ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত গ্রন্থে শেখ হাসিনাকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৩০ জুন ২০১৭

যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত গ্রন্থে শেখ হাসিনাকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নারী রাজনীতিবিদদের নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত একটি বইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। রাজনীতিতে তার সাহস, ঝুঁকি, প্রজ্ঞা এবং অবদান নিয়ে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবনী। বিশ্বের আরও ছয় নারী রাষ্ট্রনায়কের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছবিও বইটির কভার পেজে স্থান পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে সেখানে লেখা হয়, ‘যেদিন আমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারব, সেদিন গর্বিত বোধ করব’। ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের দূতাবাস থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞতিতে এ খবর জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ওয়াশিংটনের ‘ওম্যানস ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ক্লাব’ এ গত বুধবার বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। ‘নারী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, নারী নেতৃত্ব এবং সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বইটির লেখকের নাম ‘রিচার্ড ও ব্রায়েন’। তিনি শিক্ষাবিদ এবং মানবাধিকার কর্মী। বইটিতে বর্তমান বিশ্বের ১৮ নারী নেতৃত্বকে তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে তিন পৃষ্ঠাজুড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং অবদানের কথা লেখা হয়েছে। লেখক বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রশংসা করতে গিয়ে বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আরও গণতান্ত্রিক এবং সেদেশে সহিংসতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। দেশটিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন তিনি। ও ব্রায়েন উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি এবং প্রথম রাষ্ট্রপতি। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছাড়া তাদের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলা হয়। তারা দু’বোন দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান। অনিচ্ছাকৃত দীর্ঘ প্রবাস জীবন শেষে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরেই শেখ হাসিনা নির্বাচনী জালিয়াতি এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তার দল আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশে ফেরার পর আন্দোলন-প্রতিবাদ গড়ে তোলার কারণে নানা অন্যায়-অত্যাচারের শিকার হন। এক পর্যায়ে তাকে গৃহবন্দীও করা হয়। কিন্তু এত কিছুর পরও শেখ হাসিনা বাংলাদেশের এতটাই প্রভাবশালী নেতা হয়ে ওঠেন যে, তার আন্দোলন-সংগ্রামের কারণেই ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতন হয়। এ বইয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। লেখক লিখেছেন, তাকে গুপ্তহত্যার চেষ্টা করা হয়, যাতে অনেক লোক নিহত হয় (আসলে সেদিন আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়)। এর পর ২০০৭ সালে শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও প্রায় এক বছর জেলে কাটিয়ে মুক্ত হবার পর নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হন আওয়ামী লীগ সভাপতি। শেখ হাসিনার তিনবারের প্রধানমন্ত্রীত্বের আমলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে, সহিংসতা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে বলে লেখক তার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। বইটিতে ’৭১ পরবর্তী এদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতা ছিল মন্তব্য করে লেখক বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে জীবন বাজি রেখে কাজ করছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। পার্বত্য শান্তিচুক্তি, স্থল মাইন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণসহ শেখ হাসিনার বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরা হয় বইটিতে। এছাড়া এ তিন পৃষ্ঠার জীবনীতে প্রধানমন্ত্রীর ‘মাদার তেরেসা’ এবং ‘মহাত্মা গান্ধি’ পুরস্কার পাওয়ার কথা তুলে ধরা হয়।
×