ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশের মাটিতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে চায় সাম্যদ্বীপ

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৭ জুন ২০১৭

বিদেশের মাটিতে দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে চায় সাম্যদ্বীপ

জান্নাতুল মাওয়া সুইটি ॥ নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তিতে পারদর্শী সে। এক কথায় অলরাউন্ডার। আর এ জন্যই মাত্র ১১ বছর বয়সেই শিশু সাংস্কৃতিক দলের জুনিয়র এ্যাম্বাসেডর হয়ে অন্য দেশের কাছে নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছে দুবার। ভ্রমণ করেছে জাপান ও তুরস্কে। ২০১৬ সালে জাপানের ফুকুওকায় অনুষ্ঠিত ‘২৮তম এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলীয় শিশু সমাবেশে’ যোগদানের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমি থেকে বাছাইকৃত ছয় শিশুর মধ্যে সে ছিল একজন। তখন সে ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। বলছি সুহৃদ সাম্যদ্বীপের কথা। ভবিষ্যতে নামকরা নৃত্যশিল্পী হতে চায় সে। তাই তো ছোটবেলা থেকে গানের পাশাপাশি নাচের ওপরও তালিম নিচ্ছে ছায়ানটে। নৃত্যশিল্পীর পাশাপাশি প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখে সে। সাম্যদ্বীপ দুই দেশ সফরের মজার কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরল এই প্রতিবেদকের কাছে। এই তো চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তুরস্কে গিয়েছিল সে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির সাংস্কৃতিক দলের সঙ্গে। বাংলাদেশ থেকে ১৪ সদস্যের শিশুদের একটি দল যায় সেখানে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিওগুলোর সংগঠন ‘টিআর’ দেশটির নেভশিহির শহরে ‘৩৯তম আন্তর্জাতিক শিশু উৎসবের’ আয়োজন করে। মুখ-চোখে এখনও তার ভ্রমণের অসাধারণ এক অভিজ্ঞতার রেশ কাটেনি। বাংলাদেশসহ ২৬ দেশের শিশুরা অংশ নেয় এই উৎসবে। এই উৎসবে তারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে’ এবং লোকগান ‘ঢোল বাজে ঢোল বাজে বাংলাদেশের ঢোল’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে। বাংলাদেশের শিশুদের নাচ তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। তাদের নাচ দর্শকদের মুগ্ধ করে। সেই সঙ্গে উৎসবে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী শিশুদের তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ট্যাব ও প্রধানমন্ত্রী হাতঘড়ি উপহার দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট শিশুদের জন্য নৈশভোজেরও আয়োজন করেন। অনেকটা উচ্ছ্বাসের সঙ্গে কথাগুলো বলছিল সাম্যদ্বীপ। তবে, তাকে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত হতে দেখা গেল যখন সে তুরস্কের হোস্ট ফ্যামিলি সম্পর্কে বলতে শুরু করল। সে বলল, তুরস্কে আমি যে পরিবারটির সঙ্গে ছিলাম ওরা সবাই সত্যিই খুব ভাল। বিশেষ করে দুই বছর বয়সী ইয়ারেনের কথা না বললেই নয়। কিন্তু তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারতাম না মন খুলে। কারণ তারা সেভাবে ইরেজী বলতে পারে না। ফোনে ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেটের মাধ্যমে ওই পরিবারের মা-বাবা, ভাইদের সঙ্গে কথা বলতাম। আমি ইংরেজীতে বলতাম আর ফোনের মাধ্যমে সেটা তুরস্কের ভাষায় পরিবর্তন হতো।’ তুরস্কে ঘটা মজার বিষয়টি বলতে গিয়ে সাম্যদ্বীপ বলল, ‘দেশের বাইরে আমি প্রথমবার জাপানে গিয়েছিলাম। জাপানীরা অনেক ভাল ও সৎ। কিন্তু ওরা বন্ধুপ্রেমী না। নিজ নিজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ওরা আলাদা অর্থাৎ সিঙ্গেল থাকতেই পছন্দ করে। এমনকি কেউ কারও বাসায় ঘুরতেও যায় না। কিন্তু টার্কিশরা জাপানীদের পুরো উল্টো। আমি যেদিন প্রথম হোস্ট ফ্যামিলিতে যাই। তারপর খাওয়া-দাওয়া সেরে ঘুমিয়েছিলাম। ঘুম থেকে উঠেই তো আমি অবাক! দেখলাম ওই পরিবারের যত আত্মীয়স্বজন আছে সবাই আমাকে ওয়েলকাম করতে চলে এসেছে। আমাকে কেন্দ্র করে তৎক্ষণাৎ একটি ওয়েলকাম পার্টিও আয়োজন করা হলো। আমি সেদিন সত্যিই খুব অবাক হয়েছিলাম। এবার শোনা যাক, ২০১৬ সালে জাপানের ফুকুওকায় অনুষ্ঠিত ২৮তম এশীয় প্রশান্ত অঞ্চলীয় শিশু সমাবেশে বাছাইয়ের গল্পটি। এ প্রসঙ্গে শুক্রবার বিকেলে নিজ ঘরে বসেই তখনকার স্মৃতিগুলো হাতড়াচ্ছিল সে। সাম্যদ্বীপ বলল, ‘শিশু একাডেমিতে গত বছরের ১৪ তারিখে আমাদের বাছাই করা হয়। আমি যখন বিচারকদের সামনে গেলাম প্রথমেই তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন আমি নাচ ও গান দুটিই পারি কি না? হ্যাঁ বলাতে আমাকে একটি ক্লাসিক গান শোনাতে বলল। আমি দিব্যি খালি গলায় গেয়ে শোনালাম। এরপর আমাকে নাচতে বললেন লায়লা ম্যাম। নাচও দেখালাম। সেদিন রাতেই মিশু একাডেমি থেকে জানালো হলো আমি দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য বাছাই হয়েছি। যথারীতি দ্বিতীয় দিন তাৎক্ষণিক শিখিয়ে দেয়া নাচ রপ্ত করে নেচে দেখানোর মাধ্যমে এ পর্বেও আমি সিলেক্ট হই। ‘এশিয়ান প্যাসিফিক কনভেনশন’ (এপিসিসি) সম্মেলনটি এটি মূলত ‘ব্রিজ’ ক্লাবের অধীনে পরিচালিত হয়। তাই জাপান যাওয়ার আগ পর্যন্ত ব্রিজ ক্লাবের উদ্যোগে আমাদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যেমনÑ নাচ, গানসহ এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই জাপান সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছিলাম।’ ২৮তম এশিয়ান প্যাসিফিক কনভেনশন (এপিসিসি) সম্মেলনে যোগদানের জন্য আমরা মোট ৬ জন জুলাইয়ের ৯ তারিখে ঢাকা ছাড়ি। শিশু একাডেমির এক কর্মকর্তা ও এক পিস এ্যাম্বাসেডর ছিলেন আমাদের সঙ্গে। প্রথমে আমরা হংকংয়ে যাই। ওখানে ট্রানজিট ছিল। সেখান থেকে আমরা আবার প্লেনে উঠে প্রায় ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা যাত্রা শেষে জাপানের ফুকুওয়াকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গিয়ে পৌঁছাই। বিমানবন্দরে গিয়ে দেখি, বিভিন্ন দেশের ছেলেমেয়েরা উপস্থিত সেখানে। অনেকের মধ্যে শুরু হয়েছে পরিচয় ও বন্ধুত্বের পালা। পুরো বিমানজুড়ে শুধু বাচ্চাদের কিচির-মিচির। সমবয়সী এত ছেলেমেয়ে এর আগে একসঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ হয়নি। সবাইকে দেখে তখন খুবই ভাল লাগছিল। বিমান থেকে নেমেই দেখতে পেলাম ‘উই আর দ্য ব্রিজ’Ñ স্লোগান লেখা হলুদ টি-শার্ট পরা একঝাঁক স্বেচ্ছাসেবক অপেক্ষা করছে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের বরণ করে নেয়ার জন্য। ইমিগ্রেশন শেষে আমাদের মূল গন্তব্য মেরিন হাউসের উদ্দেশে যাত্রা। এক ঘণ্টার যাত্রা শেষে আমরা পৌঁছলাম আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্য মেরিন হাউস গেটে। মেরিন হাউসের নিজস্ব বন, উঁচু-নিচু, আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে