ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এত বিজ্ঞাপনের মাঝে সালমান খানের নাটকও মানুষ দেখবে না ॥ সাজিন আহমেদ বাবু

প্রকাশিত: ০৭:২০, ১৮ জুন ২০১৭

এত বিজ্ঞাপনের মাঝে সালমান খানের নাটকও মানুষ দেখবে না ॥ সাজিন আহমেদ বাবু

সাজিন আহমেদ বাবু। এই সময়ের প্রতিভাবান নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা। অভিনেতা হিসেবে মিডিয়ায় কাজ শুরু করলেও এক সময় নাট্যকার এবং পরবর্তীতে নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এই বয়সেই যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। একাধিক নাটক রচনার পাশাপাশি একাধিক খ- ও ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করে প্রশংসিত হয়েছেন। বিশেষ করে গত বছর ঈদ-উল-ফিতরে নিজের রচনায় ‘কিড সোলায়মান’ নামে ৬ পর্বের একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করে ব্যাপক প্রশংসিত হোন। এই নাটকটির মাধ্যমে আলোচনায় আসেন তিনি। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। সম্প্রতি আপনার ব্যস্ততা কেমন? সাজিন আহমেদ বাবু : ঈদের একাধিক নাটক লেখা এবং নির্মাণ শেষ করলাম। এখন নির্মাতা আজাদ কালামের জন্য একটা ধারাবাহিক নাটক লিখছি। তাছাড়া ঈদে আমার নির্মাণ ও লেখায় বেশকিছু নাটক প্রচার হবে বিভিন্ন চ্যানেলে। আমার নির্মাণ ও লেখার মধ্যে আছে, এসএ টিভিতে ‘বসন্ত মেঘ’, চ্যানেল নাইনে ‘খোলা হৃদয়’ প্রচার হবে। এবং লেখা ‘বসন্ত যায় বসন্ত আসে’, ‘শেওলা ধরা পথে’, ‘গভীর শূন্যতা’, ‘রাত গভীর হয়’, ‘কবিরাজ’, বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হবে। মিডিয়াতে আপনার শুরুটা কেমন ছিল? সাজিন আহমেদ বাবু : শুরুটা কেমন ছিল বুঝিয়ে বলা কষ্ট। শুরুটা ছিল এলোমেলো। অভিনয় করতেই মিডিয়াতে আসা। তারপর সহকারী হিসেবে কাজ করা সেটাও অভিনয়ে সুযোগ পাওয়ার লোভেই। লেখালেখির ঝোকটা ছোট কাল থেকেই ছিল। বৈশাখী টিভিতে প্রচার হওয়া আপনার রচনা ও পরিচালনায় ‘কিড সোলায়মান’ ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েছিল? সাজিন আহমেদ বাবু : আমার মনে হয় ভাল গল্প, বিশেষ করে মৌলিক গল্পের নাটক দর্শক পছন্দ করে। ‘কিড সোলায়মান’ নাটকটির উপজীব্য আমাদের সমাজের সমসাময়িক বিষয় হওয়ায় দর্শক পছন্দ করেছে। তবে দর্শকদের কাছে থেকে এতটা রেসপন্স পাব ভাবিনি। কতগুলো নাটক রচনা ও পরিচালনা করেছেন? সাজিন আহমেদ বাবু : ৩৫টির মতো নাটক লিখেছি। পরিচালনা করেছি ২০টির মতো। সংখ্যা গুনে রাখিনি। যতটুকু মনে পড়ছে সংখ্যাটা এমনই হবে। হয়ত দুই-তিনটা বাড়তে পারে। নাটক রচনা বা নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টি মাথায় রাখেন? সাজিন আহমেদ বাবু : নাটক রচনা ও নির্মাণের ক্ষেত্রে একটা দায়বদ্ধতা কাজ করে। দর্শককে কোন বার্তা দিতে না পারলে যে কোন সৃষ্টিই অনার্থক মনে হয়। শুধু বিনোদনের জন্য আমি নাটক লেখা ও পরিচালনা করি না। দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর নাটক দর্শক দেখছে না কারণ কী? সাজিন আহমেদ বাবু : নাটক না দেখার অনেকগুলো কারণ জড়িত। প্রথমত: নাটকের বাজেট নেই। নাই-ই বলব, কারণ যে বাজেটে নাটক তৈরি হয় সেই বাজেটের অর্ধেক তো প্রিপ্রোডাকশনেই যাওয়া উচিত। অথচ প্রিপ্রোডাকশনের বাজেট দিয়ে পুরো নাটকই বানাতে হয়। আর্ট ডিরেকশন, কস্টিউম ডিজাইন বলতে যে একটা বিষয় আছে সেটা তো বিলুপ্ত। লোকেশনের কথা আর কি বলব। পারলে তো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যামেরা ঘুরিয়ে পুরো নাটক শেষ করে দিতে পারলেই ভাল হয়। সো ভাল কন্টেইনের অভাব। তারপর ধরুন এর মাঝেও সবার অতি ভালবাসা অতি প্রেমের কারণে কিছু ভাল নাটক হয়। সেগুলো দেখার উপায়ও নেই। বিজ্ঞাপন এতই বেশি যায় যে, ধৈর্য ও অধৈর্য হয়ে পড়ে। এত বিজ্ঞাপনের মাঝে সালমান খানের নাটক হলেও মানুষ দেখবে না। দেখা সম্ভব না। নাটকের দর্শক ফেরাতে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বা সংশ্লিষ্টদের করণীয় কী বলে আপনি মনে করেন? সাজিন আহমেদ বাবু : নাটকের বাজেট বাড়াতে হবে। পরিমিত বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে। প্রতিটি চ্যানেলের প্রিভিউ কমিটিকে শক্তিশালী হতে হবে। নাটক বোঝে এমন লোক দিয়ে প্রিভিউ করাতে হবে। ভাল নাটক বানালে পরিমিত বিজ্ঞাপন প্রচার করলে মানুষ এমনিতেই নাটক দেখবে। বাংলাদেশের মানুষ দেশের নাটক দেখতে চায়। আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কী? সাজিন আহমেদ বাবু : ভাল, মননশীল নাটক নির্মাণ করতে চাই। যা আমাকে আরাম দেয় এমন কিছু। আর স্বপ্ন দেখি ফিল্ম বানানোর। ভবিষ্যতে নিজের মতো করে একটা ফিল্ম বানাব। -সাজু আহমেদ
×