ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যুদ্ধাপরাধী বিচার

মির্জাপুরের মাহবুবের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২৮ আগস্ট

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৩০ জুন ২০১৭

মির্জাপুরের মাহবুবের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ২৮ আগস্ট

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহাসহ ৩৩ জনকে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুরের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ২৮ আগস্ট দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রসিকিউশনের তিন মাসের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল এদিন নির্ধারণ করেছেন। বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে দুই সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ বৃহস্পতিবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর আবুল কালাম ও প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন। প্রসিকিউটর আবুল কালাম জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা তিন মাসের সময় চেয়েছিলাম। আমাদের সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ২৮ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার দিন নির্ধারণ করেছেন। অন্যদিকে প্রসিকিউটর রিজিয়া সুলতানা বেগম চমন বলেন, আসামি মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যাসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এই তিন অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- মাহবুবুর রহমান একাত্তরের ৭ মে স্বাধীনতাবিরোধীদের নিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর গ্রামে যায়। সেখানে গিয়ে তারা রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) এবং তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহার খোঁজ করে। তাদের না পেয়ে তারা ৩৩ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। পরবর্তীতে একই তারিখে রাত ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আরপি সাহা ও ভবানী প্রসাদ সাহাসহ ৫ জনকে অপহরণ ও হত্যা করে। অন্যদিকে আসামিসহ রাজাকাররা ২৪ জন নিরীহ মানুষকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তার মধ্যে ২২ জনকে হত্যা করা হয়। এর আগে গত বছর গত ৭ সেপ্টেম্বর এ আসামির বিরুদ্ধে তলবী গ্রেফতারির আদেশ দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল। সেই সঙ্গে ৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলের কারাগার থেকে তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২৯ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় আসামি মাহবুবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে প্রসিকিউটর তলবী পরোয়ানা জারির (প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট) আবেদন জানান। আবেদনের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ার উল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৭ মে পাক হানাদার বাহিনী মির্জাপুরের সাধারণ মানুষের ওপর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ব্যাপক গণহত্যা চালায় এবং গ্রামবাসীর বাড়িঘর লুটপাট করে। এদিন রাতে আরপি সাহাকে ও নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী কমপ্লেক্স থেকে তার একমাত্র ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর আর তাদের কোন খবর পাওয়া যায়নি। ১৯৭১ সালের ৭ মে ছিল শুক্রবার। মির্জাপুরে সাপ্তাহিক হাটবার। এদিন জুমার নামাজের পর স্থানীয় দালাল মাওলানা ওয়াদুদের নির্দেশে ও তার দুই ছেলে মান্নান ও মাহবুবের নেতৃত্বে কিছু ধর্মান্ধ ব্যক্তি মির্জাপুর বাজারে ব্যাপক লুটপাট চালায়। একই সঙ্গে পাক হানাদার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে মির্জাপুরের সাহাপাড়ায় হামলা চালিয়ে নিরপরাধ গ্রামবাসীকে নির্মমভাবে হত্যা করে পাশের বংশাই নদীতে ভাসিয়ে দেয়।
×