রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, হবিগঞ্জ থেকে ॥ ৮৮ সাল পরবর্তী সময়ে আবারও খোয়াইর পানি স্মরণকালের ভয়াবহ আকারে বৃদ্ধি পাওয়ায় হবিগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ এখনও বড় ধরনের ঝুঁকিতে। আতঙ্কে রয়েছে সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ শহরের খোয়াই বাঁধ সংলগ্ন দানিয়ালপুর এলাকার বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কোন সময় সংশ্লিষ্ট বাঁধের মূল ঝুঁকিপূর্ণ কামড়াপুর এবং তেতৈয়া নামক স্থানে সৃষ্ট ফাটলে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে। ফলে হবিগঞ্জ শহর তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় অব্যাহত মাইকিংয়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। তবে এসব স্থানের ফাটল ও দুর্বল বাঁধ রক্ষায় সোমবার রাত থেকেই বালি ও মাটির বস্তা ফেলে জেলা প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধি ও হাজার হাজার মানুষ প্রাণান্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ (সদর-লাখাই)-৩ আসনের এমপি এ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির, জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, পৌর মেয়র আলহাজ জিকে গউছ, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ ছালেক মিয়াসহ নির্বাচিত অন্যান্য জনপ্রতিনিধিগণ ওইসব দুর্বল বাঁধের অংশ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি সরেজমিন উপস্থিত থেকে সার্বিক পরিস্থিতি তদারকি করছেন। পাউবোর তথ্য মতে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত খোয়াই নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়ে ২৮০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হবিগঞ্জ শহর রক্ষা এবং শহরতলীর আশপাশ এলাকার কামড়াপুর ও তেতৈয়া সংলগ্ন বাঁধের অধিকাংশ স্থান দিয়ে উপচে ধীরগতিতে শহরে পানি প্রবেশ করছে। ফলে এসব নি¤œ এলাকার বাসাবাড়ি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আর অলিগলি ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম আজহারুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, খোয়াইর পানি এখনও বিপদসীমার ওপরে থাকায় হবিগঞ্জ শহরের মানুষ বিপন্মুক্ত নন। তবে তিনি আরও জানান, ভারত সীমান্ত সংলগ্ন বাল্লা পয়েন্টে খোয়াইর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও ভারতে প্রবল ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। ফলে যে কোন সময় খোয়াই নদীর পানি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এদিকে হবিগঞ্জ শহর ও সাধারণ মানুষের জান-মাল রক্ষায় জেলা প্রশাসক সাবিনা আলমের নেতৃত্বে সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। সেই সঙ্গে যে কোন সম্ভাব্য অঘটন মোকাবেলায় হবিগঞ্জ শহর বেষ্টিত খোয়াই বাঁধের পুরোটাই রাত-দিন পাহাড়া দিচ্ছে দেশীয় অস্ত্র হাতে শত শত সাধারণ মানুষ।
