ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রেলের ১২ কর্মচারীর ১৯ মাস বেতন নেই

প্রকাশিত: ০৭:০৪, ১৮ জুন ২০১৭

রেলের ১২ কর্মচারীর ১৯ মাস বেতন নেই

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ উচ্চ আদালতের প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের রায় মানতে নারাজ রেলের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক)। অভিযোগ রয়েছে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাপের মুখে এই দুই কর্মকর্তা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চট্টগ্রামের এই ১২ কর্মচারীর সঙ্গে অমানবিক আচরণ করছেন। ঈদ-পার্বণ বলে কোন কথা নেই বৈষম্যের শিকার এসব কর্মচারীর পরিবার এখন সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার। আরও অভিযোগ রয়েছে, সরকারী নিয়োগ বিধিমালা উপেক্ষা করে ডিজির নির্দেশে স্থায়ী পদে কর্মরতদের নিয়মিত বেতন বন্ধ রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে রেলের পূর্বাঞ্চলে। ফলে প্রধানমন্ত্রীসহ রেলমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এই ১২ কর্মচারী প্রতিদিন চাকরিস্থলে গিয়ে কর্তব্য পালন করলেও মাস শেষে বেতন পাচ্ছেন না। প্রশ্ন উঠেছে, একই দফতর আদেশে ১৬ কর্মচারীর মধ্যে ৪ কর্মচারী বেতন ভাতা ও বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারলে, বাকি ১২ জন কেন পাবেন না। শুধু তাই নয়, সৈয়দপুরের পদোন্নতিপ্রাপ্ত দুই কর্মচারীর সঙ্গে চট্টগ্রামের ১২ কর্মচারীর মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করে মহাপরিচালকের দফতর বিতর্কের সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয়, প্রশ্নের সম্মুখীন করা হয়েছে নিয়োগ বিধিমালাকেও। অভিযোগ উঠেছে, পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়া এই ১২ কর্মচারীর বেতন বন্ধে নির্দেশ দিয়েছিলেন রেলের ডিজি আমজাদ হোসেন। এছাড়াও এডিজি (আরএস) সামছুজ্জামান, ডাইরেক্টর (এস্টাবলিশসমেন্ট) প্রদীপ কুমার সাহা, এডিজি (ফিন্যান্স) আবিদ হোসেন ও ডাইরেক্টর মেকানিক্যাল তাবাসসুম বিনতে ইসলাম আদালতের এই আদেশের বিরোধিতা করছেন। আদালতের আদেশ অমান্যের অন্যতম কারণ হলো ডিজি এই আদেশ কার্যকর করার পক্ষে নয়। কারণ, ডিজির নির্দেশে ডাইরেক্টর (এসটাবলিশমেন্ট) প্রদীপ কুমার ১২ কর্মচারী বেতন পরিশোধের বিপক্ষে লিখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ধরনের অনিয়ম ধরা পড়ার পরও এডিজি (আরএস) এবং এডিজি (ফিন্যান্স) এর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। মহাপরিচালকের (ডিজি) দফতরের মেকানিক্যাল বিভাগের তৎকালীন উপ-পরিচালক তাবাসসুম বিনতে ইসলামের এক আদেশের কারণে পূর্বাঞ্চলীয় স্টোর বিভাগে কর্মরত ১২ জনের এ পর্যন্ত ১৯ মাসের বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে এ ধরনের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বরাবর চিঠি চালাচালি হলেও কোন সুরাহা পায়নি ভুক্তভোগী এসব কর্মচারী। এদিকে, গত বছরের শুরু থেকেই উর্ধতন ওই কর্মকর্তার চিঠির কারণে ভুক্তভোগী কর্মচারীরা ছেলে মেয়েদের স্কুলের লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি অন্ন যোগানের শেষ আশ্রয়স্থলটুকুও বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর ডিভিশনাল ফাইন্যান্স এডভাইজর (ডিএফএ)/কারখানা/পাহাড়তলী এবিএম মঞ্জুরুল হক পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি চিঠি প্রেরণ করেন। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে মহাপরিচালক দফতরের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে এই ১২ কর্মচারীর বেতন ভাতা প্রদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। মহাপরিচালকের দফতরের আওতাধীন লোকোমেইন্টেন্যান্স শাখার মেকানিক্যাল বিভাগের উপ-পরিচালক তাবাসসুম বিনতে ইসলামের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ১৮ নবেম্বর প্রেরিত এক স্থগিতাদেশের আগেই পূর্বাঞ্চলে এই ১২ কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করা হয় নবেম্বরের।
×