ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সরিষাবাড়ীতে পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২৯ জুন ২০১৭

সরিষাবাড়ীতে পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর ॥ জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানা পুলিশের হেফাজতে বৃহস্পতিবার বিকেলে তিন বছরের সাজাপ্রাপ্ত জবান আলী নামের একজন আসামি মারা যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওনক জাহান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলী তার লাশ দেখতে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে যান। অপরদিকে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ জানিয়েছে আসামি জবান আলী স্ট্রোক করে মারা গেছেন। মৃত জবান আলীর স্বজনেরা জানান, সরিষাবাড়ী উপজেলার চর বাঙ্গালী গ্রামের সুমর আলী সুতারের পুত্র জবান আলী তরফদার (৫০) বৃহস্পতিবার আন্তঃনগর অগ্নিবীনা এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা যাওয়ার জন্য সপরিবারে সরিষাবাড়ী স্টেশনের প্লাটফর্মে অপেক্ষা করছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সরিষাবাড়ী থানার সহকারী উপরিদর্শক (এএসআই) শাহানুরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ট্রেনের জন্য অপেক্ষমান জবান আলী, তার স্ত্রী মালেকা, শিশু পুত্র আরিফুল (৯) ও কন্যা চায়না আক্তারকে (১১) গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় জবান আলী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সরিষাবাড়ী হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফয়সাল তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জবান আলীর স্ত্রী মালেকা, শিশু পুত্র আরিফুল, কন্যা চায়না আক্তারকে থানায় আটক রাখা হয়। পুলিশ জানায়, জবান আলী ভাটারা ইউনিয়নের পারপারা গ্রামের শাজাহান আলীর কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা দাদন নিয়েছিলেন। এ টাকার লেনদেনকে কেন্দ্র করে শাজাহান জবান আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। জবান আলী মামলার বিষয়ে না জানার কারণে বিজ্ঞ আদালত তার অনুপস্থিতিতে তাকে তিন বছরের কারাদন্ড দেয়। জবান আলীর বেয়াই মহাদান ইউনিয়নের খাগুরিয়া গ্রামের আব্দুল কাউয়ুম জানান, জবান আলী ঈদের পর দিন সপরিবারে তার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকতেন। ২০০৬ সালে দাদনে নেওয়া ৬০ হাজার টাকার বিষয়ে সমঝোতা হয় এবং মোটা টাকার মধ্যে অধিকাংশ টাকা পরিশোধ করে ঈদে বাকি ২০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। মামলার বিষয়টি গোপন থাকায় জবান আলী তা জানতেন না। বৃহস্পতিবার দুপুরে খাবার খেয়ে সপরিবারে ট্রেনের উদ্দেশে সরিষাবাড়ী স্টেশনে অপেক্ষা করছিলেন। সেখান থেকে পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই জবান আলী মারা যায়। মৃত জবান আলীর জামাতা খোরশেদ আলম বলেন, পুলিশ আমার শ্বশুড়কে ধইর্যান নিয়া মাইরা ফালাইছে। সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম খান বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসামি জবান আলীকে গ্রেপ্তারের সময় স্ট্রোক করলে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।
×