ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা ডিএমপির

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২২ জুন ২০১৭

যানজট নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা ডিএমপির

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পবিত্র ঈদ-উল ফিতরকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রবেশ ও বাহির পথে জনদুর্ভোগ নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। সব বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন ও সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নিরাপত্তা জোরদারসহ নেয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ। নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় রেখে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন ও টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যে কোন ধরনের জনহয়রানি ঠেকাতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া। ডিএমপি জানিয়েছে, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নির্বিঘœ যাত্রা এবং ঘরফেরতদের ভোগান্তিবিহীন নগরে ফেরা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন টার্মিনালকেন্দ্রিক ডিএমপির গৃহীত পদক্ষেপ হলো- গাবতলীকেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা ডিএমপি জানিয়েছে, রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন জেলা অভিমুখে যানবাহনসমূহ বের হয়ে যাত্রী ওঠানামার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়াতে পারবে না। এক্ষেত্রে গাবতলী বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক মালিক-শ্রমিক সমিতির সঙ্গে সভা করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে। কোনক্রমেই টার্মিনাল গেট থেকে যানবাহনসমূহ বের হয়ে রাস্তার ওপর যাতে যত্রতত্র দাঁড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। কল্যাণপুর থেকে আমিনবাজার পর্যন্ত সড়কে রোড ডিভাইডার, লাইনিং স্থাপন করে ঢাকা অভিমুখী ও ঢাকা থেকে বহির্গামী যানবাহনসমূহ দ্রুত চলাচল করার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এক্ষেত্রে এ সড়কে অন্য কোন বাস যানবাহন রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। গাবতলী, আমিনবাজারে স্থাপিত ইউলুপটি যান চলাচল উপযোগী রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় সভা করে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। দিবারাত্রি ২৪ ঘণ্টা গাবতলীকেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন সিনিয়র অফিসার ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে গাবতলীকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-পশ্চিম) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (মিরপুর) যৌথভাবে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ এবং পিওএম, থানা, ফাঁড়ি থেকে অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করে যানজট নিরসনসহ যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। ঢাকা জেলার সঙ্গে সমন্বয় করে আমিনবাজার ও গাবতলীর যানজট নিরসনে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশ সুপার, ঢাকা ও উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক পশ্চিম) যৌথভাবে কাজ করবেন। আব্দুলাহপুরকেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনা এ এলাকায় অবৈধ ও এলোমেলো বাস-ট্রাক পার্কিং বন্ধ করা হয়েছে। যাত্রী উঠা-নামানোর জন্য কোনো গাড়ি রাস্তার উপরে যত্রতত্র থামতে পারছে না। ক্রাইম বিভাগের সহায়তার মাধ্যমে রাস্তায় অবস্থিত অবৈধ দখলকারী ও বাজার উচ্ছেদ করা হয়েছে। স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় ইউটার্ন অপ্রয়োজনীয় হলে সেটি বন্ধ করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর হতে বহির্গামী ও ঢাকা অভিমুখী যানবাহনসমূহ যাতে সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে সে পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ সুপার, গাজীপুরের সঙ্গে সমন্বয় করে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এয়ারপোর্ট থেকে আব্দুলাহপুর পর্যন্ত ডিএমপি উত্তরা বিভাগের সহায়তায় রাস্তা এবং ফুটপাথ অবৈধ দখলমুক্ত ও সচল রাখা হয়েছে। সায়েদাবাদকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সায়েদাবাদ হতে সাইনবোর্ড পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। এছাড়া টার্মিনালকেন্দ্রিক সমন্বয় সভা করা হয়েছে। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের গুলিস্তান পয়েন্টে প্রবেশপথে পরিষ্কার রাখা হয়েছে, যাতে যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে। এক্ষেত্রে অপরাধ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রবেশ মুখ ও বহির্মুখের পাশে যত্রতত্র অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে যান চলাচল সচল রাখা হয়েছে। মহাখালীকেন্দ্রিক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা মহাখালী বাস টার্মিনাল হতে বিভিন্ন জেলা অভিমুখে যানবাহনসমূহ বের হয়ে যাত্রী উঠানামার জন্য রাস্তা বন্ধ করে দাঁড়াতে পারছে না। এক্ষেত্রে মহাখালী বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক মালিক শ্রমিক সমিতির সঙ্গে সভা করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে এবং কোনক্রমেই টার্মিনাল গেট থেকে যানবাহনসমূহ বের হয়ে রাস্তার ওপর যত্রতত্র দাঁড়াতে না পারে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। দিবারাত্রি ২৪ ঘণ্টা মহাখালীকেন্দ্রিক ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে একজন সিনিয়র অফিসার ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা তদারকি করছেন। উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) ও উপ-পুলিশ কমিশনার (গুলশান) যৌথভাবে সমন্বয় করে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ এবং পিওএম, থানা ও ফাঁড়ি থেকে অফিসার ও ফোর্স মোতায়েন করে যানজট নিরসনসহ যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি ও হয়রানি বন্ধসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। লঞ্চ টার্মিনাল, রেলস্টেশনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রত্যেক ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনাররা তার অধিক্ষেত্রাধীন লঞ্চ টার্মিনাল, বাস স্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশনের (যদি থাকে) নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জনসাধারণের নির্বিঘœ যাতায়াত নিশ্চিতকল্পে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় সভার মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি তদারকি করছেন। লঞ্চ টার্মিনালে কন্ট্রোলরুম স্থাপন নৌপথের নিরাপত্তা, নির্বিঘেœ নৌযান চলাচল, যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা, সুবিধা-অসুবিধা পর্যবেক্ষণ ও মনিটর করার লক্ষ্যে সদরঘাট টার্মিনালে বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কন্ট্রোলরুম স্থাপন করা হয়েছে। কন্ট্রোলরুম লঞ্চের ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী বহন রোধ করা, যাত্রী উঠানোর পর লঞ্চের লোডিং লাইন পরীক্ষা করা, যাত্রী লোডিং করার পরপরই টার্মিনাল ত্যাগ করা, লঞ্চের ছাদে যাত্রী পরিবহন বন্ধ করা, টার্মিনাল থেকে বুড়িগঙ্গা ব্রিজ পর্যন্ত লঞ্চে নৌকাযোগে যাত্রী ওঠা বন্ধ করা, পথিমধ্যে যাত্রী ওভার লোডিং হলে যাত্রী নামিয়ে দেয়া, যাত্রীদের ওঠা-নামার সুবিধার্থে লঞ্চসমূহে চওড়া সিঁড়ির ব্যবস্থা, হ্যাচ বন্ধ করা হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা, টিকেট কালোবাজারি, যাত্রী টানাটানি, কুলিদের মাল টানাটানি বন্ধ করা এবং অজ্ঞান ও মলমপার্টির দৌরাত্ম্য সম্পর্কে যাত্রীদের সচেতনতা করার লক্ষ্যে মাইকিং করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
×