ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

একাত্তরে বেগম জিয়া পাক আর্মির সঙ্গে প্রমোদ ভ্রমণে ছিলেন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১৯ জুন ২০১৭

একাত্তরে বেগম জিয়া পাক আর্মির সঙ্গে প্রমোদ ভ্রমণে ছিলেন

সংসদ রিপোর্টার ॥ চট্টগ্রামের পাহাড় ধসের ঘটনা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এ সময় তিনি খালেদা জিয়াকে ‘নোংরা’ রাজনীতি বন্ধ করার এবং এর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ারও আহ্বান জানান। রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনের শুরুতেই পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দিতে গিয়ে খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, রমজানে ইফতারের আগে মানুষ আল্লাহর কাছে কল্যাণ ও শান্তির জন্য দোয়া করেন। আর খালেদা জিয়া ইফতারকে সামনে রেখে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন, মিথ্যাচার করছেন, কুৎসিত কথাবার্তা বলে নোংরা রাজনীতি শুরু করেছেন। তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে ধসের পরপরই সরকার ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের পদক্ষেপে সেখানকার জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে এসেছে। অথচ খালেদা জিয়া বলেছেন, ভূমিধসের সময় আমাদের প্রধানমন্ত্রী নাকি প্লেজা ট্রিপে (প্রমোদ ভ্রমণ) সুইডেন গেছেন! তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর দাবিদার খালেদা জিয়া কীভাবে একটি রাষ্ট্রীয় সফরকে প্লেজা ট্রিপ হিসেবে অভিহত করেন? এ ধরনের মন্তব্য মূর্খতার শামিল বলে জনগণ মনে করে। খালেদা জিয়ার এই কথার সূত্র ধরে হানিফ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সুইডেনই প্রথম স্বীকৃতি দেয়। উনি (খালেদা জিয়া) সেটা ভুলে গেছেন। আর উনি জানবেনই বা কী ভাবে? উনি তো মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর সঙ্গে প্লেজা ট্রিপে ছিলেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার এদেশের জনগণের প্রতি মায়া নেই, মমতা নেই। সেই খালেদা জিয়া আমাদের নসিহত করতে আসেন। ইউরোপীয়ান দেশগুলোর মধ্যে দুই মাসের মধ্যে স্বীকৃতি দিয়েছিল সুইডেন, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় সফরে গেছেন। আর বিএনপি নেত্রী তাঁর বিরুদ্ধে বিষোদগার করছেন। হানিফ বলেন, দেশের প্রতি খালেদা জিয়ার কোন শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নেই। উনার সমস্ত আবেগ অনুভূতি পাকিস্তানে। যার কারণেই খালেদা জিয়া এ ধরনের কথা বলতে পারেন। খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, উনি প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ভারত সফরে গিয়েছিলেন। ফিরে আসার পর সাংবাদিকরা জিজ্ঞাস করেছিলেন গঙ্গার পানি চুক্তির কি হলো? তখন তিনি বলেছিলেন আমি তো এটা ভুলেই গেছিলাম। এই সেই খালেদা জিয়া যে দেশের স্বার্থের কথা ভুলে যায়। তাহলে উনি কি প্লেজা ট্রিপে গিয়েছিলেন যে কথা বলতে ভুলে গেলেন? আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, রক্তপিপাসু বিএনপি নেত্রী ক্ষমতার লোভে মানুষ হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করেন না। উনি আজ দেশপ্রেমের কথা বলেন, মানুষ প্রেমের কথা বলেন। দেশবাসীকে আহ্বান জানাব- খালেদা জিয়ার মিথ্যাচার, কুৎসিত, নোংরা রাজনীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন। সরকার সম্পর্কে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার বন্ধ করতে খালেদা জিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিক-নির্দেশনায় সরকার প্রতিটি দুর্যোগ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করছে। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা করছে। অথচ খালেদা জিয়া পবিত্র রমজানে ইফতার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সুইডেন সফর নিয়ে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিরূপ মন্তব্য করছেন। বর্তমান সরকার যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সক্ষমতা অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিগত দিনের মতো এখনও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং সাধ্যমত ত্রাণ ও পুনর্বাসনে সহায়ত করছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা নিয়ে সরকার সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস, ঘূণিঝড়, মোরা ও হাওড় অঞ্চলে আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে। অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যা কিছু করার দরকার সরকার অবশ্যই তা করবে।
×