ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে জনস্রোত

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ২৪ জুন ২০১৭

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে জনস্রোত

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ২৩ জুন ॥ শুক্রবার থেকে সরকারী ঈদের ছুটি শুরু হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। এ জন্য প্রচ- ভিড়ের আশঙ্কায় ঝামেলা এড়াতে বেশিরভাগ পরিবারের নারী-পুরুষ-শিশু গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই কাঁঠালবাড়ি ও কাওড়াকান্দি ঘাটে ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় বেড়েছে। রাজধানী ঢাকার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম নৌপথ শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ঘাট। শুক্রবার সকাল থেকে ঘরে ফেরা যাত্রীদের চাপ পুরোদমে বেড়ে গেছে বলে জানান ঘাট কর্তৃপক্ষ। হাজার হাজার যাত্রী লঞ্চ-স্পীডবোটে শিমুলিয়া থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নামছে। যাত্রীদের ভিড়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে এই নৌুট। এদিকে ভিড় এড়াতে কাওড়াকান্দি-শিমুলিয়া কাটা লাইনে লঞ্চ সার্ভিস চালু করা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ঘাট সূত্রে জানা গেছে, কাওড়াকান্দি থেকে কাঁঠালবাড়িতে ঘাট স্থানান্তরের পর এই প্রথম ঈদের চাপ পড়েছে কাঁঠালবাড়ি ঘাট দিয়ে। যাত্রীদের দুর্ভোগ এড়াতে ঘাট এলাকায় নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। প্রস্তুত রয়েছে রো রোসহ ১৩ ফেরি, ৮৬ লঞ্চ ও দুই শতাধিক স্পীডবোট। মহাসড়ক থেকে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পৌঁছাতে এবং ঘাট থেকে বের হতে আলাদা দুটি সড়ক রয়েছে। এক সড়ক দিয়ে গাড়ি ঘাটে প্রবেশ করবে অন্য সড়ক দিয়ে ঘাট থেকে বের হয়ে যাবে। এই সুব্যবস্থার কারণে ঘাট কর্তৃপক্ষ যানজটের আশঙ্কা না করলেও ছোট ছোট গাড়ি প্রবেশের ফলে যানজট সৃষ্টি হতে পারে বলে যাত্রীরা ধারণা করছে। তবে মূল সড়ক থেকে ঘাটে প্রবেশের সড়কটির প্রশস্ততা তুলনামূলকভাবে কম। ঘাটে প্রবেশের পথে বাজারের মধ্য দিয়ে আসতে হয় বলে এই সড়কে যানজট লেগে থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিএ-এর কাঁঠালবাড়ি ঘাটের টার্মিনাল পরিদর্শক এবিএস মাহমুদ হোসেন বলেন, ঈদকে সামনে রেখে এই নৌরুটের লঞ্চগুলো চলাচল শুরু করেছে। যেহেতু বর্ষা মৌসুম, তাই সতর্কতার সঙ্গেই লঞ্চ চলাচল করছে। কোন লঞ্চে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কোন সুযোগ নেই। ময়মনসিংহে ট্রেনে-বাসে তিল ধারণের ঠাঁই নেই স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ থেকে জানান, রাজধানী ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের দিকে ছেড়ে আসা ট্রেন ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসে তিল ধারণের জায়গা নেই। ট্রেনের ছাদে, ইঞ্জিনে, বগির ভেতরে-বাইরে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থার মধ্যে যাত্রীরা দুর্ভোগ নিয়ে ঈদে বাড়ি ফিরছেন শুক্রবার। একই অবস্থা দেখা গেছে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ময়মনসিংহের শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও জামালপুরসহ সব রুটের বাসে। যাত্রী বেশি থাকায় ট্রেন ও বাস তিন থেকে চারগুণ বেশি যাত্রী পরিবহন করছে। শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় ঈদের জন্য ঘরমুখো মানুষ এক সঙ্গে রাস্তায় নেমে পড়ায় সব রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ড ছিল লোকে লোকারণ্য। ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করায় যাত্রীদের তিন ঘণ্টা রাস্তা পাড়ি দিতে সময় লাগছে সাত থেকে আট ঘণ্টা। ফলে রাস্তা ভাল থাকার পরও ধীরগতির কারণে যাত্রী দুর্ভোগের সীমা ছিল না। এসময় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হয়েছে নারী ও শিশু। রেলস্টেশনগুলোতে দেখা গেছে, নির্ধারিত দরজা দিয়ে উঠতে না পেরে অনেকে জানালা দিয়ে ভেতরে ঢুকেছে কিংবা ছাদে ও ইঞ্জিনে চেপে বসেছে। আবার অনেকে ভিড়ের কারণে টিকেট কেটেও ট্রেনে উঠতে পারেনি। তবে রেলস্টেশন ও বাসস্ট্যান্ডগুলোতে পুলিশের নজরদারি ছিল এবার চোখে পড়ার মতো। কুমিল্লায় ওজন স্কেল বিষফোঁড়া নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, থেকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে ফোরলেনের দাউদকান্দির ১০ কিলোমিটার এলাকায় শুক্রবার দিনভর থেমে থেমে যানজটে যাত্রীদের নাকাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। ঈদকে সামনে রেখে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ, পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের ওজন নিয়ন্ত্রণ স্কেলে চাঁদা আদায়ে দর কষাকষিতে সময়ক্ষেপণ এবং টোল আদায়ে বিলম্বের কারণে এ যানজট সৃষ্টি হচ্ছে বলে যানবাহনের চালক ও যাত্রীসাধারণের অভিযোগ। এ মহাসড়ক ফোর লেন হলেও ওজন স্কেলে পণ্যবাহী পরিবহনে চাঁদাবাজির কারণে যাত্রীরা ফোর লেনের সুবিধা পাচ্ছে না এবং এটাকে বিষফোঁড়া হিসেবে অভিহিত করেছেন ভুক্তভোগীরা।
×