ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সফর ১৩-১৫ জুলাই

সিরিসেনার সফর ঘিরে ঢাকা-কলম্বো চুক্তির প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ৩০ জুন ২০১৭

সিরিসেনার সফর ঘিরে ঢাকা-কলম্বো চুক্তির প্রস্তুতি

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সফর সামনে রেখে ঢাকা-কলম্বোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য চুক্তির প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া নৌপথে যোগাযোগ বৃদ্ধিতে উভয়পক্ষ আলোচনা শুরু করেছে। আগামী ১৩-১৫ জুলাই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ঢাকা সফর করবেন। তবে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের আগে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ইসালা ভিরাকুনের ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। সূত্র জানায়, প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ঢাকায় আসছেন। গত বছরের ১৬ মার্চ ঢাকায় আসার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের। তবে নানা কারণে সেই সফর পিছিয়ে যায়। এবার প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরকালে দু’দেশের মধ্যে একাধিক চুক্তি সই হবে। তবে এই সফর সামনে রেখে দুই দেশের মধ্যে মুক্তবাণিজ্য করার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ এলডিসি দেশের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বিভিন্ন দেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা ভোগ করে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে এটি হবে বাংলাদেশের প্রথম দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চীন, ভারতসহ কয়েকটি দেশের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে আছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার বাণিজ্য কার্যক্রম সম্প্রসারণে এই চুক্তি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছে উভয়পক্ষ। ঢাকায় নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত ইয়াসোজা গুনাসেকারার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে নৌ যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে আগ্রহী শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের উচ্চমানের পণ্য ওষুধ এবং প্রসাধন সামগ্রীর ব্যাপক বাজার রয়েছে শ্রীলঙ্কায়। দুই দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে এগুলো রফতানিতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ সম্ভাবনার চেয়েও অনেক কম। দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার মধ্যে বাংলাদেশ থেকে রফতানি হয় বছরে ২৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে বছরে ৮৫ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। সে কারণে বাণিজ্য বাড়াতে দু’দেশের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রস্তুতি চলছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ হলো বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, কৃষি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রতিরক্ষা, স্বাস্থ্য, আকাশ ও সমুদ্রপথে কানেকটিভিটি এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন। শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে পর্যটন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যেই মিহিরলঙ্কা এয়ার দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এদিকে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সফর সামনে রেখে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ইসালা ভিরাকুনের ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এই সফর হতে পারে। সে সময় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের আসন্ন বাংলাদেশ সফর বিষয়ে আলোচনা হবে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠানেরও প্রস্তুতি চলছে। ওই বৈঠকে শ্রীলঙ্কার পক্ষে নেতৃত্ব দিতে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব ঢাকায় আসবেন। শ্রীলঙ্কা সঙ্গে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল, জাহাজ নির্মাণ, পর্যটন, মৎস্য আহরণ এবং অন্যান্য উৎপাদন খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত ও শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশের ওষুধের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশী পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে ‘সিঙ্গেল কান্ট্রি ফেয়ার’ আয়োজন নিয়েও উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে।
×