ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গাজীপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ৩০ জুন ২০১৭

গাজীপুরে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ কাশিমপুর শিল্পাঞ্চলের সারদাগঞ্জের স্বামীর বাড়ি হতে বৃহস্পতিবার রাতে ইয়াসমিন আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইয়াসমিন কালিয়াকৈরের ঢালজোড়া ইউনিয়নের চর আশাপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার মেয়ে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্বামী মাসুদ রানা ইয়াসমিন আক্তারকে হত্যার পর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখে। ঘটনার পর থেকে স্বামী মাসুদ রানা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ, এলাকাবাসী ও নিহতের ভাই মিজানুর রহমান জানান, সাত বছর অগে পারিবারিকভাবে সারদাগঞ্জ গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মাসুদ রানার সঙ্গে ইয়াসমিনের বিয়ে হয়। এদের সংসারে ইমরান নামের ৪ বছরের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মাসুদ রানা মাদকাক্ত হয়ে পড়ে। মাদক সেবনের জন্য প্রায়ই টাকার জন্য ইয়াসমিনকে মারধর ও চাপ সৃষ্টি করত। এ নিয়ে তিন দফায় মাসুদকে কিছু টাকাও দেয়া হয়। ঈদের দিন মাসুদ যৌতুকের টাকা হিসাবে দেড় লাখ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ দাবি করে। ইয়াসমিন আক্তার ঈদের দিনই স্বামী মাসুদকে জানিয়ে দেয় তার গরিব বাবার কাছ থেকে আর কোন টাকা এনে দিতে পারবে না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য আর ঝগড়া চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবার মাসুদ রানা যৌতুকের টাকার জন্য ইয়াসমিন আক্তারকে বাবার বাড়ি কালিয়াকৈরে যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। এ সময় ইয়াসমিন আক্তার বাবার কাছ থেকে টাকা চাওয়া এমকি বাবার বাড়ি যাবে না বলে জানিয়ে দিলে মাসুদ রানা ক্ষিপ্ত হয়ে গলাটিপে নিজ ঘরের বিছানার ওপর হত্যা করে। পরে স্ত্রীর ওড়না দিয়ে কোন রকমে ঘরের একটি আড়ার সাথে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেয়। ইয়াসমিন আক্তারের বড় ভাই মিজানুর রহমানের মোবাইল ফোনে মাসুদ রানা জানায় তার বোন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দ্রুত যেন তাকে দেখতে আসে। খবর পেয়ে নিহত ইয়াসমিন আক্তারের আত্মীয়স্বজনরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ইয়াসমিন আক্তার নিজ ঘরে ওড়না দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে রয়েছে। দুই পা মাটিতে ছুঁয়ে থাকতে দেখে নিহতের স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এ সময় স্বামী মাসুদ রানা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হারুণ অর রশিদ লাশ উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহম্মদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। মিজানুর রহমান জানান, আমার ছোন বোনের কাছে ঈদের দিন দেড় লাখ টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ দাবি করে মারধর করে বলে ফোনে আমাকে জানায়। আমরা যৌতুকের টাকা না দেয়াতে হত্যা করে লাশ ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি হত্যাকারীর গ্রেফতার ও বিচার দাবি করছি। জয়দেবপুর থানার চক্রবর্তী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই হারুণ অর রশিদ জানান, লাশ উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহম্মদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বলা যাবে এটা হত্যা না আত্মহত্যা।
×