ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়ে যাচ্ছেন প্রণব মুখার্জি

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ২৩ জুন ২০১৭

রাষ্ট্রপতি ভবন ছেড়ে যাচ্ছেন প্রণব মুখার্জি

অনলাইন ডেস্ক ॥ ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ২০১২ সালের ২৫ জুলাই জীবনের সেরা সম্মানটা পেয়েছিলেন। ভারতের ত্রয়োদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে পা রেখেছিলেন রাইসিনা হিলের রাষ্ট্রপতি ভবনে। সঙ্গে এসেছিলেন ভারতের ফার্স্ট লেডি প্রণব-জায়া শুভ্রা মুখোপাধ্যায়। আগামী ২৪ জুলাই, ২০১৭। শেষ হবে রাষ্ট্রপতি পদে থাকার মেয়াদ। নিয়ম মেনে পরবর্তী রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব অর্পণ করে বিদায় জানাতে হবে রাষ্ট্রপতি ভবনকে। কিন্তু এবার যেতে হবে একা। দীর্ঘ দিনের জীবনসঙ্গী শুভ্রা মুখোপাধ্যায় আর নেই। মাঝে আরো একটা অভিশপ্ত তারিখ রয়েছে। ১৮ অগস্ট, ২০১৫। সেদিনই চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন চরম বার্তাটি। জুলাই মাসটা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জীবনে বড় দাগ কেটে রাখবে। একটা জুলাই মাসে যশোরের মেয়ে শুভ্রাকে নিজের জীবনে নিয়ে এসেছিলেন স্ত্রী হিসেবে। আর একটা জুলাইয়ে নিয়ে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি ভবনে ফার্স্ট লেডি সম্মান দিয়ে। ১৯৫৭ সালের ১৩ জুলাই বীরভূমের মিরাটি গ্রামের প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিবাহ হয়েছিল যশোর জেলার (বর্তমান বাংলাদেশের নড়াইল জেলা) ১৭ বছরের শুভ্রার সঙ্গে। অনেক রাজনৈতিক উত্থানপতন গিয়েছে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জীবনে। যোজনা কমিশনের চেয়ারম্যান থেকে অর্থমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অনেক পদ সামলেছেন তিনি। অন্যদিকে, নয়াদিল্লির ১৩ নম্বর তালকোটরা রোডের কর্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায় সামলেছেন সংসার। বড় করেছেন তিন সন্তানকে। সেই সঙ্গে চলেছে সংস্কৃতি চর্চা। রবীন্দ্র সঙ্গীত আর চিত্রশিল্পী হিসেবে তাঁরও কম খ্যাতি ছিল না। গড়েছিলেন রবীন্দ্রসঙ্গীত ট্রুপ ‘গীতাঞ্জলী। ’ দুর্গাপুজায় নিয়ম করে প্রণববাবুর চণ্ডীপাঠের কথা সবাই জানেন। কিন্তু তালকোটরার বাড়িতে বই, ছবি, হারমোনিয়াম, পিয়ানো, তবলা, তানপুরা, ইজেল, পেন্টিং ব্রাশ, ক্যানভাস সব ছিল তাঁর সঙ্গী। রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে এতটা করতে না হলেও ঘনিষ্ঠরা জানেন সব কিছুতেই নজর ছিল তাঁর। রাষ্ট্রপতি ভবনেও নিয়ে গিয়েছিলেন তানপুরা, হারমনিয়াম, ছবি আঁকার সরঞ্জাম। সে সবের মধ্যেই প্রোটোকল মেনে বিদেশ সফর সবই করতে হয়েছে। স্বামীকে সঙ্গে দিয়েছেন। ভারতের প্রথম মহিলা নাগরিক হিসেবে ঘুরে এসেছেন বাংলাদেশে ছেলেবেলার গ্রাম থেকে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় অবসর জীবনে পাবেন না জীবনের সব থেকে বড় সঙ্গীকে। সেই আক্ষেপ তো থেকেই যাবে। নিজের সংসার থেকে নিয়ে এসেছিলেন পাঁচ বছর সময়কালে জীবনের এই শ্রেষ্ঠ সফরে। কিন্তু ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারলেন না। মাঝপথেই যে থমকে গিয়েছে সহযাত্রা। সূত্র: এবেলা।
×