ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঈদে দেড় লাখ মানুষ ভারতে যায় কেনাকাটা করতে

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ২৫ জুন ২০১৭

ঈদে দেড় লাখ মানুষ ভারতে যায় কেনাকাটা করতে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঈদ-উল-ফিতরে শপিং করতে বাংলাদেশ থেকে প্রায় দেড়লাখ মানুষ যান ভারতে, বিশেষ করে কলকাতায়। ব্যবসায়ী নেতাদের হিসেব মতে, এজন্য তারা প্রায় খরচ করেন ১২শ’ কোটি টাকারও বেশি। বিষয়টি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। রেহনুমা রোজ একটি বেসরকারী ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি কলকাতায় ঈদের শপিং করে দেশে ফিরেছেন। জার্মান সংবাদ মাধ্যম ডয়চে ভেলেকে রেহনুমা বলেন, শুধু আমি না। আমার মতো আরও অনেকেই ঈদের শপিং করেন ভারতে। কলকাতার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের ক্রেতাদের টার্গেট করে ঈদের বাজারে নতুন ডিজাইনের অনেক পোশাক এবং পণ্যও আনেন। বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে গিয়ে শপিং করলে লাভ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে রেহনুমা বলেন, তুলনামূলকভাবে কলকাতায় পোশাকসহ সব পণ্যের দাম কম। মান এবং ডিজাইন ভালো। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশেও ভাল ডিজাইনের পোশাক পাওয়া যায়। তবে ওদের ওখানে আগে আসে। ওদের ডিজাইন দেখেই আবার এখানে করা হয়। কলকাতায় ঈদের সময় বাংলাদেশী ক্রেতাদের টার্গেট করে নতুন ডিজাইনের পোশাক, জুতা, গয়না আসে বাজারে। রেহনুমা জানান, ঈদের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রচুর ক্রেতা তো যানই, এছাড়া সারাবছরই বাংলাদেশের ক্রেতা থাকে ভারতের বাজারে। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোঃ হেলাল উদ্দিন এ বিষয়ে বলেন, প্রতি রোজার ঈদে বাংলাদেশের লোকজন কমবেশি ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার শপিং করেন ভারতে। দেড়লাখের মতো লোক ভারতে যান ঈদ শপিং করতে। তারা গড়ে ১ হাজার ডলারের কম খরচ করেন না। সেই হিসেবে এটা হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। দেশের ব্যবস-বাণিজ্যের জন্য ক্ষতি। দুই ঈদের হিসাব করলে অংকটি আরো বড়। তিনি আরও বলেন, ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত বৈধভাবে নেয়া যায়। তাই এই টাকা বৈধভাবেই যায়। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। দেশীয় পণ্যের মান বাড়াতে হবে এবং প্রতিযোগিতামূলক সহনীয় দামে পণ্য বিক্রি করতে হবে। তা না হলে ভারতমুখিতা কমানো যাবে না। ঈদকে সামনে রেখে ভারতীয় হাই-কমিশন গতবছরে অতিরিক্ত ১ লাখ ভিসা দিয়েছিল। এবার এই ভিসার পরিমাণ এরই মধ্যে এক লাখ ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা যায়। বাংলাদেশের মধ্যবিত্তদের একাংশ ঈদের শপিং করতে বিমানে যান। তবে বড় অংশ ভারতে যান সড়ক পথে। বাংলাদেশীদের কারণে কলকাতার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা মীর্জা গালিব স্ট্রিট, মল্লিকবাজার, বেলগাছিয়া, নিউমার্কেট, চিৎপুর, টালিগঞ্জ, এন্টালি, আনোয়ার শাহ রোড, রাজাবাজার, পার্ক সার্কাস, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, পার্ক স্ট্রিট, চিৎপুরের জাকারিয়া স্ট্রিট, ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদ চত্বর এখন জমজমাট। এসব এলাকায় ইতোমধ্যে বসে গেছে ঈদের জমজমাট বাজার।
×