ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঈদ বখরা আদায়ে ব্যস্ত ট্রাফিক পুলিশ

বগুড়ায় তীব্র যানজট

প্রকাশিত: ০৭:০৬, ১৮ জুন ২০১৭

বগুড়ায় তীব্র যানজট

সমুদ্র হক ॥ বগুড়া নগরীতে চরম যানজটের সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের ‘ঈদের অবৈধ আদায়পাতি’র মহোৎসব শুরু হয়েছে। এমনকি রিক্সাচালককে প্রকাশ্যে লাঠিপেটা করতেও দেখা যায়। নগরীতে চলাচল নিষিদ্ধ এমন যানবাহন ধরে কখনও প্রকাশ্যে কখনও ফাঁড়িতে নিয়ে গিয়ে ‘টুপাইস’ কামিয়ে নিচ্ছেন। নগরীর প্রধান সড়কসহ প্রতিটি সড়ক ও মোড় এমনকি পাড়া-মহল্লার সড়কগুলোতে সকাল থেকে রাত অবধি জট লেগেই আছে। ট্রাফিক সদস্যরা (কনেস্টবল, সার্জেন্ট, ইন্সপেক্টর) জট নিয়ন্ত্রণের চেয়ে ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ধরতেই ব্যস্ত। নগরবাসীর দুর্ভোগ কমাতে ট্রাফিক সদস্যের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। রমজান মাসের শেষদিকের এ সময়টায় লোকজন কেনাকাটায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কেন্দ্রস্থল সাতমাথার কাছে নিউমার্কেট, রানার প্লাজা, আড়ং, নবাববাড়ি মার্কেট, রোমেনা আফাজ সড়ক, শহীদ আব্দুল জব্বার সড়ক, শেরপুর রোড, গোহাইল রোড, স্টেশন রোডে দিনভর জট লেগেই আছে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক হয়ে যানবাহনে একশ’ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতেও অন্তত আধা ঘণ্টা সময় লাগে। শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ সড়কে দেখা যায় ট্রাফিক কনেস্টবল নীরব দর্শক হয়ে আছেন। আর ট্রাফিক সার্জেন্ট একজন বয়স্ক রিক্সাচালককে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। ব্যাটারিচালিত রিক্সার কন্ট্রোল প্যানেল লাঠি দিয়ে ভেঙ্গে দিতেও দেখা যায়। তারপর অন্য রিক্সাকে ধরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ফাঁড়িতে। ইজিবাইক ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা ধরার পর কোন জরিমানা আদায় করা হয় না। মামলাও দেয়া হয় না। এসব যানবাহন ধরে নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ লাইন্সে। তারপর কয়েক দিন রেখে এক থেকে তিন হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। মালিক ও চালক যখন যানবাহন ফেরত পান তখন বেশির ভাগের ব্যাটারি থাকে না। এ বিষয়ে সিনিয়র ট্রাফিক ইন্সপেক্টর বিকর্ন বলেন, কোন টাকা-পয়সা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় না। নগরীর ভেতের প্রবেশ নিষেধ এমন ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজি বাইককে ধরে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন আটকে রাখা হয়। এটাই ওদের শাস্তি। রাজশাহী স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, অনিয়ন্ত্রিত ট্রাফিক ব্যবস্থার কারণে রাজশাহী মহানগরীতে যানজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও নিয়ন্ত্রণহীন রিক্সা-অটোরিক্সার চলাচলে রোজা শুরুর পর থেকেই যানজটে তীব্র হয়েছে। মানুষ একসঙ্গে বাজারমুখী হতে শুরু করায় ক্রমেই তা মারাত্মক আকার ধারণ করছে। নগরীর প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে সংযোগ সড়কগুলোতেও লেগেছে যানজটের রেশ। সকালে কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে তা রূপ নিচ্ছে মারাত্মক। এতে কেনাকাটা করতে আসা লোকজন চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা চলাচল আর ফেরিওয়ালাদের ফুটপাথ দখলের অপতৎপরতা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে নগরীর ব্যস্ততম সড়কগুলোতে সৃষ্ট যানজটে নাকাল হয়ে পড়ছেন নগরবাসী। এতে ব্যাহত হচ্ছেÑ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। প্রতিদিনই তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় নগরীর সাহেব বাজারসহ বিভিন্ন সড়ক ও পয়েন্টে। প্রধান প্রধান বিপণি কেন্দ্রগুলোর সামনে যানজটের অবস্থা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে নগরের আলুপট্টি থেকে সোনাদীঘি মনির চত্বর রাস্তায় চলাচলকারীরা সকাল থেকেই দুর্ভোগের মধ্যে পড়েন। ভুক্তভোগীদের মতে, যানজটের মূল কারণ অত্যাধিক রিক্সা ও অটোরিক্সা চলাচল। এদের নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। এবার রোজ শুরুর পরপরই রাজশাহী মহানগর পুলিশ ট্রাফিক বিভাগকে শহরের যানজটমুক্ত রাখার ঘোষণা দিয়েছিলেন তবে বাস্তবে তা হয়নি। বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে কমিউনিটি পুলিশের সহযোগিতায় নগরে যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য আরএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম জোর দিলেও বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ হয়নি যানজট। রাজশাহী মহানগর পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়ের আলম জানান নগরবাসীকে যানজট থেকে মুক্তি দিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে রাস্তার ওপর গাড়ি পার্কিং করতে না দিয়ে বাজারের পাশে নির্দিষ্ট স্থানে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু রাস্তায় ইউটার্ন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট ও মনি চত্বরে নতুন করে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা হয়েছে। তারপরেও কিছু পয়েন্টে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
×