ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জের খায়েরের বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২১ জুন ২০১৭

হবিগঞ্জের খায়েরের বিরুদ্ধে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত হবিগঞ্জের রাজাকার কমান্ডার ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আবুল খায়ের গোলাপের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২২ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে আবুল খায়ের গোলাপকে আগামী ১২ জুলাই সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার শেখ মোঃ আব্দুল মজিদ ওরফে মজিদ মওলানাসহ ছয় রাজাকারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের তৃতীয় এক মহিলা সাক্ষীর ক্যামেরা ট্রায়াল অনুষ্ঠিত হয়েছে। জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাক্ষীকে জেরা করেছেন। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য ৯ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ মঙ্গলবার এ আদেশগুলো প্রদান করেছেন। ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম, প্রসিকিউটর মুখলেসুর রহমান বাদল, সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নি ও রেজিয়া সুলতানা চমন। এর আগে গত ১১ এপ্রিল আবুল খায়ের গোলাপকে গ্রেফতার করে হবিগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আবুল খায়ের গোলাপ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং গজনাইপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৩ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ধানম-ির তদন্ত সংস্থা কার্যালয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার আতানগীরি গ্রামের রইছউল্লার স্ত্রী সুকুরি বিবি একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক চেয়ারম্যান গোলাপ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা-যুদ্ধ চলার সময়ে আল-বদর, আল-সামস ও রাজাকার বাহিনীর সংগঠক ছিলেন। গোলাপের নেতৃত্বে স্বাধীনতা-যুদ্ধের সময় দিনাজপুর হাইস্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করে বিভিন্ন স্থান থেকে মেয়েদের ধরে এনে ধর্ষণসহ পাশবিক অত্যাচার করেন। প্রসিকিউশন পক্ষ তার বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক নির্যাতনের মতো পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে, (১) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানাধীন লোগাঁও গ্রামের নৌশাদ আলী, আশাদ আলীকে অপহরণ, আটক ও নির্যাতন এবং হাসিম উল্লাহর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। শিরালের পুঞ্জি গ্রামের কুসুম বিবিকে ধর্ষণ ও তার স্বামী আবদুল খালেককে নির্যাতনসহ একই গ্রামের আব্দুল সুবহানকে অপহরণ ও নির্যাতন। (২) হবিগজ্ঞ জেলার নবীগঞ্জ থানাধীন নিশাকুড়ি গ্রামের মোঃ হানিফ মিয়া ও নবিব আলী ওরফে নইব আলীর বাড়ি থেকে তাদের অপহরণ, আটক ও নির্যাতন। (৩) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানাধীন মামদপুর গ্রামের পুলিন রায় হালদারকে তার নিজ বাড়িতে হত্যা ও লুণ্ঠন। বিরেন্দ্র ঠাকুর ও গৌরিরানীসহ ৫ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকদের অপহরণ, আটক ও নির্যাতন । গৌরিরানীকে ধর্ষণ এবং আটককৃত পুরুষ হিন্দুদের গণহত্যা। (৪) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানাধীন কান্দিরগাঁও গ্রামের দরছ মিয়াকে তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ, আটক নির্যাতন হত্যা ও অগ্নিসংযোগ। (৫) হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানাধীন লোগাঁও গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং শুকুরী বিবিকে অপহরণপূর্বক ধর্ষণ।
×