ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জঙ্গীদের হাতে অপহৃত রোহিঙ্গার লাশ ১২ দিন পর উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ২৯ জুন ২০১৭

জঙ্গীদের হাতে অপহৃত রোহিঙ্গার লাশ ১২ দিন পর উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ আরাকানে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গী সংগঠন আল এ্যাকিনের নামে চাঁদা না দেয়ায় অপহৃত দুই রোহিঙ্গা নেতার (আরএসও) মধ্যে নিখোঁজ আয়ুবের লাশও ১২ দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে উখিয়ার বালুখালী তেলিপাড়া খাল থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর আগে গত ১৮ জুন দুপুরে একই স্থান থেকে আরএসও ক্যাডার রোহিঙ্গা সেলিমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। জানা গেছে, মিয়ানমারে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গী সংগঠন আল এ্যাকিনের নামে চাঁদা আদায় নিয়ে উখিয়ার বালুখালী ও কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। চাঁদার জন্য গুটিকয়েক সন্ত্রাসী রোহিঙ্গার চাপের মুখে নিরীহ রোহিঙ্গারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল আবছার বালুখালী ক্যাম্পের ডাকু প্রকৃতির কয়েক রোহিঙ্গাকে দিয়ে আল এ্যাকিনের জন্য প্রতিটি রোহিঙ্গা কক্ষ থেকে দুই হাজার টাকা হারে চাঁদা আদায় করিয়ে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধার্যকৃত ওই টাকা দিতে কেউ অপারগ হলে তার ওপর নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। দুই হাজার টাকা থেকে অর্ধেক যাচ্ছে মেম্বারের পেটে, বাকি টাকা আল এ্যাকিনের কাছে মিয়ানমারে পৌঁছানো হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। বিষয়টি একাধিক রোহিঙ্গা স্বীকার করলেও চাঁদা আদায় সত্য নয় দাবি করে মেম্বার নূরুল আবছার জানান, এটা তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। সূত্র আরও জানায়, অন্তত ১১ জন প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা কিলার (আল এ্যাকিন ক্যাডার) বালুখালী ক্যাম্পে ছদ্মবেশে অবস্থান করছে বলে সূত্রটি দাবি করেছে। রাতে ক্যাম্প অভ্যন্তরে অস্ত্রের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের জঙ্গী মনোভাব পরিলক্ষিত হওয়ায় শুরু থেকে বালুখালী ক্যাম্পটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী। ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা জানায়, জঙ্গী সংগঠনকে চাঁদা দিতে কেউ বিরোধিতা করলে তাকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। চাঁদা আদায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় গত ১৩ জুন রাতে উখিয়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে সেলিম ও মোঃ আয়ুবকে (আয়ুব মাঝি) অপহরণ করা হয়। নিহত রোহিঙ্গা নেতা আয়ুব মাঝির স্ত্রী নুর আনকিছ জানায়, আল এ্যাকিন জঙ্গী সংগঠনের নেতা জাবের, আব্দুল হাকিম, ইউনুচ, নুর কামাল, নূরুল ইসলাম, শামশুল আলমসহ কয়েকজন সন্ত্রাসী অস্ত্র ঠেকিয়ে তার স্বামী আনরেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের যুগ্মসম্পাদক মোঃ আইয়ুব ও রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সি ব্লকের বাসিন্দা আলী আহমদের পুত্র সেলিমকে অপহরণ করে গভীর অরণ্যে নিয়ে যায়। বিষয়টি উখিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ তৎপরতা চালায়। তবে ১২দিনেও সন্ত্রাসীদের ধরতে বা অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অবশেষে আয়ুব ও সেলিমের লাশ পাওয়া যায়।
×