ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীনগরে প্রাচীন নিদর্শন রাধাকান্ত সাহার ভবন ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৮:১২, ১৯ জুন ২০১৭

শ্রীনগরে প্রাচীন নিদর্শন রাধাকান্ত সাহার ভবন ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ শ্রীনগরে প্রাচীন নিদর্শন রাধাকান্ত সাহার ভবন ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। পানাম নগরের আদলে গড়া ঐতিহ্যবাহী ভবনটি গত দুদিন ধরে ভাঙ্গার কাজ চলছে। কিন্তু এটি ভাঙ্গতে গিয়ে ধামরাই থেকে আসা শ্রমিকরাও বিস্মিত হচ্ছে। এত নান্দনিক প্রাচীন ভবনটি কেন সংরক্ষণ না করে এভাবে ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ৬ লাখ টাকায় কিনে এটি ভেঙ্গে নিচ্ছে। বাড়িতে এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা বসবাস করেছেন। প্রাচীন বাড়িটি ভেঙ্গে এখানে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্ত-কর্মচারীদের নতুন আবাসন করা হবে। বিশাল এই বাড়িটিতে এখনও অনেক খালি জায়গা রয়েছে। এই ভবনটি না ভেঙ্গেও কোয়ার্টার তৈরি করা সম্ভব ছিল। তবে প্রাচীন নিদর্শনটি বিনষ্ট করা ঠিক হচ্ছে না বলে এলাকাবাসী সঞ্জয় ম-ল জানান, আর নতুন করে আবাসনের ব্যবস্থার জন্য পুরাতন ভবনে পাশের একটি মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এসব নিয়ে নানা গুঞ্জন রয়েছে এলাকায়। ২শ’ বছরেরও আগে শ্রীনগরের ধনাঢ্য ব্যবসায়ী রাধাকান্ত সাহা পানাম নগরের আদলে শতাধিক কক্ষবিশিষ্ট তৃতীয় তলা বাড়িটি নির্মাণ করেন। এর কক্ষ, দরজা, জানালা, ব্যালকনি, চিলেকোঠাসহ বিভিন্ন অংশে তৎকালীন পানাম নগরের নক্সার নিদর্শন রয়েছে। দেশ ভাগের পর রাধাকান্ত সাহার পরিবার বিশাল বাড়ি ছেড়ে ভারত চলে যান। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। পরে শ্রীনগরকে উপজেলা হিসেবে ঘোষণার পর থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কম্পাউন্ড হিসেবে বাড়িটি ব্যবহৃত হচ্ছে। একটি অংশ ইউএনও আবাসিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করতেন। বাকি অংশের কক্ষগুলোতে থাকতেন উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু দু’বছর আগে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বাকিরা ভবনটিকে আবাসন হিসেবে ব্যবহার করছেন না। তাই প্রতœতত্ত্ব অধিদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে এটি সংরক্ষণের দাবি ওঠে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, এর আগে একটি প্রভাবশালী মহল এটিকে ভেঙ্গে ফেলার উদ্যোগ নিলে তা ভেস্তে যায়। কয়েক মাস আগে ভবনটি আবার ভেঙ্গে নেয়ার দরপত্র আহবান করে উপজেলা প্রশাসন। এখন ভেঙ্গে নেয়ার কাজ শুরু হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিক্রমপুর জাদুঘরের উদ্যোক্তা এবং অগ্রসর বিক্রমপুর ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ড. নূহ উল আলম লেনিন বলেন, বহু স্থাপনা আছে যেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণার পরও জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। যেহেতু বিক্রমপুর প্রাচীন সভ্যতার জনপদ। এখানকার প্রাচীন স্থাপনাগুলো নানা ঐহিত্য বহন করে আছে। তাই এগুলোকেও জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। সদর উপজেলার নগর কসবার প্রাচীন স্থাপনগুলোও পানাম নগরীর আদলে করা । যা সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরীর যে ঐতিহ্য মূল্য তার চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। এগুলো ব্যক্তি মালিকানায় হলেও জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে সংরক্ষণ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জাহিদুল ইসলাম জানান, আগের ইউএনও থাকা অবস্থায়ই এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা এবং এটি ভেঙ্গে নেয়ার অনুমোদন আসে। ওরা একঝাঁক জোনাকি মীর আব্দুল আলীম, রূপগঞ্জ ॥ কারও বয়স ১০। কারও ১১। কারও বড়জোর ১৩। কেউ ক্লাস ফোরে। কেউ ক্লাস ফাইভে। কেউবা ক্লাস সিক্সে। ওরা ২১ জন। ওদের মাথায় ঘুরপাক খায় লেখাপড়ার পাশাপাশি সমাজের জন্য কিছু করা চাই। যেই চিন্তা, সেই কাজ। পরামর্শ নিলো স্কুলের প্রধান শিক্ষকের। সমাজের জন্য ওরা কাজ করতে চায়। ওরা সবাই কিশোর-কিশোরী। ওরা সমাজে আলো ছড়াবে। তাই নাম দেয়া হলো ‘একঝাঁক জোনাকি’। রবিবার স্কুলে স্কুলে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে ‘একঝাঁক জোনাকির’ যাত্রা শুরু হয়েছে। একঝাঁক জোনাকিরা বাল্যবিয়ে, যৌতুক, ভেজাল, মাদকসহ সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে কাজ করার অভিপ্রায়ে এগিয়ে যেতে চায়। কিশোর-কিশোরীদের দলনেতা অনিক আহম্মেদ জানায়, তারা রূপগঞ্জের নগরপাড়া এলাকার ব্রাইট শিশু কানন হাই স্কুলের ছাত্রছাত্রী। তাদের মাথায় গত কয়েকদিন ধরেই ঘুরপাক খাচ্ছে, তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি সমাজের জন্য কিছু করতে চায়। সমাজে আলো জ্বালাতে চায়। কিন্তু সাহস তাদের বড় বাধা। প্রথমে স্কুলের চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে ২১ জনকে ওরা বাছাই করে নেয়। এরপর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে। একপর্যায়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে পরামর্শ করে। পরে স্কুলের শিক্ষকসহ সবাই মিলে পরামর্শ করে নাম দেয়া হয় ‘ একঝাঁক জোনাকি’। ওই ২১ জন জোনাকির পক্ষ থেকে অনিক ও সিনথিয়া বলে, তারা নিজেরা চিন্তা করেছে সমাজে অহরহ বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে। তারা এসব বিয়ে বন্ধ করার চেষ্টা করবে। এছাড়া যৌতুক প্রথা, মাদক ও ভেজাল নিয়ে আন্দোলন করবে। প্রতিবছর তারা নিজেদের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ করবে। এসবের জন্য তারা ইতোমধ্যে সঞ্চয় করছে। প্রতিদিন টিফিনের টাকা থেকে পাঁচ টাকা বাঁচিয়ে রেখে সঞ্চয় করছে। এ টাকা তারা সমাজের ভাল কাজে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতিটি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাত ধোয়া শেখানোর কার্যক্রমও তারা করবে বলে জানিয়েছে। পুলিশের পিটুনিতে দুধ বিক্রেতা হাসপাতালে নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১৮ জুন ॥ সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাইফুল ইসলাম নামের এক দুধ বিক্রেতাকে প্রকাশ্যে পিটিয়েছেন আলমগীর হোসেন নামের এক পুলিশ সদস্য । রবিবার সকালে বাউফল থানার কাছে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত ওই দুধ বিক্রেতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জানা গেছে, সূর্য্যমণি গ্রামের সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে বাউফল থানার গাড়ির চালক ও পুলিশ সদস্য আলমগীর হোসেন ৪দিন আগে ৪৫ টাকা লিটার দরে ১০ লিটার দুধ ক্রয় করেন। ঘটনার দিন রবিবার সকাল ১০ টার দিকে ওই পুলিশ সদস্য দুধ বিক্রেতা সাইফুলকে থানার কাছে পেয়ে দুধে ভেজাল থাকার অজুহাত দেখিয়ে তাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন।
×