ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে এবার চালের পরিবর্তে মিলছে না গমও

প্রকাশিত: ০২:৫২, ২২ জুন ২০১৭

শেরপুরে এবার চালের পরিবর্তে মিলছে না গমও

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর ॥ শেরপুরে এবার ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচীর আওতায় মজুদ সংকটের কারণে চালের পরিবর্তে গম বিতরণ শুরু হলেও অবশেষে একই কারণে সেটাও মিলছে না। এমনিতেই চালের পরিবর্তে গম বিতরণের প্রক্রিয়ায় অসন্তুষ্ট ছিলেন ওই কর্মসূচীর আওতায় সুবিধাভোগী অসহায়-দুঃস্থ মানুষজন। কিন্তু এখন সেই গমও না মেলায় তাদের মাঝে বিরাজ করছে হতাশার পাশাপাশি তীব্র ক্ষোভ। অন্যদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় প্রশাসনের চেষ্টা-তদবিরের পরও খাদ্য বিভাগ বলছে, সরকারি গুদামে প্রাপ্তি সাপেক্ষে ঈদের পর ভিজিএফ’র ওই গম বিতরণ করা হবে। জানা যায়, বাজার মূল্যের চেয়ে সরকারি মূল্য কম হওয়ার কারণে চাল কল মালিকরা সরকারি গুদামে চাল দিতে অনাগ্রহ হওয়ায় ১৫ মে থেকে শুরু হওয়া চলতি মৌসুমের বোরো চাল ও গম সংগ্রহ অভিযান এখন পর্যন্ত সিকিভাগও সফল হয়নি। যে কারণে জেলায় প্রতি কেজি সিদ্ধ চাল ৩৪ টাকা ও আতপ চাল ৩৩ টাকা হারে মোট ৩০ হাজার ১শ ১ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল ও ১ হাজার ১শ ৫১ মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিষয়টি এখনও সুদূর পরাহত। এছাড়া জেলায় ৩০ জুনের মধ্যে ২৮ টাকা কেজি হারে ৩শ ১৮ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এখন পর্যন্ত তার এক ছটাকও সংগ্রহ হয়নি। এদিকে গুদামে পর্যাপ্ত চালের অভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলোতে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহের কারণে চলতি ঈদুল ফিতরে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসূচীর আওতায় শেরপুরসহ অন্যান্য জেলায় অসহায় ও দুঃস্থ মানুষদের মাঝে চালের পরিবর্তে গম বিতরণের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। ওই হিসেবে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের আওতায় শেরপুরের ৫টি উপজেলার ৫২টি ইউনিয়নে ৭২ হাজার ৬শ ৩৬টি এবং ৪ টি পৌরসভায় ১২ হাজার ৩২৩ টি সুবিধাভোগী কার্ডের বিপরীতে মাথাপিছু ১০ কেজি চালের পরিবর্তে সমপরিমাণ মূল্যের গম ১৩.২৭০ কেজি গম উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও বাধ সাধে মজুদ স্বল্পতা। কারণ জেলায় ওইসব সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণের জন্য প্রায় ১১শ ২৭ মেট্রিক টন গমের প্রয়োজন হলেও স্থানীয় সরকারি গুদামে মজুদ রয়েছে মাত্র ২শ মেট্রিক টন। ফলে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শেরপুর সদরের পৌরসভাসহ রৌহা, কামারেরচর ও ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়নে এবং শ্রীবরদী পৌরসভা ও কয়েকটি ইউনিয়নে ওই বরাদ্দকৃত গম সরবরাহ সম্ভব হলেও অন্যসব এলাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। মজুদ সংকটের কারণে ভিজিএফের চালের পরিবর্তে গম বিতরণেও সংকট চলছে- বিষয়টি স্বীকার করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান খান বলেন, প্রয়োজনীয় গম নারায়ণগঞ্জ থেকে সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। তবে ঈদে পরিবহন সংকটের কারণে সেটাও দ্রুত সম্ভব হচ্ছে না। আমরা উচ্চ পর্যায়ের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি সামালে দ্রুত চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, পরিবহন সংকটের কারণে গম সংগ্রহ ও সরবরাহ সম্ভব না হলে সমপরিমাণ মূল্যের চাল বিতরণের চিন্তা-ভাবনা হচ্ছে। আর গম নিতে হলে সেটা হয়তো ঈদের পরে নিতে হবে।
×