ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৯ জুন ২০১৭

ব্যাংক আমানতের ওপর আবগারি শুল্ক হ্রাসের ঘোষণা অর্থমন্ত্রীর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাপক সমালোচনার মুখে অবশেষে ব্যাংক আমানতের ওপর বাড়তি আবগারি শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আবগারি শুল্ক নিয়ে বাজারে এত চিৎকার হচ্ছে যে, সবাইকে স্বস্তি দিতে তিনি সংসদে কথা বলার আগেই পরিবর্তনের বিষয়টি জানিয়ে রাখছেন। এটা নিয়ে যখন এত কথা হচ্ছে তখন বাজেট পাসের সময় শুল্কের হার পরিবর্তন করা হবে। রবিবার সচিবালয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০১৮ সালের বার্ষিক কর্মসম্পাদনা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আবগারি শুল্ক নিয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। ওই সময় তিনি বলেন, আমি ইতোমধ্যে বলেছি, এত চিৎকার যখন বাজারে আছে, সুতরাং এগুলো একটু সাম পরিবর্তন সেখানে করতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রস্তাবিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রী গত ১ জুন ব্যাংক হিসাবের ওপর বাড়তি হারে আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন। অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবে বলা হয়, বছরের যে কোন সময় ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি স্থিতি থাকলে আবগারি শুল্ক বিদ্যমান ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০০ টাকা করা হবে। পাশাপাশি ১০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ২ হাজার ৫০০ টাকা, ১ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ৭ হাজার ৫০০ টাকার বদলে ১২ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি লেনদেনে ১৫ হাজার টাকার বদলে ২৫ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাবনার পর সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী, ব্যাংকার ও অর্থনীতিবিদরাও আবগারি শুল্ক বাড়ানোর ওই প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা বলেন, শুল্ক বাড়লে লেনদেনের অবৈধ মাধ্যম উৎসাহিত হবে। জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন ও বিরোধীদলীয় কয়েকজন সাংসদও অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবে প্রত্যাহারের আহ্বান জানান। এই আলোচনা প্রসঙ্গে মুহিত অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের আর্থিক খাত নিয়ে অনেক সমালোচনা বাজারে প্রচলিত। বিশেষ করে বাজেট দেয়ার পর সেই সমালোচনা আরও একটা উচ্চ মার্গে পৌঁছে গেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এবার আবগারি শুল্কের নামটাও পরিবর্তন করা হতে পারে। এর নাম আবগারি শুল্ক কোনমতেই হওয়া উচিত না। নামটা পাল্টানো দরকার। আবগারি শুল্ক বহু বছর ধরেই আছে। সবাই দিয়েও যাচ্ছেন। এবারের বাজেটে হারটা একটু বেড়েছে। তবে সুযোগও বেড়েছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে সমালোচনার জন্য যখন বেশি কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন তো কিছু বের করতে হয়। এবার সবচেয়ে বেশি সমালোচনা এসেছে আবগারি শুল্ক নিয়ে। আমি তো আগেই বলেছি, বাজেট তো হলো প্রস্তাব। যখন এটা পাস হয়, তখন অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়। এই বিষয়ে চিৎকার যা আছে, তা পরিবর্তন হবে। বাজেট তো পাস হবে ঈদের পরে, তাই এখনই বলে দিচ্ছি যাতে সবাই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারেন। টাকা পাচার বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচার তো হয় কালো টাকা আছে বলে। কালো টাকার সুযোগ যাতে বন্ধ হয়, সে জন্য আমরা অভিযান শুরু করব। জমি নিবন্ধন কালো টাকা উৎপাদনের একটি বড় উৎস এমন মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যে দামে জমি বিক্রি হয় প্রকৃত মূল্যের সঙ্গে তার দশ গুণ পার্থক্য। তাই এলাকাভিত্তিক নির্ধারিত মূল্য তুলে দিয়ে তা বাজারভিত্তিক করে দেয়া হবে। এই ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
×