আমরা পৌঁছলাম ওরিয়েন্টেশন হলরুমে। এখানেও দেখলাম হলুদ গেঞ্জি পরা একদল ব্যস্ত স্বেচ্ছাসেবক। যেহেতু ফুকুওয়াতে এখন গ্রীষ্মকাল, তাই স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই হাফ প্যান্ট ও হলুদ গেঞ্জি পরা, যাতে লেখা আছে ‘উই আর দ্য ব্রিজ’ এবং ‘২৯তম এশিয়া প্যাসিফিক কনভেনশন ইন ফুকুওয়াকা’। ওরিয়েন্টেশন হলরুমের আকৃতি ডোম বা গম্বুজ টাইপের এবং ফ্লোর বা মেঝে কাঠের তৈরি। আগত সব দলকেই প্রথমে এখানে এসে বসতে হয় এবং ফুকুওয়াকাতে থাকাকালে কী কী নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে তা জানানো হয়। বিছানাপত্র গোছানো, জুতার ব্যবহার, এমনকি গোসলখানা ও টয়লেট ব্যবহারের নিয়মও ওরা দেখিয়ে দিল। অতি সাধারণ অথচ অতি দরকারি এসব নিয়মকানুন শেখার পর আমরা যে যার নির্ধারিত রুমে চলে গেলাম। এক রুমে চারটি দোতলা বেড অর্থাৎ ৮ জন করে থাকার নিয়ম। আমরা ৩ জন ছেলে সঙ্গে আমেরিকা ও ওকল্যান্ডের আরও পাঁচজন মিলে আমরা সেখানে থাকলাম। ওদের সঙ্গে এর ফাঁকে কথা হলো, পরিচিত হলাম আমরা। মা-বাবাকে ছেড়ে এতদূর গিয়েছিলে মন খারাপ লাগেনি তখন জিজ্ঞেস করতেই সাম্যদ্বীপ বলে উঠল দেশের খাবারের জন্য খারাপ লেগেছে। কারণ, মেরিন হাউসে আমাদের মাত্র সকালে, দুপুরে ও রাতের খাবার বিকেল ৫টার মধ্যে দিত। এ জন্য রাতে ক্ষুধা লেগে যেত। আর মা-বাবার কথা না মনে পড়ার কারণ হলো পুরো বিশ্বেও হাজার হাজার সমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ছিলাম। বেশিরভাগ সময় আমরা খেলাধুলা আর মজা করেই কাটিয়েছি। সেই সঙ্গে জাপানী খাবারেরও অভাব ছিল না। নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ, নতুন নতুন সব বন্ধু। এর আনন্দ আর মজাই আলাদা এ জন্যই আর বাড়ির কথা ওদের মনে পড়েনি। জাপানের হোস্ট ফ্যামিলির সদস্যরা কেমন ছিল? মেরিন হাউসে ৫ দিন কাটানোর পর প্রতিটি ছেলেমেয়েই তাদের নির্ধারিত হোস্ট ফ্যামিলির সঙ্গে চলে গেলাম। আমার ফ্যামিলির সদস্যরা খুবই ভাল ছিল। তারা সবসময় আমার খেয়াল রাখত। কখন কি খাব, কোথাও বেড়াতে যাব কি না, এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন থাকত। এ পরিবারে বাবা-মা, দুই ভাই ও এক বোন ছিল। পরিবারের মা ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান তাই উনি খুব ভাল ইংরেজী বলতে পারতেন। মায়ের সঙ্গে কথা বলতে তাই আমার কোন সমস্যা হতো না। আমিসহ পরিবারের সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৬ জন। বাসার রুমগুলো ছোট ছোট। আমি অবাক হয়েছিলাম, তাদের রুমে খাট থাকা সত্ত্বেও তারা মাটিতে ঘুমায়। এমনকি আলাদা একটি রুম আছে যে রুমের মেঝেতে তারা তোশক বিছিয়ে ঘুমাত। সেখানে থাকাবস্থায় আমাকে প্রতিদিন আমার ফ্যামিলির ছেলে অর্থাৎ আমার ভাইয়ের স্কুলে যেতে হতো। আমরা যারা জুনিয়র এ্যাম্বাসেডর জাপানে গিয়েছিলাম তারা প্রত্যেকেই যে যে হোস্ট ফ্যামিলিতে ছিল সে ফ্যামিলির ছেলেমেয়েরা যে স্কুলে পড়ত তাদের সে স্কুলে পরিদর্শনে যেতে হতো। আমি যেদিন আমার ভাইয়ের স্কুলে গেলাম সেদিন আমাকে দেখে স্কুলে প্রায় সব ছেলেমেয়েরা হুমড়ি খেয়ে এসে পড়ল। তাদের সবার হাতেই খাতা, আমার কাছে অটোগ্রাফ নিতে এসেছে সবাই। দেখে অনেক খুশি লাগছিল। এরপর থেকে টানা চার-পাঁচদিন এই স্কুলে যাওয়া-আসা করলাম। আমি খেয়াল করে দেখলাম, এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা নিজেদের ক্লাসরুম