ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চিলমারী রক্ষা প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে?

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ২২ জুন ২০১৭

চিলমারী রক্ষা প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে?

রাজুমোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২শ’ ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন থেকে চিলমারী উপজেলা রক্ষার ৬ কিঃ মিঃ বাঁধ নির্মাণের কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ বাঁধে জিও টেক্সটাইল ফিল্টার বসানো ব্লক প্লেসিং, ব্লক ডাম্পিং ও জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের ফেজ-২ প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়মিত তদারকি ও গোপন আঁতাতে ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন প্রকল্পে বিভিন্ন স্থানে বাঁধে ধস ও বাঁধ দেবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অথচ জুন ক্লোজিংয়ের নামে তড়িঘড়ি কাজে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে এ পরিস্থিতিতে চিলমারীবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অভিযোগে জানা যায়, ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে সিসি ব্লক তৈরি, কোন কম্পেকশন ছাড়াই জিও টেক্সটাইল ফিল্টার বসানো ও ব্লক প্লেসিং এ মানা হয়নি নিয়মাবলী। এছাড়া পাঁচ ক্যাটাগরিতে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ সিসি ব্লক তৈরির হিসাব তাদের রেজিস্টারে থাকলেও বাস্তবে এর কোন মিল নেই। প্রকল্প ঠিকাদাররা ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ার সুবাদে সিন্ডিকেট করে যে যার মতো ডাম্পিংয়ের কাজ রাতারাতি সেরেছে। ফলে চিলমারী রক্ষায় নেয়া প্রকল্প ভেস্তে যেতে বসেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, সাব ঠিকাদাররা লোকাল বালু ও ডাস্ট পাথর এবং নামমাত্র সিমেন্ট দিয়ে পাঁচ ক্যাটাগরিতে ব্লক তৈরির কাজ করছে। পানি উন্নয়ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীকে কর্ম এলাকায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাঁধের লেভেলিং শেষে কোন কম্পেকশন ছাড়াই জিও টেক্সটাইল ফিল্টার বসানো ও নামমাত্র ইটের খোয়া (৩য় শ্রেণীর ইট) দিয়ে ব্লক প্লেসিংয়ের কাজ চলছে। কোন হিসাব সংরক্ষণ না করে ব্লক ডাম্পিং করা হচ্ছে নৌকার মাঝি ও লেবারদের মর্জিমাফিক। এভাবে মোট ৩৮টি প্যাকেজের মধ্যে অনন্তপুর ৬টি, চিলমারী ১৪টি এবং কালিরকুড়া স্পার এর কাজ শেষ দেখানো হয়েছে। কাচকোল এলাকায় ১৭টি প্যাকেজের মধ্যে ৯টি শেষ, অনুরূপ ৮টির মধ্যে ৫টি এবং ৩টি প্রকল্পের কাজ চলমান যা জুন ক্লোজিংয়ের মধ্যে শেষ করা হবে বলে দিনরাত কাজ চলছে। এরই মধ্যে কাচকল বাজার সংলগ্ন স্লুইস গেট এলাকায় নির্মাণাধীন বাঁধের ব্লক দেবে গভীর গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় বাঁধটি হুমকীর সম্মুখীন হয়েছে। শ্রমিক সর্দার মোজাম্মেল মিয়া বলেন, ঠিকাদাররা যেভাবে কাজ করতে বলে সেভাবে কাজে করি। অনিয়ম হচ্ছে বুঝতে পারছি কিন্তু কিছুই করার নেই। অফিসের লোক মাঝে মধ্যে সাইডে দাওয়াত খেতে আসে, তারা অনিয়ম দেখলেও কিছু বলে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, ৬ কিঃ মিঃ বাঁধের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল বা ধসের ঘটনাটি কোন ব্যাপার না। ধস ও ফাটল হলে আমরা সারাবছর মেরামত করে যাব। আর কাজে অনিয়মের অভিযোগ মোটেই সত্যি নয়। নিয়মানুযায়ী তৈরিকৃত ব্লক পরীক্ষা করে ফেলা হচ্ছে। ফলে শতভাগ কাজের মান নিশ্চিত করছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সেখানে আতঙ্ক কিংবা উদ্বেগ হওয়ার কিছু নেই।
×