ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরবঙ্গগামী মহাসড়কে চিরচেনা যানজট নেই

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২৪ জুন ২০১৭

উত্তরবঙ্গগামী মহাসড়কে চিরচেনা যানজট নেই

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ এবার ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সড়ক-মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বেশ বৃদ্ধি পেলেও শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গাজীপুরের ওপর দিয়ে যাওয়া দেশের উত্তর, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলগামী মহাসড়কে চিরচেনা যানজটের দৃশ্য এখনও নেই। তবে মাঝেমধ্যেই ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ধীরগতির গাড়ির দীর্ঘ সারি হলেও ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-কাপাসিয়া-কিশোরগঞ্জ, রংপুর- ভোগড়া চৌরাস্তা-সিলেট মহাসড়কসহ জেলার প্রায় সবকটি সড়কে প্রায় স্বাভাবিক গতিতেই শুক্রবার গাড়ি চলছে। তবে যানবাহনের তুলনায় ঘরমুখো মানুষের ভিড় বেশি হওয়ায় এবং মহাসড়কের ওপর কয়েকটি মোড় ও গাড়ির অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে মহাসড়কগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে কিছুটা ধীরগতিতে গাড়ি চলেছে। থেমে থেমে যানজটও দেখা দিয়েছে। এদিকে ঈদের ছুটিতে ঘরমুখো যাত্রীর স্রোত বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকেই সড়কগুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীরা পড়েছেন পরিবহন সঙ্কটে। তবুও অন্যবারের তুলনায় ভাল বলে সন্তুষ্টির কথা জানান যাত্রীরা। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে লাখ লাখ ঘরমুখো মানুষ পথে কোন ধরনের যানজট ও ভোগান্তি ছাড়াই স্বাচ্ছন্দ্যে ও স্বল্প সময়ে বাড়ি ফিরছেন। আর তাই স্বস্তি দেখা গেছে যাত্রীদের চোখমুখে। জানা গেছে, এবারের ঈদে টানা নয়দিন ছুটি হওয়ায় গত বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে ঈদযাত্রা। জুমাতুল বিদা ও শবে কদরের কারণে বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রীদের ভিড় খুব বেশি না থাকলেও শুক্রবার সকাল হতে যাত্রীদের চাপ অনেক বেশি দেখা গেছে। ঘরমুখো যাত্রীর স্রোত বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুরের চন্দ্রা, চান্দনা চৌরাস্তা, রাজেন্দ্রপুর, মাওনা চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন স্থানে যাত্রীরা পড়েন পরিবহন সঙ্কটে। এ কারণে অনেকেই বাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানের ছাদে করে এবং হালকা যানবাহনে চড়ে যাচ্ছেন দূরদূরান্তে। এতে বাড়তি ভাড়াও গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। তবে শুক্রবার সকাল হতে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ ও ঘরমুখো মানুষের স্রোত বেড়ে যাওয়ায় এবং যাত্রী ওঠানামা করানোর কারণে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কয়েকটি পয়েন্টে যানবাহন আটকা পড়ে প্রায়শই যানজটের সৃষ্টি হয়। এ কারণে মহাসড়কে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করতে পারছে না এবং ধীরগতিতে চলতে গিয়ে প্রায়শই গাড়ির দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে যাত্রীদের কিছুটা বিড়ম্বনা পোহাতে হয়েছে। এদিকে, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণে লাইফ লাইন হিসেবে পরিচিত জাতীয় মহাসড়ক ঢাকা-ময়মনসিংহসহ ঢাকা-কাপাসিয়া-কিশোরগঞ্জ, রংপুর- ভোগড়া চৌরাস্তা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে চারলেনে উন্নীতকরণ কাজের কারণে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। মহাসড়কের বিভিন্ন চৌরাস্তা ও ত্রিমোড় এলাকাগুলোতে রেশনিং পদ্ধতিতে (একপাশ বন্ধ করে অপর পাশ সচল রাখা) গাড়ি চালানোর কারণে মোড় এলাকায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব কারণে ১৫ মিনিটের পথ ৭-৮ ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয়েছে যাত্রীদের। ঈদের প্রাক্কালে এ পরিস্থিতিতে গত ২০ ও ২১ জুন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সংস্কার কাজ পরিদর্শনে যাত্রীদের বিড়ম্বনা দেখতে পান। মানুষের ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক, নিরাপদ ও হয়রানিমুক্ত করতে এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে তিনি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চলমান চারলেনের কাজ সাময়িকভাবে এখন বন্ধ রাখাসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন এবং ঘোষণা দেন। ঈদকে সামনে রেখে মন্ত্রীর ওই সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রাস্তায় নামে। তাদের কর্মতৎপরতার কারণে সে দুর্ভোগ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।
×