প্লেনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ধারণাটি নতুন। স্যাটেলাইট সার্ভিস কোম্পানিগুলোর জন্য এটি নতুন বাজার। তবে খুবই ধীর গতির কারণে এখনও এর বাজার রমরমা হয়ে ওঠেনি। এক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এএফপি।
কয়েকটি নির্দিষ্ট বিমানবন্দর থেকে প্লেনে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট বহনে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞা তাদের এই উদ্যোগ থামাতে পারবে না। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও বিশ্লেষকরা এ উপলক্ষে প্যারিসে আলোচনায় বসেছেন। ফ্রেঞ্চ ব্লু এয়ারলাইন্সের প্রধান নির্বাহী মার্ক রোচেট বলেন, ‘এটা নিশ্চিতভাবেই অপ্রত্যাখ্যানযোগ্য একটি প্রবণতা। সঠিক সময়েই এই বিষয়টি নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে।’ প্রযুুুুক্তির দ্রুতই উন্নতি হচ্ছে কিন্তু এর গায়ে উচ্চ মূল্যের ট্যাগ সেটে দেয়া হচ্ছে। ইউরোকনসাল্ট ফার্মের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২১ সাল নাগাদ ১৭ হাজারের বেশি যাত্রীবাহী বিমানে অথবা প্রায় অর্ধেক বৈশ্বিক বাণিজ্যিক বিমানে ইন্টারনেট সংযোগের যন্ত্র থাকবে। এটা ২০১৬ সালের ৬ হাজার ৫শ’ বিমানের তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি। নতুন প্রজন্মের এ স্যাটেলাইট উৎপাদনের ফলে বিমানে ছোট এবং হালকা এ্যান্টেনা ব্যবহার করা হবে। এটা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভূমিতেও কাভারেজ সিস্টেম থাকবে। ব্যবহারকারীরা বাড়িতে যে রকম গতিসম্পন্ন ডাটা ট্রান্সমিশন সিস্টেম উপভোগ করে এখানেও সেরকম সুবিধা থাকবে। ধীর গতির ইন্টারনেট সেবার মুখোমুখি হতে হবে না। পূর্বের সিস্টেম থেকে এটা অনেক এগিয়ে। ৫ বছর আগে এ ধরনের সুবিধা প্রথম চালু করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকরীদের শুধু ইমেইল ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। প্লেনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভূমি এ্যান্টেনা উন্নয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র পথিকৃতের ভূমিকা পালন করে। দেশটিতে ৪ হাজারের মতো প্লেনে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে। যেখানে ইউরোপে মাত্র কয়েকশ প্লেনে এ সুবিধা রয়েছে। ২০১৬ সালের নতুন স্যাটেলাইট প্লেনে ভিডিও এবং টেলিভিশন দেখাতে সমর্থ হয়েছে। গেমস এবং সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহার দ্রুতই সংযোগ করা হবে। ইউরোকন্সাল্টের মতে, স্যাটেলাইটে ভিডিও সমর্থন বৃহৎ পরিসরে একটি বিশাল পরিবর্তন বলে বিবেচিত হবে। এ্যারোস্পেস ফার্ম থেলসের বিনোদন বিভাগের সেলস ডিরেক্টর উইলিয়াম হুতো-মরচান্ডের মতে, প্লেনের যাত্রীদের ক্ষেত্রে একটি প্রজন্মোত্তর পরিবর্তন প্রক্রিয়াধীন। আগে প্লেনের যাত্রীরা ইন্টারনেটবিহীন ফ্লাইটকেই তারিফ করলেও নতুন প্রজন্ম সামাজিক মাধ্যম ও অনলাইনে প্রবেশের বিষয়টি প্রত্যাহারে একদমই নারাজ। ইউরোকন্সাল্টের এক হিসাবে দেখা গেছে যে, প্লেনে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার ফলে ২০১৬ সালে সংযোগকারীদের আয় হয়েছে ১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৬ সালে এর পরিমাণ বেড়ে ৬ দশমিক ৫ বিলিয়নে দাঁড়াতে পারে। এটা বিমান কোম্পানিগুলোকে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে ওঠতে সাহায্য করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।