ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী

বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার চেয়ে দিনে ৬ হাজার মে.ও. বেশি

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২৩ জুন ২০১৭

বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার চেয়ে দিনে ৬ হাজার মে.ও. বেশি

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, বর্তমানে দৈনিক সাড়ে ৮ হাজার থেকে সাড়ে ৯ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াটে। এ ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তরপর্বে সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, বর্তমানে বিদ্যুতের বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৪ লাখ ১ হাজার কিলোমিটার, সঞ্চালনের লাইনের পরিমাণ ১০ হাজার ৪৩৬ সার্কিট কিলোমিটার এবং গ্রিড উপকেন্দ্রের ক্ষমতা ২৮ হাজার ৫৬৯ এমভিএ। ২০২১ সালে বিদ্যুতের বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিতরণ লাইনের পরিমাণ ৪ লাখ ৭৮ হাজার কিলোমিটার এবং সঞ্চালন লাইনের পরিমাণ ২০ হাজার ৫৮১ সার্কিট কিলোমিটারে উন্নীত হবে। একই প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মধ্যে আবাসিক খাতে শতকরা ৫০ দশমিক ৮৯ ভাগ, কৃষি খাতে শতকরা ৩ দশমিক ৬১ ভাগ, শিল্প খাতে শতকরা ৩৪ দশমিক ২৮ ভাগ, বাণিজ্যিক খাতে শতকরা ৯ দশমিক ৩৪ ভাগ এবং অন্যান্য খাতে শতকরা ১ দশমিক ৮৮ ভাগ বিদ্যুত ব্যবহার হয়েছে। প্রতি বছর শতকরা প্রায় ৮ থেকে ১০ ভাগ বিদ্যুত চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য বেগম পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সবার জন্য বিদ্যুত সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার উৎপাদন ক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াট উন্নীতকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)। গত ৭ জুন ২০১৭ তারিখে দেশে সর্বাধিক বিদ্যুত উৎপাদন ছিল ৯ হাজার ৪৭৯ মেগাওয়াট। রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করতে ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যমান সকল মিটার প্রি-পেইড মিটার দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে বলে তিনি জানান। আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, উৎপাদন ব্যয় ও পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির ফলে বিদ্যুতের বিদ্যমান দাম বৃদ্ধি তথা মূল্য সমন্বয় করা একটি চলমান প্রক্রিয়া। প্রত্যেক দেশেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হয়ে থাকে। তিনি জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিদ্যুত বিল আদায়ের হার ৯৮ দশমিক ৮৫ ভাগ হতে ১৩ দশমিক ১০ ভাগে হ্রাস পেয়েছে। যা বিদ্যুত বিভাগের অনিয়ম-দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা দূর করার ফলে সম্ভব হয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যমান সকল মিটার প্রি-পেইড মিটার দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হবে। এতে রাজস্ব আদায় শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি সরকারী দলের সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বর্তমান সরকারের আমলে গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের ফলে দেশে প্রকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ দৈনিক প্রায় এক হাজার ১৫ মিলিয়ন ঘনফুটে বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের ফলে গ্যাসের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি সত্ত্বেও দেশে গ্যাস সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। সরকারী দলের সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ জানান, দেশে সর্বমোট ২৬টি গ্যাস ক্ষেত্রের মধ্যে স্বাধীনতার পর হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত আবিষ্কৃত গ্যাস ক্ষেত্রের সংখ্যা ১৮টি। নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কারের লক্ষ্যে বাপেক্স ভিশন-২০২১ এর আওতায় বাপেক্স বেশকিছু স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০১৬-১৭ হতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের মধ্যে সর্বমোট ৫৩টি অনুসন্ধান কূপ খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
×