নিজেরাই পরিষ্কার করে। আমিও ওদের সঙ্গে কাজ করেছি। জাপানীদের কিছু ভাল দিক তুলে ধরে সাম্যদ্বীপ বলল, জাপানীরা অনেক সৎ। আমি দেখেছি তাদের অনেক মার্কেটে সিসি ক্যামেরা লাগানো নেই ইচ্ছে করলেই অনেকে চুরি করতে পারে। কিন্তু এমটি কখনও হয় না। তারা রাস্তায় টাকা কুড়িয়ে পেলেও তা নির্ধারিত জায়গাতে জমা দেয়। এছাড়া তাদের ব্যবহার অমায়িক, আমি যে কদিন সেখানে ছিলাম কখনও মা ও ছেলে অথবা মা-বাবার মধ্যে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলতেও শুনিনি। এমনকি ছেলেমেয়েদের পড়তে বসার জন্য ধমক দেননি তারা। এছাড়া অতিথিদের আপ্যায়ন করার বেলাতেও ষোলোয়ানা জাপানীরা। ওখানে যাওয়ার পর থেকে আমি বাংলাদেশে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি কারণ এটা সম্পূর্ণ নিষেধ ছিল। তবুও ততটা খারাপও লাগেনি কারণ, আমি অন্য একটি পরিবার পেয়েছিলাম এবং তারা ঠিক আমার বাবা-মায়ের মতো করেই আমার খেয়াল রেখেছেন। ৯ দিন হোস্ট ফ্যামিলিতে ছিলাম। তারা আমাকে অনেক জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গেছেন, আমার বাবা-মায়ের জন্যও শপিং করে দিয়েছেন। এরপর ১৮ জুলাই ‘২৮তম এশিয়া প্যাসিফিক কনভেনশন’-এর মূল প্রোগাম ছিল। এই অনুষ্ঠানে আমরা নাচ-গান, অভিনয়, আবৃত্তির মাধ্যমে আমাদের দেশের ঐতিহ্যকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিশুদের সামনে তুলে ধরি। এরপর যথারীতি আবার হোস্ট ফ্যামিলিতে ফিরে আসি। এরপর ২৪ জুলাই আমাদের দেশে ফিরে আসার দিন ছিল। প্রত্যেক জুনিয়র এ্যাম্বাসেডরদের হোস্ট ফ্যামিলি এদিন ফুকুওয়াকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রাখতে এসেছিলেন। আমার পরিবারও আমাকে রাখতে এসেছিলেন। ফেরার সময় অনেক খারাপ লাগছিল। এই ১৪ দিনের আনন্দের রেশ কাটিয়ে দেশমাতার কাছে ফিরে আসার পালা। বিমানে বসে বন্ধুরা একে অন্যের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি। ২৫ তারিখ যথারীতি আমরা বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়। কিভাবে সাম্যদ্বীপ এই দুই দেশ সফরের সুযোগ পেল? এ প্রশ্নের জবাবে তার মা ফরিদা ইয়াসমিন জনকণ্ঠকে জানান, ‘জাতীয় পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখেই আবেদন করেছিলাম শিশু একাডেমিতে। প্রতিবছরই এই দুটি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সারা দেশের প্রতিযোগীরা এসে অংশ নিয়েছিল। ‘২৯তম এশিয়া প্যাসিফিক কনভেনশন’ অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণকারী ছেলেমেয়েদের মধ্যে আমার ছেলেসহ পাঁচজন বাছাই হয়। এছাড়া, ৩৯তম আন্তর্জাতিক শিশু উৎসব’-এ অডিশন দিয়ে ১৪ জনকে নির্বাচন করা হয়। আর এখানেও সাম্যদ্বীপকে বাছাই করা হয়।’ সাম্যদ্বীপ ‘নালন্দা’ স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবা একজন সাংবাদিক এবং মা উকিল। পড়ালেখার পাশাপাশি নাচ-গানের তালিম নিতে ব্যস্ত থাকা সাম্যদ্বীপকে নিজেদের মনের মতো করে গড়তে তারাও নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতে সাম্যদ্বীপ দেশ ও দেশের অবহেলিত মানুষের জন্য কাজ করতে চায়। আর এমনটি তাদের শেখানো হচ্ছে ব্রিজ ক্লাবে। সামনে আরও দেশ ভ্রমণের ইচ্ছে তার। অন্যান্য দেশের সামনে নিজের দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্য সর্বদা প্রস্তুত ১২ বছরের সুহৃদ সাম্যদ্বীপ। তাই তো সে নিজেকে সেভাবেই গড়ে তুলতে ব্যস্ত।
×