ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

১৩ দফা শর্তে কোন ছাড় নয় ॥ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৩:৩৪, ২৯ জুন ২০১৭

১৩ দফা শর্তে কোন ছাড় নয় ॥ সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন কাতার সঙ্কট নিরসনকল্পে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেয়ায় উপসাগরীয় তিনটি দেশের শীর্ষ কূটনীতিকগণ মঙ্গলবার ওয়াশিংটন গেছেন। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের কঠিন শর্তযুক্ত ১৩ দফা দাবি পূরণের জন্য ১০ দিনের নির্ধারিত সময়ের একসপ্তাহ পার হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গৃহীত হয়। যুক্তরাষ্ট্র পৌঁছার পর পরই কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল সানি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। এর আগে সঙ্কটের মধ্যস্থতাকারী দেশ কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল সাবার সঙ্গে রেক্স টিলারসন এক সাক্ষাতকারে মিলিত হন। কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল সাবা কাতার সঙ্কটের এক সম্মানজনক সমাধানে পৌঁছার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিব এন্টোনিও গুতেরেসের সঙ্গে নৈশভোজের আয়োজন করেছেন। কাতারের কাছে উত্থাপিত ১৩ দফা দাবিনামার কতগুলো শর্ত এতটাই অবমাননাকর যে, এগুলো মানলে কাতারকে আর স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ হিসেবে চেনা যাবে না। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে নামিয়ে আনা, কাতারে তুরস্কের সামরিক ঘাঁটি বন্ধ করে দেয়া, আল-জাজিরা টিভি চ্যানেলের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়া। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে তিন সপ্তাহ যাবত চলমান এই বিরোধ নিষ্পত্তিতে প্রাথমিকভাবে মার্কিন প্রশাসন নিজেদের সম্পৃক্ত করতে অনীহা জানায়। তারা যুক্তি প্রদর্শন করে যে, এটি আরব দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিরোধ। তারা নিজেরাই এই সমস্যার সমাধান করবে। যদিও এটি সবারই জানা যে, এই বিরোধের কলকাঠি নাড়িয়েছেন স্বয়ং ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরব সফরের সময় তার সবুজ সঙ্কেত পেয়েই সৌদি বাদশাহ সালমান কুয়েতের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপের কার্যকর ব্যবস্থা করেন। এখন সেই মার্কিন প্রশাসনই মধ্যস্থতা করার জন্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে দেন দরবার করছে। এদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থানরত সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল্ জুবেইরকে তাদের প্রস্তাবিত ১৩ দফা দাবির বিষয়ে নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানালে তিনি তা মানতে দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রদত্ত ১৩ দফা দাবির বিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুখে যাই বলুন না কেন যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই সব সমস্যার সমাধান এবং তাই আরব ও উপসাগরীয় দেশগুলো ওয়াশিংটনে গিয়ে সঙ্কট সমাধানে দেন দরবার করছে। তেল সমৃদ্ধ আরব দেশগুলোর কাছে এতদিন ধরে অর্জিত বিপুল পরিমাণ পেট্রো ডলারের যে সঞ্চয় আছে তা প্রকাশ্য বা গোপনে। সমরাস্ত্র ক্রয় বা অন্য কোনভাবে যদি যুক্তরাষ্ট্রের তহবিলে জমা না হয় ,তবে আরব দেশগুলো নেপথ্য কারণে একের বিরুদ্ধে অপরে ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধে লিপ্ত হতেই থাকবে। -এএফপি
×