ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হজের কোটা ও রিপ্লেসমেন্ট বাণিজ্য ঠেকাতে হাবের আগাম প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৬:৩৫, ২১ জুন ২০১৭

হজের কোটা ও রিপ্লেসমেন্ট বাণিজ্য ঠেকাতে হাবের আগাম প্রস্তুতি

আজাদ সুলায়মান ॥ এ বছর হজের কোটা ও রিপ্লেসমেন্ট বাণিজ্য ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়েছে হাব। সিদ্বান্ত নেয়া হয়েছে, ব্যালটি ৫২০০ কোটা পূরণ করা হবে প্রাক নিবন্ধনের ক্রম তালিকা অনুসারে। একইভাবে রিপ্লেসমেন্ট কেলেঙ্কারি ঠেকাতে আগেভাগেই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। হাবের নবনির্বাচিত কমিটির নেয়া এসব সিদ্ধান্তে মধ্যস্বত্বভোগীরা অসন্তুষ্ট হলেও কিছুতেই অনিয়ম অরাজকতার কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারী অব্যবহৃত ৫২০০ হজ কোটা বেসরকারী ব্যবস্থাপনায় কোড পরিবর্তন করে দিয়েছে সৌদি সরকার। সোমবার থেকে এসব অব্যবহৃত হজ কোটা সিরিয়াল অনুযায়ী বেসরকারী হজ এজেন্সিগুলোর মাঝে বণ্টন শুরু হয়েছে। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যারা প্রাক নিবন্ধনে এগিয়ে আছে তারাই এসব কোটা পাবেন। উল্লেখ্য, গত মে মাসে এসব অব্যবহৃত হজ কোটা বেসরকারী কোডে স্থানান্তরের জন্য ঢাকা থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয় সৌদি সরকারের হজ মন্ত্রণালয়ে। মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশন কর্তৃপক্ষ, হাব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক তদারকিতে শেষ বিষয়টির ফয়সালা হয়। সৌদি সরকার তাতে সম্মতি দেয়। এরপরই ঢাকায় চলে জোর তৎপরতা। গতবারের মতো এবারও যাতে ব্যালটি কোটা নিয়ে অনৈতিকভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই সিন্ডিকেট এবারও দশটি এজেন্সিকে অনুমোদিত ৫২০০ কোটা বণ্টনের জন্য পাঁয়তারা চালায়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে হাবের নবনির্বাচিত মহাসচিব শাহাদত হোসেন তসলিম ছুটে যান প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। তিনি কোটাবাণিজ্য ঠেকানোর জন্য সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপরই সিদ্ধান্ত আসে নিয়ম মোতাবেক শতভাগ স্বচ্ছতার মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধনের ক্রম অনুসারেই এ কোটা বণ্টন করা হবে। জানা যায়, সরকারী অব্যবহৃত ৫২০০ হজযাত্রী কোড পরিবর্তনের মাধ্যমে হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় চলতি বছর বেসরকারী ব্যবস্থায় গাইড ও মুনাজ্জেমসহ ১ লাখ ২২ হাজার ৩৫৭ জন হজে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। সরকারী ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭১৯ জন হজে যাবেন এবং গাইড ও অন্যান্য প্রতিনিধির জন্য ১ হাজার ৮১ জন কোটা রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে হাব মহাসচিব শাহাদত হোসাইন তসলিম বলেন, ঢাকায় ও সৌদি আরবে হাবের সার্বক্ষণিক তদারকি ও সরকারের সহযোগিতায় সৌদি সরকার অব্যবহৃত সরকারী হজ কোটা কোড পরিবর্তন হয়ে বেসরকারী কোডে স্থানান্তরিত হয়েছে। জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি অনুযায়ী সিরিয়াল অনুযায়ীই ৫২০০ কোটা বণ্টন কার্যক্রম সোমবার শুরু হয়েছে। নতুন এ হজ কোটা নিয়ে কাউকে কোটাবাণিজ্য করতে দেয়া হবে না। তবে এ কোটাগুলো শীর্ষ দশটি এজেন্সি ভাগাভাগি করে নিজেরাই বাণিজ্য করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালালেও তারা সফল হতে পারেনি। এ দিকে ৪% রিপ্লেসমেন্টের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আজ বুধবারের মধ্যেই এ ৪ ভাগ রিপ্লেসমেন্ট কোটা পূরণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ দুটি কাজই হজের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিবছর রিপ্লেসমেন্ট আর কোটা বদলের তদবির নিয়ে হজ এজেন্সিগুলো বিশেষ সিন্ডিকেট গড়ে তোলে। এবার সেই সিন্ডিকেট গুঁড়িয়ে দেয়ার কথা উল্লেখ করে শাহাদত হোসাইন তসলিম বলেন, এসব আগাম সম্পন্ন করার ফলে হজ ফ্লাইট নিয়ে আর কোন সঙ্কট বা ঝামেলা পোহাতে হবে না। বিশেষ করে সাধারণ হজযাত্রীদেরও জিম্মি করে অনৈতিক সুবিধা নিতে পারবে না।
×