ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেওয়ান সামছুর রহমান

নাড়ির টানে ঘরে ফেরা

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২২ জুন ২০১৭

নাড়ির টানে ঘরে ফেরা

যান্ত্রিকতার এ যুগে জীবন ও জীবিকার তাগিদে মানুষকে নানা রকম কর্ম সম্পাদন করতে হয়। এ কারণে মানুষের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই, প্রতিনিয়তই ছুটতে হচ্ছে। কখনও কেউ কেউ একমুঠো ভাতের সন্ধানে কেউ বা অধিকতর ভাল জীবনযাপনের জন্য নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে শত শত মাইল দূরে পড়ে থাকে। যখনই কোন উপলক্ষ পাওয়া যায়, মন ছুটে যেতে যায় তার আজন্ম লালিত শৈশবের স্মৃতি বিজড়িত নাড়ির সঙ্গে সম্পৃক্ত গ্রামের বাড়িতে। এমনই উপলক্ষ মুসলমানদের পবিত্র ঈদের সময়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এ দেশে আবেগপ্রবণ এ দেশবাসী পরিবার পরিজন, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে শত সমস্যা, নানা বিপদ আপদ, ভোগান্তি আর ভয় শঙ্কা নিয়েও ছুটে চলে নাড়ির টানে। পৃথিবীর অন্যতম ছোট অথচ জনবহুল একটি দেশ আমাদের এই বাংলাদেশ। এদেশের সকল শ্রমজীবী, কর্মজীবী, পেশাজীবী, শিক্ষার্থী সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু রাজধানী শহর ঢাকা। ফলে রাজধানী শহরে যানজট নিত্যদিনের সঙ্গী। আর ঈদ উপলক্ষে এ মাত্রা আরও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। দূরপাল্লার যাত্রীদের বড় সঙ্কটে পড়তে হয় সময়মতো গাড়ি পাওয়া, টিকেট সঙ্কট, কালোবাজারি, পথে পথে নানা দুর্ভোগের। দীর্ঘ যানজটের কারণে পথেই সময় কাটাতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কখনও কখনও শিশু, নারী কিংবা বয়োবৃদ্ধরা হয়ে পড়ে অসুস্থ। গাদাগাদি করে বাসে কিংবা নড়েচড়ে অথবা ট্রেনের ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মানুষ ছুটে তার গন্তব্যে। শত কষ্ট সহ্য করেও উদ্দেশ্য একটা, ঈদের আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেয়া। বাঙালী আবেগপ্রবণ জাতি হিসাবে সব সময়ই পরিচিত। আবেগের কাছে কষ্ট যেন তুচ্ছ। যে ছেলেটি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে সারা বছর মা-বাবাকে ছেড়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকা শহরে পড়ে আছে, তার কাছে তো হাজার কষ্টও গৌণ মা-বাবার সঙ্গে ঈদ আনন্দ করার সঙ্গে। যে ছোট ছেলেমেয়েরা বাবা-মার সঙ্গে শহরে বাস করে তারা চার দেয়ালের বন্দীদশা কাটিয়ে দাদা-দাদি বা নানা-নানির সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে মুখিয়ে থাকে। চাকরিজীবী লোকটি ছোট ভাইবোন, মা-বাবাকে নিয়ে ঈদ করবে এ আনন্দে ছুটে চলে গ্রামে। কিংবা কারও স্ত্রী-সন্তানরা অপেক্ষায় আছে সে জন্য দুরন্ত এ ছুটে চলা। অথবা কারও গ্রামের বাড়িতে হয়ত কেউই নেই, নিজেরাই ঘরের তালা খুলে ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে দুই-তিন দিনের জন্য বসবাসের উপযোগী করে তুলছে। তারপরও যেতে হবে গ্রামে। সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ থেকে
×