ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

একই বিন্দুতে মেসি ও রোনাল্ডো

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৩ জুন ২০১৭

একই বিন্দুতে মেসি ও রোনাল্ডো

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সময়ের কি অদ্ভুত খেয়াল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো ও লিওনেল মেসি প্রশ্নাতীতভাবে সময়ের সেরা দুই ফুটবলার। এ দু’জন মিলে গত নয় বছরের ফিফা সেরার ট্রফি ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। দু’জনই নিজ নিজ ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনার প্রাণভোমরা। তাদের ছাড়া ক্লাবের অস্তিত্বই ভাবা যায় না। অথচ সেই মেসি ও রোনাল্ডোই কিনা এখন বার্সা ও রিয়ালের বোঝা। সময়ের বিবর্তনে দু’জনই ক্লাব ছাড়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। দু’জনই ফেঁসে গেছেন কর ফাঁকির মামলায়। মেসির বিষয়টি গত কয়েক বছর ধরেই। যে কারণে বার্সিলোনা তার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন পর্যন্ত করেনি। আর সদ্য ঝামেলায় জড়িয়েছেন রোনাল্ডো। সময়ের স্রোতধারায় তাই রোনাল্ডো ও মেসি এখন একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছেন। এ দু’জনের শত্রু ভাবাপন্ন মনোভাব আছে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়। তবে বেশিরভাগই যে মিডিয়ার সৃষ্টি সেটাও বোঝা যায়। যে কারণেই হোক। একজন উত্তর মেরু তো আরেকজন দক্ষিণ মেরুতে থাকেন। তবে একটা জায়গায় একবিন্দুতে মিলে গেছেন মেসি ও রোনাল্ডো। তাহলো কর ফাঁকি বিতর্কের পর দু’জনই স্পেন ছাড়ার কথা চিন্তা-ভাবনা করেছেন ও করছেন। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের বড় খবর মাদ্রিদ ছাড়তে চান পর্তুগাল অধিনায়ক। স্প্যানিশ কর্তৃপক্ষের কর ফাঁকির অভিযোগে ক্ষুব্ধ তিনি, ক্লাবের প্রতিও বিরক্ত। তাতেই চরম সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ভাবছেন ৩২ বছর বয়সী তারকা। এটা এখন ওপেন সিক্রেট। বিষয়টা খোলাসা হওয়ার পর লুইস সুয়ারেজের মাধ্যমে আরেকটা সত্য সামনে চলে এসেছে। জানা গেছে, গত বছর কর ফাঁকির অভিযোগে মেসির ললাটে শাস্তি লেখা হলে প্রিয় বার্সিলোনাকে বিদায় বলতে চেয়েছিলেন ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকর। আর পাড়ি জমাতে চেয়েছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে। গত বছর কোপা আমেরিকার শতবর্ষী আসরে চিলির কাছে ফাইনাল হারের পর আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলেছিলেন হতাশ ও বিধ্বস্ত মেসি। ওই ঘটনার দশদিন পর মেসিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন স্পেনের আদালত। এই ঘটনায় বার্সা ছেড়ে ম্যানসিটিতে নাম লেখানোর চিন্তা করেছিলেন এমএলটেন। আর নিজের সিদ্ধান্তের কথা ক্লাবকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু বার্সা তাদের সোনার ডিম পাড়া হাঁসকে প্রাথমিকভাবে বিকিয়ে দিতে রাজি হয়নি। তবে হাল ছাড়েননি মেসি। তার দিক থেকে চাপ দেন। শেষ পর্যন্ত ওই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেই ২৫০ মিলিয়ন ইউরোতে আর্জেন্টাইন তারকাকে ছাড়তে রাজি হয়। তবে বিশাল সেই ফিরিস্তি মেটাতে পারেনি সিটিজেনরা, ১৫০ মিলিয়নে গিয়ে আটকা পড়ে তারা। হতাশ মেসির সঙ্গে রফাদফা করতে সে সময় নিউইয়র্কের মিয়ামিতে উড়ে গিয়েছিলেন বার্সা সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্টোমেউ। কিন্তু সফল হতে পারেননি এই কাতালান। একরাশ নিরাশা সঙ্গী হয় তার। এরপর চিত্রপটে হাজির হন সুয়ারেজ। মূলত উরুগুয়ান তারকার মর্মস্পর্শী বাণীতেই ন্যুক্যাম্পে থেকে যান মেসি। এদিকে স্পেনের সরকারী কৌঁসুলিদের আনা কর ফাঁকির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমপরিমাণ অর্থ দিতে রোনাল্ডো রাজি হয়েছেন বলে জানা গেছে। অর্থাৎ কর কর্তৃপক্ষকে এক কোটি ৪৭ লাখ ইউরো দিতে প্রস্তুত পর্তুগীজ তারকা। সি আর সেভেনের ক্লাব ছাড়ার গুঞ্জনের মধ্যে আরেকটি বড় খবর চাউর হয়েছে। রোনাল্ডোরই স্বদেশী, সাবেক বার্সা ও রিয়াল তারকা লুইস ফিগো জানিয়েছেন, রোনাল্ডো চলে গেলেও রিয়ালের খুব একটা ক্ষতি হবে না। অবশ্য ২০১৭ ব্যালন ডি’অরের হট ফেবারিট রোনাল্ডো ক্লাব ছাড়বে বলে বিশ্বাস করেন না ফিগো। ছাড়লেও রিয়ালের বেকায়দায় পড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ফিগো বলেন, আমি মনে করি কেউই অপরিহার্য নয় রোনাল্ডোও না। ক্লাব কারও ওপর নির্ভর করতে পারে না। এই ক্লাবের ইতিহাস সবার ওপরে, এমনকি সভাপতি বা যে কেউ হোক। তার ক্লাব ছাড়ার জন্য অনেক কিছুই হতে পারে। এটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যদি কেউ আসলেই কিছু ঘটাতে চায় এর শেষ হবে কিন্তু আমি সম্ভাবনা দেখছি না।
×