী মাসুদ রানা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এসআই হারুণ অর রশিদ নিহতের লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। নিহতের বড় ভাই মিজানুর রহমান জানান, আমার ছোট বোনের কাছে ঈদের দিন দেড় লাখ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ দাবি করে মারধর করে বলে ফোনে আমাকে জানায়। আমরা বোনের জামাতাকে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না দেওয়াতে হত্যা করে লাশ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি হত্যাকারীকে গ্রেফতার বিচারের দাবী করছি। জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ীর ইনচার্জ এসআই হারুণ অর রশিদ জানান, নিহতের লাশ উদ্ধার করে শহীদ তাজ উদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।
×