ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৩ শতাধিক কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা ঢাকা উত্তরের

প্রকাশিত: ০৬:১২, ২২ জুন ২০১৭

২৩ শতাধিক কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা ঢাকা উত্তরের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় দুই হাজার ৩শ’ ৮৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি)। এ বাজেট ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ব্যয় করা হবে। বুধবার বিকেলে গুলশান-২ এ ডিএনসিসির নগর ভবনের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংস্থাটির মেয়র আনিসুল হক এই বাজেট ঘোষণা করেন। প্রস্তাবিত বাজেটে ডিএনসিসির রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯শ’ ৭৭ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য আয় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এ ছাড়া সরকারী অনুদান (বিশেষ থোক বরাদ্দ) ও বৈদেশিক সাহায্য প্রকল্প থেকে এক হাজার ১শ’ ৭৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেসবাহুল ইসলাম, সচিব দুলাল কৃষ্ণ সাহা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম এম সালেহ ভূইয়া, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর এম এ রাজ্জাক ও প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম। বাজেট ঘোষণার সময় মেয়র বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর সংস্থাটির মেয়র হিসেবে যখন দায়িত্ব নেই তখন উন্নয়ন কর্মকা-ের জন্য কোন বরাদ্দ ছিল না। তাই চাইলেও অনেক কাজ করতে পারি নাই। অনেক পর আমরা অর্থ বরাদ্দ পেয়েছি। এরপর গত অর্থবছর বরাদ্দ পেয়ে অনেক কাজ শুরু করে দিয়েছি। তবে অনেক কাজ করেছি বলব না, কিন্তু কিছু কিছু কাজ করতে পরেছি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও কাজের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে। এই শহরটি বদলাচ্ছে। যদিও কিছু সমস্যা আমাদের আছে। কিন্তু সমস্যাগুলো রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়। তবে সব ক্ষেত্রেই আমার কাজ শুরু করে দিয়েছি। উন্নয়ন কাজে আমার কোয়ালিটির সঙ্গে কোন ধরনের আপোস করছি না। তাই আগামী ডিসেম্বরে মেয়র হিসেবে আমার আড়াই বছর পূর্ণ হবে তাই ডিসেম্বরের ও জানুয়ারির মধ্যে নগরীর অনেক পরিবর্তন হয়ে যাবে। নগরীর উন্নয়নে আমরা বেশকিছু মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছি। যার প্রভাব আপনারা কিছুদিন পর থেকেই দেখতে পাবেন। এছাড়া নগরীর খাল দখল বন্ধ করতে আমরা বেসরকারী হাউজিং সংগঠন রিহ্যাবের সঙ্গে ১৫ জুলাই বৈঠক করব। কিভাবে খাল বা নালার ওপর বাড়ি বা স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করা যায় তা আলোচনা করব। মেয়র জানান, গত (২০১৬-১৭) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে এক হাজার ২৩১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৮৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ওই বাজেটে নিজস্ব আয়ের অন্যতম খাত হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে ৪শ’ ৮০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে এসেছে ২শ’ ৯০ কোটি টাকা। এছাড়া মহাখালী ও আমিনবাজারে সিটি কর্পোরেশনের বাজার থেকে সেলামি বাবদ ১শ’ ৬০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে এসেছে মাত্র ৫ কোটি টাকা। এ কারণে গত অর্থবছরে ৩শ’ ৬৪ কোটি টাকা রাজস্ব আয় কম এসেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৪৮৫ কাটি টাকা। বাজার সেলামি থেকে আয় ধরা হয়েছে ১শ’ ২০ কোটি টাকা। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স থেকে ধরা হয়াছে ৬০ কোটি টাকা, সম্পত্তি হস্তান্তর বাবদ ১শ’ ৮০ কোটি টাকা, সড়ক খনন ফি বাবদ ৫০ কোটি টাকা, গরুর হাট ইজারা বাবদ ২১ কোটি টাকা, বিজ্ঞাপন বাবদ ৬ কোটি, বিদ্যুত বিল বাবদ ১২ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা রয়েছে ডিএনসিসির। অন্যদিকে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেটের ব্যয়ের উল্লেখযোগ্য খাতগুলো হলো- উন্নয়ন ব্যয় ৭শ’ ৪১ কোটি টাকা, বেতন, পারিশ্রমিক ও ভাতা ১শ’ ৭৫ কোটি টাকা যা গত বছর ছিল ১শ’ ৩৫ কোটি টাকা, জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুত খাতে ৫৬ কোটি টাকা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ৬০ কোটি টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ২৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা, মশক নিয়ন্ত্রণে ২০ কোটি টাকা, গত অর্থবছরে ছিল ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা, বিভিন্ন ফি বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে ২৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
×